মাঝ আকাশে বায়ুসেনার দু’টি এম আই ১৭ চপারের ধাক্কা। সঙ্গে সঙ্গে দাউ-দাউ করে জ্বলে উঠে সে দু’টি আছড়ে পড়ল মাটিতে। বৃহস্পতিবার এই দুর্ঘটনায় মারা গেলেন ভারতীয় বায়ুসেনার ৯ সদস্য।
এই নিয়ে চলতি বছরেই চার বার দুর্ঘটনার কবলে পড়ল বায়ুসেনার চপার। তবে মাঝ আকাশে দু’টি চপারের মধ্যে ধাক্কা খাওয়ার ঘটনা এই প্রথম। ১৯৯৬-এর ১২ নভেম্বর হরিয়ানার চরকি দাদরি নামের একটি ছোট জনপদের আকাশে দু’টি যাত্রিবাহী বিমানের সংঘর্ষে ৩৫০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।
এ দিন দুপুর ১২টা নাগাদ জামনগরের সেনাঘাঁটি থেকে মহড়ার জন্য উড়েছিল রাশিয়ায় তৈরি বায়ুসেনার এম আই ১৭ চপার দু’টি। পাঁচ মিনিট পরেই সে দু’টি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। কার্যত ভস্মীভূত হয়ে চপার দু’টি ভেঙে পড়ে জামনগর শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে সম্রাট গ্রামের একটি খেতের ওপর। দিল্লিতে ভারতীয় বায়ুসেনার মুখপাত্র বলেন, “মৃতদের মধ্যে তিন জন উইং কম্যান্ডার, এক জন স্কোয়াড্রন লিডার এবং এক জন ফাইট লেফটেন্যান্ট রয়েছেন।” তবে মৃতদের নাম জানানো হয়নি। |
মাঝ আকাশে কী ভাবে ঘটল এই দুর্ঘটনা?
সম্রাট গ্রামের প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এম আই চপার দু’টি পাশে পাশে খুবই কাছাকাছি উড়ছিল। তাদের পাখা দু’টি একসঙ্গে লেগে যেতেই বিপদের সূত্রপাত। এই সংঘর্ষের ফলেই নীচের দিকে নামতে শুরু করে একটি চপার। অন্য চপারটিরও পিছন দিকটি ভেঙে যায়। সেটিও শূন্যে পাক খেতে খেতে মাটির দিকে নেমে আসতে থাকে। সেই সময় চপার দু’টিতে আগুন লেগে যায়। কিন্তু চপার দু’টি ধাক্কা লাগার মতো কাছাকাছি এসে পড়ল কী ভাবে? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নে বিব্রত বায়ুসেনার মুখপাত্র সরাসরি জবাব এড়িয়ে গিয়ে জানান, এটি মহড়ারই অঙ্গ। কিন্তু দু’টি হেলিকপ্টারের মধ্যে যতটা দূরত্ব থাকার কথা ছিল, ততটা কোনও কারণে রাখা সম্ভব হয়নি। গোটা ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে কিছু বায়ুসেনার প্রাক্তন কর্তার মতে, পাইলটের সামান্য বোঝার ভুলের কারণেও এই দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
তবে আকাশে বায়ুসেনার দু’টি বিমানের ধাক্কার ঘটনা এই প্রথম। এ দিন বায়ুসেনার এমআই ১৭ চপার দু’টি ভেঙে পড়ার পরে ঘটনাস্থলে যান ভারতীয় বায়ুসেনার অফিসার, পুলিশ এবং জামনগর পুরসভার কর্মীরা। পৌঁছয় দমকলবাহিনীও। আগুন নিভিয়ে ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয় মৃতদেহগুলি। প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। |