|
|
|
|
ফের তৃতীয় শক্তি গঠনে দিল্লিতে তৎপর মুলায়ম |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
কয়লা কেলেঙ্কারি কাণ্ডে এ বার ঘোলা জলে মাছ ধরতে সক্রিয় হলেন মুলায়ম সিংহ যাদব। কংগ্রেস ও বিজেপি থেকে সমদূরত্ব রেখে আজ তৃতীয় শক্তির উত্থানে দিল্লিতে তৎপর হলেন সপা প্রধান। সঙ্গে নিলেন চার বাম ও টিডিপি-র মতো ধর্মনিরপেক্ষ দলকে।
আজ এক দিকে কয়লা কেলেঙ্কারিতে সরকারের ভূমিকা খতিয়ে দেখার জন্য সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিকে দিয়ে তদন্ত করার দাবি জানিয়েছেন মুলায়ম। তেমনই আবার সংসদ চলতে না দেওয়ার প্রশ্নে বিজেপির সমালোচনা করে আগামিকাল সংসদ চত্বরে ধর্নায় বসার কথাও ঘোষণা করেছেন তিনি। মুলায়মের কথায়, “এই ভাবে সংসদ অচল করার বিপক্ষে আমরা। আমরা চাই বিষয়টি নিয়ে সংসদে বিতর্ক হোক। তবে কয়লা ব্লক বণ্টনের ক্ষেত্রে কোনও দুর্নীতি হয়েছে কি না তা সুপ্রিম কোর্টের কোনও বিচারপতিকে দিয়ে খতিয়ে দেখা হোক।” রাজনৈতিক সূত্র জানাচ্ছে, আজ মুলায়ম একই সঙ্গে দুই প্রধান দলকে আক্রমণ শানিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে নিজেকে একটি পৃথক শক্তি হিসাবে তুলে ধরতে চাইছেন। যে ছাতার তলায় তিনি আহ্বান জানান, সমস্ত অ-বিজেপি ও অ-কংগ্রেসি দলকে। আজ সিপিএম সূত্রে দাবি করা হয়েছে, ওই দলগুলি ছাড়াও বিজেডি ও এআইডিএমকে-র মতো দলের সাংসদেরাও কালকের ধর্নায় থাকবেন।
আজ সকাল থেকেই অ-কংগ্রেসি ও অ-বিজেপি দলগুলিকে এক জোট করে আন্দোলনে নামতে সক্রিয় হয় সপা শিবির। বিজেপি সাংসদদের বিক্ষোভের কারণে সংসদ মুলতুবি হয়ে যাওয়ার পরেই চার বাম দলের সঙ্গে বৈঠকে বসেন সপা নেতৃত্ব। সপা সূত্রের খবর, বৈঠকে মুলায়ম চার বাম দলকে এক জোট হয়ে কংগ্রেস ও বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণে নামার জন্য সওয়াল করেন। পরে সিপিএম সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া বলেন, “সপা নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আমরা সংসদ চলার দাবিতে একযোগে আগামিকাল ধর্নায় বসতে চলেছি।” পরে তিনি দাবি করেন, “বিজেডি ও এআইডিএমকেও আমাদের ধর্নাকে সমর্থন জানিয়েছে। ওই দুই দলের প্রতিনিধিরাও কাল ধর্নায় থাকবেন।”
মুলায়ম আজ বিজেপির ভূমিকার সমালোচনা করার পাশাপাশি কয়লা কেলেঙ্কারি তদন্তের দাবি ওঠানোয় কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে কংগ্রেস নেতৃত্ব। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী অম্বিকা সোনি বলেন, “বিষয়টি নিয়ে সংসদে বিতর্ক হোক তা আমরাও চাই। কিন্তু উপযুক্ত প্রমাণ না থাকলেও তো আর তদন্ত করা যায় না।”
তবে আজ সপা ও চার বাম দল বিজেপির সমালোচনায় এগিয়ে আসাকে কংগ্রেস নেতৃত্ব ঘনিষ্ঠ মহলে স্বাগত জানিয়েছেন। কিন্তু রাজনৈতিক সূত্র মনে করছে, সপা নেতৃত্ব পরিকল্পনামাফিক এই পদক্ষেপ করেছেন। কেননা উত্তরপ্রদেশে ছেলে অখিলেশকে ক্ষমতায় বসানো পর এখন মুলায়মের পাখির চোখ প্রধানমন্ত্রীর তখত। ইতিমধ্যেই তিনি দলীয় বৈঠকে অকাল লোকসভা ভোটের জন্য দলকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন। এক সপা নেতার কথায়, “আমাদের লক্ষ্য কমপক্ষে ৬০টি লোকসভা আসন।
যাতে সপা আগামী দিনে প্রধানমন্ত্রিত্বের দাবি জানাতে পারে।”
দলের অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা হল, বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে জেরবার কংগ্রেস দ্রুত জনসমর্থন হারাচ্ছে। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে তারা আরও দুর্বল হবে। অন্য দিকে, নেতৃত্বের সংকট রয়েছে বিজেপির মধ্যেও।
ফলে সপা মনে করছে, আগামী লোকসভা নির্বাচনে সরকার গড়ার ক্ষেত্রে তৃতীয় ফ্রন্ট একটি বিকল্প হয়ে উঠতে পারে। তাই উত্তরপ্রদেশে দল যেমন কংগ্রেস ও বিজেপির সঙ্গে সমদূরত্ব রেখে এগোচ্ছে, সেই রণনীতি এখন জাতীয় রাজনীতিতেও প্রয়োগ করতে চাইছেন মুলায়ম। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময়ে কংগ্রেস ও সপা নেতৃত্ব কাছাকাছি এসেছিল। কিন্তু উত্তরপ্রদেশকে আর্থিক সাহায্যের প্রশ্নে কিংবা সম্প্রতি মায়াবতীর দাবি মেনে যে ভাবে পিছিয়ে থাকা শ্রেণির চাকরিতে সংরক্ষণের প্রশ্নে কংগ্রেস ইতিবাচক পদক্ষেপ করেছে তাতে বেজায় ক্ষুব্ধ সমাজবাদী নেতৃত্ব। |
|
|
|
|
|