স্কুল নির্বাচনে তৃণমূলের জয়ের ধারা অব্যাহত রয়েছে বাঁকুড়ায়। একই সঙ্গে এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ প্রকাশ্যে এসেছে কয়েকটি এলাকায়। রবিবার খাতড়া ব্লকের তিরিং সির্দ্ধাথম আদিবাসী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সিমলাপালের লায়েকপাড়া রাধেশ্যাম বিদ্যামন্দির, হিড়বাঁধের তিলাবনী হাইস্কুল, সোনামুখী ব্লকের বড়চাতরা রামকানাই বিদ্যায়তন, পাত্রসায়রের পারুলিয়া হাইস্কুল, ইন্দাসের আউসনাড়া হাইস্কুল ও ওন্দার গড়াশোল হাইস্কুলে ভোট হয়।
তিলাবনী ও গড়াশোল বাদে বাকি স্কুলগুলিতে তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীরাই জয়ী হয়েছেন। তিরিং ও লায়েকপাড়া হাইস্কুলে ৬-০ তে সিপিএমকে হারিয়ে জয়ী হয় তৃণমূল। তিলাবনী হাইস্কুলে ৬টি আসনের মধ্যে ৪টিতে এসইউসি, ২টিতে জয়ী হয়েছে সিপিএম। আর ৬টি আসনেই সিপিএমের মনোনীত প্রার্থীরা জিতেছেন গড়াশোল হাইস্কুলে। এর আগে এই স্কুলটি ছিল তৃণমূলের দখলে। এই পরাজয়ের জন্য তৃণমূলের ওন্দা ব্লক সভাপতি অশোক চট্টোপাধ্যায় নিজেদের সাংগঠনিক দুর্বলতাকে দায়ী করেছেন। সিপিএমের ওন্দা জোনাল কমিটির সম্পাদক তরুণ সরকার বলেন, “ওদের বোঝা উচিত সন্ত্রাস শেষ কথা বলে না। মানুষই শেষ কথা বলে।”
তবে বড়চাতরা রামকানাই বিদ্যায়তন, পারুলিয়া হাইস্কুল ও আউসনাড়া হাইস্কুলে ভোটের লড়াইয়ে সিপিএম ছিল না। তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠী ৬টি আসনেই প্রার্থী দেয়। বড়চাতরা রামকানাই বিদ্যায়তনে ৬টি আসনে জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি সুরজিৎ মুখোপাধ্যায়ের গোষ্ঠীর প্যানেলের প্রার্থীরা জয়ী হন। সোনামুখীর বিধায়ক দীপালি সাহা গোষ্ঠীর ৬ জন প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন। পারুলিয়া হাইস্কুলে বিধায়ক দীপালি সাহা গোষ্ঠী ও পাত্রসায়র ব্লক তৃণমূল সভাপতি স্নেহেশ মুখোপাধ্যায় গোষ্ঠী পৃথকভাবে ৬টি আসনেই প্রার্থী দিয়েছিল। দীপালিদেবীর গোষ্ঠীর ৫ জন ও স্নেহেশবাবুর একজন প্রার্থী জয়ী হয়েছেন।
অন্য দিকে, আউসনাড়া হাইস্কুলের ভোটে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর ১২ জন এবং বিজেপির ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি রবিউল হোসেনের গোষ্ঠীর প্যানেলের ৫ জন ও ইন্দাসের বিধায়ক গুরুপদ মেটের গোষ্ঠীর প্যানেলের একজন প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। দলের জেলা সভাপতি অরুপ খাঁর দাবি, “স্কুল নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে ভোট হয় না। অভিভাবকেরা যাঁদের যোগ্য মনে করেছেন, তাঁদেরই নির্বাচিত করেছেন। সে ক্ষেত্রে আমাদের দলের একাধিক লোক প্রার্থী হয়েছেন। দলের গোষ্ঠী কোন্দলের কোনও ব্যাপার নেই।” সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অমিয় পাত্রের দাবি, “বহু স্কুলে আমাদের সমর্থক অভিভাবকদের মনোনয়ন তুলতে বাধা দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের হুমকি আর সন্ত্রাসের জেরেও আমাদের সমর্থকেরা অনেক স্কুলে ভোট দিতে পারেননি। তারপরেও আমরা জেলার বহু স্কুলে জিতেছি।” |