দলীয় গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে একটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষমতা হারাল সিপিএম। দলের প্রাক্তন প্রধানের নেতৃত্বে ডাকা অনাস্থায় হেরে অপসারিত হলেন বর্তমান প্রধান। মালদহের রতুয়া-২ ব্লকের মহারাজপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। এদিন ছিল ওই পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থার তলবি সভা। অনাস্থায় ১০-০ ভোটে হেরে অপসারিত হন প্রধান ফেরদোশী বেগম। সিপিএমের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীকে নিয়ে ওই পঞ্চায়েত প্রধান গড়ার তোড়জোড় শুরু করেছে কংগ্রেস। রতুয়া-২ ব্লকের জয়েন্ট বিডিও অতনু ঘোষ বলেছেন, “প্রধান ১০-০ ভোটে হেরে অপসারিত হয়েছেন। পঞ্চায়েত সূত্রে জানা যায়, পঞ্চায়েতে ১৫ আসনের মধ্যে ১২টি সিপিএমের ও ৩টি আসন ছিল কংগ্রেসের। নির্বাচনের পর বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পরে প্রধান হন মাহে জাসমিন। দলীয় কোন্দলের জেরে এক বছর বাদেই অনাস্থায় হেরে অপসারিত হতে হয় তাঁকে। প্রধান হন সাহানা বেগম। কিন্তু কিছুদিন বাদেই ফের শুরু হয় প্রবল গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব। এক বছর বাদে ফের অনাস্থায় হেরে তিনি অপসারিত হওয়ার পর প্রধান হন ফেরদোশী বেগম। এরই মধ্যে দলীয় কোন্দলে তিতিবিরক্ত হয়ে কংগ্রেসে যোগ দেন ৩ সিপিএম সদস্য। ফলে কংগ্রেসের সদস্য সংখ্যা বেড়ে ৬-এ দাঁড়ায়। সিপিএমে থাকা বাকি ৯ সদস্যের মধ্যে প্রাক্তন প্রধান মাহে জাসমিনের পক্ষে ৩ জন ও বর্তমান প্রধানের পক্ষে ৪ জন সদস্য সরাসরি দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। দলের তরফে বহুবার দ্বন্দ্ব মেটাতে উদ্যোগ নেওয়া হলেও সমস্যার সমাধান হয়নি। এর পরে দু সপ্তাহ আগে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করা হয়। প্রধানকে সরাতে মরিয়া হয়ে কংগ্রেসের সঙ্গেই জোট বাঁধেন প্রাক্তন প্রধান মাহে জাসমিন সহ ৩ সিপিএম সদস্য। পাশাপাশি বর্তমান প্রধানও কংগ্রেসের ৬ সদস্যের সমর্থন পেতে মরিয়া চেষ্টা চালাতে থাকেন বলে অভিযোগ। শেষ পর্য়ন্ত হেরে যান প্রধান। এদিনের সভায় তিনি বা তার অনুগামী ৩ সদস্যের কেউই অবশ্য সভায় হাজির ছিলেন না। পঞ্চায়েতের বিরোধী কংগ্রেস দলনেতা মনোয়ার হোসেনের দাবি, “সিপিএমের একটি গোষ্ঠী আমাদের পক্ষে স্বেচ্ছায় যোগ দিয়েছে। এবার আমরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। পঞ্চায়েত প্রধান আমরাই গড়ব। রতুয়া-২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তথা সিপিএম নেতা আব্দুল কুদ্দুস বলেছেন,“স্থানীয় নেতৃত্ব বহু চেষ্টা করেও সমস্যা মেটাতে পারেননি। বিক্ষুব্ধদের বিরুদ্ধে দলীয় সভায় আলোচনা করেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।” |