স্কুল নির্বাচন ঘিরে সংঘর্ষে জখম হয়েছেন চার পুলিশকর্মী এবং সিপিএমের এক লোকাল কমিটির সম্পাদক। তৃণমূল এবং কংগ্রেসও দাবি করেছে, রবিবার রাতে রেজিনগরের মানিক্যহার উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির নির্বাচন ঘিরে ওই সংঘর্ষে তাদের কর্মীরাও কমবেশি আহত হয়েছেন। সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে রেজিনগরের বিধায়ক কংগ্রেসের হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধে। তিনি অবশ্য সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। সিপিএম আজ, মঙ্গলবার স্থানীয় ৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ১২ ঘণ্টা বন্ধের ডাক দিয়েছে। এই স্কুলে সিপিএম শেষ পর্যন্ত ৪-২ ভোটে ক্ষমতা দখল করেছে। আগে ক্ষমতা ছিল কংগ্রেসের হাতে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই নির্বাচনে কংগ্রেস, তৃণমূল ও সিপিএম আলাদা আলাদা ভাবে প্রার্থী দিয়েছিল। সকাল থেকে ভোটপর্ব মোটামুটি শান্তিতেই চলছিল। গণ্ডগোল শুরু হতে থাকে ভোটের ফল প্রকাশের সময় থেকে। কংগ্রেস পিছোতে থাকে, সিপিএম এগোতে থাকে। সে খবর বাইরে বেরিয়ে আসে। তখনই উত্তেজনা বাড়তে থাকে। সিপিএম এবং তৃণমূলের অভিযোগ, তাদের সমর্থকদের উপরে হামলা চালায় কংগ্রেসের সমর্থকেরা। মারধর করা হয়। অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনতে সে রাতে পুলিশ গেলে তাদেরও খুব মারধর করা হয়েছে। চার জন পুলিশকর্মী জখম হন। এই সময়েই মারধর করা হয়েছে সিপিএমের সোমপাড়া লোকাল কমিটির সম্পাদক তাজারুল হককে। তিনি বহরমপুর নিউ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। |
তাজারুলের সরাসরি অভিযোগ, “ভোট গণনা চলাকালীন বিধায়ক হুমায়ুন কবীর উত্তেজিত হয়ে আমাকে মারধর করেন।” সিপিএমের শক্তিপুর লোকাল কমিটির সম্পাদক শ্যামল দুবের অভিযোগ, “লোহার রড দিয়ে তাজারুলকে আঘাত করা হয়। তাঁর মাথায় ১৭টি সেলাই হয়েছে। আমরা বিধায়কের বিরুদ্ধে থানায় মারধরের অভিযোগ করেছি।” সোমবার তাঁরা এলাকায় মিছিলও করেছেন।
তৃণমূলের অভিযোগও কংগ্রেসের বিরুদ্ধেই। তৃণমূলের বেলডাঙা ২ (পশ্চিম) ব্লক সভাপতি সুনির্মল ঘোষাল বলেন, “সিপিএম জিতছে দেখে তৃণমূলকে আক্রমণ করেন স্থানীয় বিধায়ক। তিনি এবং তাঁর সহযোগীরা আমাদের মারধরও করেছেন। বিধায়কের বিরুদ্ধে আমরা থানায় লিখিত অভিযোগও করেছি।”
রেজিনগরের বিধায়ক কংগ্রেসের হুমায়ুন কবীরের কথায়, “ভোট শান্তিপূর্ণই ছিল। গণনার সময়ে বামফ্রন্ট এগিয়ে যায়। তারপরে সেই খবর বেরিয়ে আসে। সিপিএম পটকা ফাটিয়ে আনন্দে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। আমাদের কর্মীদের মারধর করে। মোটরবাইক পুড়িয়ে দেয়। আমার ছেলেকেও মারধর করা হয়েছে।” তিনি বলেন, “চারশো লোক মিলে আমাকে মারতে এসেছিল। এই অবস্থায় আমাদের সমর্থকেরাও উত্তেজিত হয়ে যায়। দু’পক্ষে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। আমি আত্মরক্ষা করেছি মাত্র।” তাঁর দাবি, “পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল বলেই এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ঠিক সময়ে ব্যবস্থা নিলে গণ্ডগোল এত দূর গড়াত না।”
জেলার পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘এই ঘটনায় চার পুলিশ কর্মী জখম হয়েছেন। বিধায়ককে রক্ষা করতে গিয়েই তাঁরা আহত হন। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।” |