সমগ্র রাস্তা জুড়ে তৈরি হয়েছে বড়ো বড়ো গর্ত। তাতে গাড়ির চাকা পড়লে প্রাণ ওষ্ঠাগত যাত্রীদের। প্রধানমন্ত্রী গ্রামসড়ক যোজনার টাকায় ২০০৬ সালে তৈরি হয়েছিল রাস্তা। কিন্তু তারপর থেকে আর সংস্কারের মুখ দেখেনি রাস্তাটি। ফলে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর-১ ব্লকের অধীনে লালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অর্ন্তগত পাটুনিঘাটা থেকে তুলসীঘাটা পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার রাস্তাটি একেবারেই যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ওই রাস্তায় যাতায়াত করা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে যাত্রীদের কাছে। |
রাস্তাটি তৈরি হওয়ার পর মথুরাপুর স্টেশন থেকে তুলসীঘাট অবধি বেশ কিছু অটো চলাচল করত। কিন্তু কয়েক বছর চলার পর বেহাল রাস্তার কারণে সেগুলি বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে বেশ কয়েকটি মোটরভ্যান চলাচল করলেও যাত্রীসংখ্যার তুলনায় তার সংখ্যা নেহাতই নগণ্য। এই রাস্তা দিয়েই নলগোড়া, দেবিপুর, মনিরপুর, কৃষ্ণচন্দ্রপুর, লালপুর সহ কয়েকটি পঞ্চায়েতের কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন স্কুল-কলেজ কিংবা অফিসে যান। কিন্তু বেহাল রাস্তায় যাত্রীদের যাতায়াত করতে হয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। খারাপ রাস্তার কারণে মোটরভ্যান চালকরাও নিজেদের ইচ্ছামতো ভাড়া দাবি করেন। রাস্তার কারণে হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাওয়ার সময় মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। এ ছাড়া এলাকার চাষিরাও মোটরভ্যানে করে কৃষিপণ্য নিয়ে যাওয়ার কারণে সমস্যায় পড়ছেন। স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল লতিফ, রহমান মোল্লারা জানালেন, “বেহাল রাস্তার কারণে আমাদের নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। রাস্তার কারণেই আত্মীয় স্বজনেরাও খুব প্রয়োজন ছাড়া আমাদের বাড়িতে আসতে চায় না। ছেলে-মেয়েদের বিয়ে দেওয়াও দায় হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন সমস্যার কথা জানলেও কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।”
স্থানীয় লালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আবদুল রাজ্জাক বলেন, “ওই রাস্তাটির যা অবস্থা তাতে মানুষের ক্ষোভ হওয়ারই কথা। কিন্তু রাস্তা মেরামতির জন্য আমাদের তহবিলে টাকা নেই। পঞ্চায়েত সমিতি, বিডিও, জেলা পরিষদে বার বার জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।” মথুরাপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আলাউদ্দিন খাঁ রাস্তার বেহাল অবস্থার কথা স্বীকার করে বলেন, “জেলা পরিষদে বার বার জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।” বিডিও দীপ্তার্ক বসু বলেন, “রাস্তাটি সারানোর জন্য অতিরিক্ত জেলাশাসককে জানিয়েছি।’ রাস্তা সারানোর জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক সঞ্জয় বসু। |