ট্রেনের কামরায় গলা কেটে খুন
বে স্টেশন ছেড়েছে ট্রেন। আচমকা লাফিয়ে উঠল জনা চারেক যুবক। ঝটপট বেরিয়ে এল ঝকঝকে দা। কামরার মাঝামাঝি বাঙ্কে শুয়ে ঘুমোচ্ছিলেন এক যুবক। আশপাশের জনা পনেরো যাত্রীকে হতচকিত করে দিয়ে তাঁকে কোপাতে শুরু করেন ওই চারজন। তাঁর মুণ্ডু কেটে নেওয়া হয় ধড় থেকে। সেই মুণ্ডু সিটের নীচে রেখে চেন টেনে থামিয়ে চটপট লাফিয়ে নেমে পড়ে চার জনই।
সোমবার দুপর তিনটের সময় পূর্ব রেলের হাওড়ার ডিভিশনের কাটোয়া-আজিমগঞ্জ শাখার বাজারসৌ স্টেশনে এই ঘটনার পরে কিছু ক্ষণের মধ্যেই ফাঁকা হয়ে যায় ট্রেন। ওই কাটোয়া-আজিমগঞ্জ লোকালের একটি কামরা তখনও প্ল্যাটফর্মেই। অন্য কামরার যাত্রীরা লাফিয়ে লাইনে নেমে পালান। তবে কিছু ক্ষণের মধ্যেই পুলিশ-প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম খোকন ঘোষ (৩৫)। পেশায় ছানা ব্যবসায়ী। বাড়ি সালারের কৈগুড়ি গ্রামে। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “সেচের জল দেওয়া নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে ওই গ্রামে দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ রয়েছে। এ ছাড়াও গরু চরানো নিয়েও বিবাদ ছিল। সেই কারণেই খোকনবাবুকে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি।” অভিযুক্তদের এক জনকে ঘটনার পরেই স্থানীয় বৈদ্যপুর ঘাটে গ্রেফতার করেছে সালার থানার পুলিশ। পুলিশ সুপার জানান, ধৃতকে কাটোয়ার রেল পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
শোকার্ত খোকন ঘোষের দিদি। ছবি: গৌতম প্রামাণিক
রেল পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই লোকাল একটু দেরি করেই এই দিন বাজারসৌ পৌঁছয়। এই ট্রেনেই রোজ ছানা নিয়ে খোকনবাবু বহরমপুর বাজারে যান। এদিনও অ্যালুমিনিয়াম ড্রামে ছানা নিয়ে টেঁয়া স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠেছিলেন। অন্য দিনের মতোই বাঙ্কে চড়ে নিশ্চিন্তে শুয়েও পড়েছিলেন। হামলা হতে পারে, এমন আশঙ্কা তাঁর ছিল না।
খোকনবাবুর দিদি সান্ত্বনা ঘোষ বলেন, “পাঁচ দিন আগে এক প্রতিবেশীর গরু দিনু ঘোষের খেতে ঢুকে পড়েছিল। দিনুবাবু তখন মেরে ওই প্রতিবেশীর কিশোর ছেলের হাত ভেঙে দেয়। তার প্রতিবাদ করে আমার ভাই। সেই জন্যই ভাড়াটে দুষ্কৃতী দিয়ে আমার ভাইকে খুন করা হয়েছে।” স্থানীয় টেঁয়া-বৈদ্যপুর পঞ্চায়েতের সদস্য কংগ্রেসের বিব্রতনারায়ণ মিশ্র অবশ্য বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরে গ্রামের ঘোষ সম্প্রদায়ের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে বাবলা নদীর উপরে বৈদ্যপুর ঘাটের খেয়া পারাপার এবং জমিতে সেচের জল দেওয়া নিয়ে বিবাদ চলছে। তাই নিয়ে আগেও গ্রামে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। সমাধানের সব চেষ্টাই বিফল হয়েছে। এখন ওই বিবাদ থেকে খুন পর্যন্ত হয়ে গেল।”
কাটোয়া জিআরপি থানার ওসি বাসুদেব হাজরা তদন্তে গিয়ে বলেন, “মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করতে পাঠানো হয়েছে। খুনের তদন্ত শুরু হয়েছে।” ওই লোকালটি এই দিন দীর্ঘ ক্ষণ বাজারসৌতে দাঁড়িয়ে থাকার পরে রাত সাড়ে ৭টা নাগাদ ছেড়ে যায়। তবে বাজারসৌ স্টেশনে তিনটি প্ল্যাটফর্ম থাকায় অন্য ট্রেন চলাচলে কোনও ব্যাঘাত ঘটেনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.