নীতীশের বিহারে অত্যাচারের শিকার এখনও মহিলারাই
স্ত্রীকে ছেলে প্রসব করতে হবে। না হলে জুটবে শারীরিক অত্যাচার। যদি অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় জানা যায় স্ত্রী মেয়ে ধারণ করেছে তা হলে প্রথমে অস্বীকার করা হবে শারীরিক সম্পর্ককে, তারপরে জুটবে অত্যাচার। এরই পাশাপাশি পণের জন্য স্ত্রীকে খুন করা বা অপহরণ কিংবা নানা কারণে শারীরিক অত্যাচারের নজির এই রাজ্যে ভূরি ভূরি।
বিহারের মহিলাদের উপর অত্যাচারের এই রেখচিত্রটি ঊর্দ্ধগামী দেখে উদ্বিগ্ন রাজ্য মহিলা কমিশনও। তাদের পরিসংখ্যান বলছে, বিহারে ৫০ শতাংশ মহিলাই পুরুষের অত্যাচারের শিকার। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো অবশ্য বলছে, ৫৬ শতাংশ মহিলা বিহারে শারীরিক এবং যৌন নিগ্রহের শিকার। যার মধ্যে ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী মহিলাই বেশি।
নীতীশের এই রাজ্যে শুধু যে মহিলাদের উপর অত্যাচারের ঘটনা ঊর্ধ্বমুখী, তা নয়। এ রাজ্যে মেয়েদের অপহরণের ঘটনাও যথেষ্ট উদ্বেগজনক। পরিসংখ্যান বলছে, গত বছর ৩০৫০টি মহিলা অপহরণের মামলা দায়ের হয়েছে সারা রাজ্যে। যা ২০০৮ সালের তুলনায় ১০৪ শতাংশ বেশি। প্রশ্ন উঠছে, নীতীশ কুমারের সুশাসনে মেয়েদের নিরাপত্তার হাল এমন কেন? ডিজিপি অভয়ানন্দ অবশ্য বলছেন, “সমাজ থাকলে অপরাধও থাকবে। সব অপরাধ নির্মূল করা তো সম্ভব নয়। তবে অপরাধকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা হচ্ছে।” আর রাজ্য মহিলা কমিশনের সদস্যা চন্দ্রমুখী দেবীর কথায়, “এ রাজ্যের মহিলারা যে ভাবে অত্যাচারিত, পরিসংখ্যানের নিরিখে তা দেশের মধ্যে দ্বিতীয়। আসলে এখানকার মহিলারা আইন সর্ম্পকে সচেতন নয়। তাঁরা সতর্ক থাকলে পরিস্থিতি অন্য রকম হত।” তাঁর অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই, এ রাজ্যের মহিলারা অভিযোগ জানান না। আর্থিক নিরাপত্তাহীনতা এর মূল কারণ।” পটনার মহিলা থানার এক অফিসার জানাচ্ছেন, “মেয়েরা স্বামীদের ভয়ে অনেক ক্ষেত্রেই অভিযোগ দায়ের করেন না। কারণ তাদের আর্থিক নিরাপত্তা নেই।” তথ্য বলছে, সেই কারণে যে পরিমাণ অত্যাচারের সম্মুখীন এ রাজ্যের মহিলারা হন, তার সামান্যই সামনে আসে।
এই পরিস্থিতির পরিবর্তনের জন্য উদ্যোগী হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। সম্প্রতি পুলিশ অফিসারদের সঙ্গে এক বৈঠখএ নীতীশ তাঁর সেই মনোভাব ব্যক্ত করেছেন। বৈঠকে ডিজি থেকে এসডিপিও স্তরের অফিসারদের সঙ্গে নীতীশ ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে আলোচনা করেন। রাজ্যে ‘সুশাসন’ বজায় রাখার পরামর্শ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পুলিশ-কর্তাদের বলেন, “এই সব ক্ষেত্রে পুলিশকে সময় মতো ব্যবস্থা নিতে হবে। অভিযুক্তকে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে কোনও সুপারিশ শুনবেন না।” মুখ্যমন্ত্রী পরামর্শ দেন, “মানুষের সঙ্গে মিশুন। সমাজের বিভিন্ন স্তরের সমস্যার কথা তাহলেই জানতে পারবেন। পুলিশের প্রতি মানুষের কী ধারণা তার খবরও রাখতে হবে। সেই অনুযায়ী কাজ করতে হবে।” এরই পাশাপাশি, নারী সুরক্ষার জন্য যে সব আইন আছে সে সম্পর্কে রাজ্য জুড়ে, মহিলাদের মধ্যে সচেতনতা প্রচারের কথাও ভাবছে পুলিশ।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.