|
|
|
|
জিন্না-মুম্বই সম্পর্কের কথা কাসভকে জানাল কোর্ট |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
সুসজ্জিত তাজমহল হোটেলে তখন চলছে জন্মদিনের অনুষ্ঠান। মুম্বইয়ের অন্যতম অভিজাত পার্সি পরিবারের মেয়ে রতনবাঈ পেটিটের জন্মদিন বলে কথা! অতিথি-অভ্যাগতদের মধ্যে রয়েছেন রতনবাঈয়ের বাবা স্যার দিন-শ পেটিটের
বন্ধু মহম্মদ আলি জিন্না। সেই অনুষ্ঠানের
মধ্যেই হোটেলের বলরুমে পিতৃবন্ধু জিন্নার বিবাহের প্রস্তাবে সম্মতি দিলেন অষ্টাদশী রতনবাঈ। সেটা ১৯১৮-এর ২০ ফেব্রুয়ারি। প্রশিক্ষিত ব্যান্ডের দল তখন বাজাচ্ছে শপ্যাঁর ‘সো ডিপ ইজ দ্য নাইট’।
কাট-টু ২৬ নভেম্বর ২০০৮। জ্বলছে মুম্বই। জ্বলছে তাজমহল হোটেল। জঙ্গি কবলে মুম্বইয়ের অন্যতম ওই অভিজ্ঞান। ‘সৌজন্য’ আজমল আমির কাসভ এবং তাঁর সঙ্গীরা!
এ ভাবেই আজমল আমির কাসভের ফাঁসির সাজা বহাল রাখার রায়ে ফিরে এল ‘কয়েদ-ই-আজম’ মহম্মদ আলি জিন্নার প্রসঙ্গ। জিন্নার অন্যতম পছন্দের শহর মুম্বই এবং সেই শহরে তাঁর প্রিয়তম হোটেলের সঙ্গে তাঁর ‘আত্মিক’ যোগাযোগের কথা। আর অবশ্যই সেই সূত্র ধরে ২৬/১১-র সন্ত্রাসের প্রসঙ্গও।
সুপ্রিম কোর্ট আজমল আমির কাসভের ফাঁসির সাজাই গত কাল বহাল রেখেছিল। নিম্ন আদালত এবং বম্বে হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কাসভ সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে বলেছিল: মৃত্যুদণ্ড নয়, তাকে বরং যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হোক। ২৬/১১-র একমাত্র জীবিত জঙ্গির আর্জি কালই খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আফতাব আলম এবং বিচারপতি সি কে প্রসাদের বেঞ্চ। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের একটি অংশে পাকিস্তানের স্রষ্টা মহম্মদ আলি জিন্নার সঙ্গে মুম্বইয়ের ‘আত্মিক’ যোগাযোগের বিষয়টি তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি, মন্তব্য করা হয়, “ভাবলে অবাক লাগে, ‘কয়েদ-ই-আজম’ জিন্না কি কখনও ভেবেছিলেন, তাঁরই তৈরি দেশের এক নাগরিক তাঁর অন্যতম পছন্দের শহরের অতি পরিচিত ওই তাজ হোটেলে এমন আঘাত হানবে?”
রায়ের যে-প্রতিলিপি সুপ্রিম কোর্টের সরকারি ওয়েবসাইটে তুলে ধরা হয়েছে, তার ১৫৩ পাতার ৩১৩ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, তাজ হোটেল মুম্বইয়ের অভিজ্ঞান স্বরূপ। শহরের ইতিহাসের অংশীদারও বটে। সেই সূত্রেই উল্লেখ করা হয়েছে ১৯১৮-র তাজ হোটেলে জিন্না-রতনবাঈ প্রসঙ্গ। জিন্নার দ্বিতীয় স্ত্রী রতনবাঈ সে-দিন ১৮ বছরের তরুণী। জিন্নার থেকে ২৪ বছরের ছোট রতনবাঈয়ের বিয়েতে অবশ্য সায় দেয়নি তাঁর পরিবার।
রায়ে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এই তাজমহল হোটেলেই ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সরোজিনী নায়ডুর সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন জিন্না। পাশাপাশি, কাসভেরা যেখানে গাড়িবোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিলেন, সেই মাঝগাঁওয়ের সঙ্গেও
বিশেষ যোগ ছিল জিন্নার। রতনবাঈয়ের কবর রয়েছে এই মাঝগাঁওয়েই। এ ভাবেই মুম্বইয়ের সঙ্গে জিন্নার সম্পর্কের কথা ২৬/১১-র এই আসামি কাসভকে মনে করালেন বিচারপতিরা। |
|
|
|
|
|