তৃতীয় বর্ষের ফল বাতিলের ঘোষণা
ছাত্র বিক্ষোভের ৩ দিনের মাথায় স্নাতক স্তরের অনার্সের তৃতীয় বর্ষের ফল বাতিল কথা ঘোষণা করলেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত শুক্রবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিএ, বিএসসি, এবং বিকমের তৃতীয় বর্ষের ফল প্রকাশ করেন। ফলাফল ভুলে ভরা বলে অভিযোগ ওঠে। ভুলে ভরা ফলাফল বাতিলের দাবি তুলে মালদহ এবং দুই দিনাজপুরের বিভিন্ন কলেজে ছাত্র বিক্ষোভ শুরু হয়। গত শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে এসএফআইয়ের বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে লাঠি চালানো এবং এস এফ আই সমর্থকদের বিরুদ্ধে পাল্টা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে। পরে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে ফলাফল বাতিলের কথা ঘোষণা করেন। যে কর্মীর গাফিলতিতে ফলাফলে অসঙ্গতি দেখা দিয়েছে সেই কর্মী আধিকারিকদের চিহ্নিত করে শাস্তির দাবি তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেসের কলেজ শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা থেকে শুরু করে সিপিএমের শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুটা সহ ডান বাম ছাত্র সংগঠনগুলি। সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে ফলা বাতিলের কথা ঘোষণা করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার মাধব চন্দ্র অধিকারিক বলেন, “উপাচার্যের নির্দেশে তৃতীয় বর্ষের অনার্সের সমস্ত রেজাল্ট প্রত্যাহার করা হল। দ্রুত ত্রুটিমুক্ত রেজাল্ট বের করা হবে। রেজাল্টে নানা অসঙ্গতির জন্য কলেজে কলেজে ছাত্র বিক্ষোভ হচ্ছিল। সে কারণেই উপাচার্যের তৃতীয়বর্ষের সব রেজাল্ট প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। কাদের গাফিলতিতে এই রেজাল্ট বিভ্রাট হয়েছে তাদের শনাক্ত করা হচ্ছে।” শুক্রবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় বর্ষের অনাসের রেজাল্ট প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয়, পরীক্ষার ৪৪ দিনের মাথায় রেজাল্ট বের করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ২১ টি কলেজের ৪৭১৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৭৪ জন প্রথম বিভাগে পাশ করেছে। ৭৩৩ জন পরীক্ষার্থীর রেজাল্ট ওয়েটিং রাখার কথা জানানো হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে। যদিও ফল প্রকাশের পরের দিন বিভিন্ন কলেজ কতৃপক্ষকে রেজাল্ট বিলি করতে গিয়ে ফলাফলে একাধিক অসঙ্গতির অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ স্নাতক স্তরের প্রথম এবং তৃতীয় বর্ষে প্রথম বিভাগে পাশ করা ছাত্র ছাত্রীরা তৃতীয় বর্ষের রেজাল্টে অকৃতকার্য হয়েছে বলে অভিযোগ। ছাত্র সংগঠনগুলির অভিযোগ এমন ঘটনা সম্ভব নয়। বহু ছাত্রছাত্রী পরীক্ষা দেওয়ার পরেও তাদের রেজাল্টের অনুপস্থিত বলে উল্লেখ্য রয়েছে। এছাড়া বহু ছাত্রী ছাত্রীদের রেজাল্টে ‘ওয়েটিং’ লেখা হয়েছে। চাঁচল কলেজের ৪০০ জন পরীক্ষার্থীদের একজনেরও রেজাল্ট বিশ্ববিদ্যালয় পাঠায় নি বলে কলেজ কতৃপক্ষ জানিয়েছেন। রেজাল্টে এমনই নানান অসঙ্গতির অভিযোগ তুলে মালদহ সহ দুই দিনাজপুরের কলেজ গুলিতে ছাত্র বিক্ষোভ শুরু হয় তৃণমূল কংগ্রেসের কলেজ শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা-র (ওয়েস্ট বেঙ্গল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রফেসর অ্যাসোসিয়েশন ) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নরেশ রায় বলেন, “গত বছর রেজাল্টে যে ভুল হয়েছিল তার পুনরাবৃত্তি রুখতে আমরা প্রথম থেকেই রেজাল্ট প্রকাশের আগে একাধিকবার খুটিয়ে পরীক্ষা করে নেওয়ার দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের কোনও কথা না শুনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক বিভাগ তড়িঘড়ি রেজাল্ট বের করেছে। যাদের গাফিলতির জন্য এতগুলি ছাত্র ছাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হল তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি দিতে হবে।” ওয়েবকুটার জেলা সম্পাদক সোহরাব আলি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়কে ছাত্রের সঙ্গে ছেলেখেলা করার অধিকার কে দিয়েছে? যে সমস্ত ছাত্র ছাত্রীরা পার্ট ওয়ান ও পার্ট টুতে প্রথম বিভাগে পাশ করেছে তারা কী ভাবে তৃতীয় বর্ষে ফেল করে? যাদের গাফিলতিতে ছাত্রদের ভোগান্তি পোহাতে হল তাদের শাস্তি দিতে হবে।” গৌড় কলেজের অধ্যক্ষ প্রমোতোষ সেন বলেন, “তাড়াতাড়ি রেজাল্ট বের করে বিশ্ববিদ্যালয় বাহবা কুড়োনোর চেষ্টা করাতেই ভুলে ভরা রেজাল্ট প্রকাশ হয়েছে। তাড়াহুড়ো না করে ধীরে সুস্থ রেজাল্ট বের করলে এ ভাবে তা প্রত্যাহার করতে হত না। এ ঘটনা এই রাজ্যে প্রথম।” এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক অভিজিত দে বলেন, “আমাদের আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়কে পিছু হটতে হল। বিশ্ববিদ্যালয় রেজাল্ট প্রত্যাহার করে নেওয়ায় আমাদের জয় হল।” ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “অযোগ্য লোক দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চালানো হচ্ছে। এঁদের দ্রুত না সরালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও রকম উন্নতি হতে পারে না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.