তিন রাত চোখে ঘুম নেই। তাকে ঘিরে বাঁধভাঙা উল্লাস ছেলেটার দু’ চোখের পাতা এক হতে দেয়নি।
রবিবার বিশ্বকাপ জয়ের পর মঙ্গলবার মুম্বইয়ে ফেরা। তারপর বুধবার বেঙ্গালুরুতে সংবর্ধনার ঢল। আর আজ বৃষ্টিস্নাত দিল্লি ঘরের ছেলে উন্মুক্ত চন্দকে বুকে টেনে নিল। কনট-প্লেসের হনুমান মন্দির থেকে ভক্তকুলের টানা রথে যমুনা পেরিয়ে উন্মুক্ত পৌছয় পূর্ব-দিল্লির নিজের বাড়ি মেধা অ্যাপার্টমেন্টে। তার আবাসনের সামনে তখন জনজোয়ার। ঢোল-করতাল আর উন্মুক্তর জয়ধ্বনিতে কাঁপছে বিশাল মেধা অ্যাপার্টমেন্টটাই। পাড়ার গেটে গিয়ে থামতেই পুষ্পবৃষ্টিতে ঢেকে গেল রথ। |
রথের ‘সারথি’ তখন তার পিসির দুই মেয়ে সমৃধি ও দিব্যা। সমৃধির হাতের প্ল্যাকার্ডে লেখা ‘ওয়েলকাম ব্যাক হোম ভাইয়া’। আর দিব্যার হাতে উড়ছে জাতীয় পতাকা। উন্মুক্তর গলায় মোটা মালা। আর কপালে বিরাট লাল সিঁদুরের তিলক। ভিড় ঠেলে উন্মুক্তকে তখন রথ থেকে নামাতেই পারছিলেন না বাবা ভরত চন্দ ও মা রাজেশ্বরী দেবী। ভিড় ঠেলে ঘরে ঢোকার আগে উন্মুক্তের প্রথম প্রতিক্রিয়া “আমার খুব ভাল লাগছে এই কারণে যে আমি যাদের সঙ্গে বড় হয়েছি, তারা আজ আমার জন্য নাচছে। মুম্বই, বেঙ্গালুরুর সংবর্ধনার থেকে এটা আলাদা।”
পরের লক্ষ্য নিয়ে প্রশ্ন করতেই একগাল হেসে উন্মুক্তের জবাব “এখন দু’-চারদিন জমিয়ে ঘুমোতে চাই। বিশ্রাম ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে আর ভাবছি না।” তার পরেই অবশ্য বলে ফেলে, “কিন্তু বিশ্রাম চাইলেই তো আর পাওয়া যায় না। ৩ সেপ্টেম্বর আমাকে যেতে হচ্ছে বেঙ্গালুরুর এনসিএর ক্যাম্পে। সেখান থেকে যাব নিউজিল্যান্ড সফরে।”
আইপিএল যে কিছুটা উপকার করেছে, তা মানছে উন্মুক্ত, “আইপিএলে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের হয়ে খেলার সময় ডেভিড ওয়ার্নারের থেকে অনেক কিছু শিখেছি। অস্ট্রেলিয়ায় সেটা খুব কাজে দিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও দেবে।”
উন্মুক্তকে নিয়ে উন্মাদনার মাঝে আরও এক নাটক হয়ে গেল। অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ককে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না বলে তাঁর কলেজ সেন্ট স্টিফেন্স যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তা নিয়ে প্রচুর হইচই হয়। এমনকী ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি পর্যন্ত টুইট করেন: “খেলার নম্বর পিছনে চলে যায়। কলেজের উপস্থিতির হার আসল হয়ে যায়। এতেই বোঝা যায়, ভারতে খেলাধুলোর গুরুত্ব কতটা। শুনে খুব খারাপ লাগছে।” শুধু ধোনি নন, সেন্ট স্টিফেন্স কলেজের প্রাক্তন-বর্তমান ছাত্ররাও এই নিয়ে সরব। এত কাণ্ডের পর এ দিন বিকালে উন্মুক্তের কলেজের প্রিন্সিপাল বলেছেন, “আমাদের হাতে ব্যাপারটা নেই। আমরা দিল্লি বিশ্ব বিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের কাছে আবেদন করেছি, যাতে উন্মুক্তকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত একমাত্র ভাইস চ্যান্সেলরই নিতে পারে।” ক্রীড়ামন্ত্রী অজয় মাকেনও ভাইস চ্যান্সেলরের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।
|
রবিকান্তদের সংবর্ধনা রাজ্যের
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের বাংলার দুই সদস্যকে সংবর্ধনা দিল রাজ্য সরকার। সরকারের তরফে রবিকান্ত সিংহ এবং সন্দীপন দাসকে এ দিন সোনার চেন এবং পঁচিশ হাজার টাকা উপহার দেন ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র। দুই ক্রিকেটারের সঙ্গে এ দিন মহাকরণে গিয়েছিলেন সিএবি-র কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে। তিনি রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানান রাজারহাট, যাদবপুর বা রাজ্যের কোনও জেলায় সিএবি-র জন্য মাঠ দিতে। ক্রীড়ামন্ত্রী তাঁকে আশ্বাস দেন, বাংলার ক্রিকেটের উন্নতির জন্য সরকার উদ্যোগ নেবে। এ দিকে, প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে কেরল যাচ্ছে বাংলার অনূর্ধ্ব ২২ দল। কেরলের সিনিয়র টিমের সঙ্গে দুটো এবং অনূর্ধ্ব ২২ দলের সঙ্গে দুটো ম্যাচ খেলবে তারা। |