বহরমপুরের দুই মুখ একই সঙ্গে দেখা গেল সোমবার রাতে।
বহরমপুর বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া মিরমদন বাস টার্মিনাসের সামনে সুনসান রাস্তায় রাত ৯টা নাগাদ ফিরছিলেন এক দম্পতি। তাঁদের সাইকেলের চাকা ফুটো হয়ে যাওয়ায় হেঁটে খাগড়ার ষষ্ঠীতলার বাড়ি যাচ্ছিলেন পেশায় রঙের মিস্ত্রি সুমন দাস ও তাঁর স্ত্রী। হঠাৎই রাস্তার উল্টো দিক থেকে আসা কয়েকজন যুবক তাঁদের উত্ত্যক্ত করতে শুরু করে। কটূ কথা বলা হয় সুমনবাবুর স্ত্রীকে। সুমনবাবু তার প্রতিবাদ করলে ওই যুবকেরা তাঁকে ধরে পেটাতে শুরু করে। সেই দেখে স্বামীকে বাঁচাতে গেলে আহত হন সুমনবাবুর চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীও। ইতিমধ্যে ওই যুবকদের কয়েকজন সঙ্গীও চলে আসে। সবাই মিলে ওই দম্পতিকে ঘিরে ধরে চড়-ঘুসি মারা হয় বলে অভিযোগ। সুমনবাবুর বুকে পেটে আঘাত লেগেছে। তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
সেই সময়ে ওই পথ দিয়েই যাচ্ছিলেন শান্তনু সাহা নামে এক যুবক। তাঁরও বাড়ি ষষ্ঠীতলায়। তিনি সুমনবাবুদের প্রতিবেশী। চোখের সামনে এই ঘটনা দেখে তিনি প্রথমে প্রতিবাদ করেন। কিছু দূরে তখন আড্ডা দিচ্ছিল ওই এলাকারই অন্য কিছু যুবক। শান্তনুবাবু তাদের চিৎকার করে ডাকেন। সেই যুবকেরা ছুটে আসছে দেখেই পরিস্থিতি পাল্টে যায়। |
যে যুবকেরা ওই দম্পতিকে হেনস্থা করছিল, তারা পালাতে চেষ্টা করে। তবে দু’জনকে ধরেও ফেলা হয়। শান্তনুবাবু একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন। তিনি বলেন, “নার্সিংহোমে ভর্তি রয়েছেন আমার এক আত্মীয়। তাঁকে দেখে বাড়ি ফিরছিলাম। হঠাৎ দেখি আমার পরিচিত ওই দম্পতিকে মারধর করছে কয়েকজন যুবক। এলাকার অন্য ছেলেদের আমি চিনি। তাঁদের তখন চিৎকার করে ডাক দিয়েছি। তাঁরা এসে ওই দম্পতিকে হেনস্থার হাত থেকে উদ্ধার করেছেন। দু’জনকে আমরা ধরতে পেরেছিলাম। তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।” ধৃতদের এক জন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। তাঁর বাবা সরকারি কর্মী। আর এক জন একটি গ্যারাজে কাজ করেন। তাঁদের অবশ্য দাবি, তাঁরা ওই ঘটনায় জড়িত নন। যাঁরা প্রকৃত অপরাধী তাঁরা পালিয়ে গিয়েছেন। তাঁদের বাড়ি মধুপুর জামতলা এলাকায়। স্টেডিয়ামের কাছে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে যাচ্ছিলেন। তখনই তাঁরা এই ঘটনায় জড়িয়ে পড়েন বলে তাঁদের দাবি।
পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “অভিযোগ পেয়েছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করে ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ।” |