নিজস্ব সংবাদদাতা • কোন্নগর |
অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন বাড়ির লোকেরা। তর সইছে না পড়শিদেরও। আসলে গোটা তল্লাটই অপেক্ষায়, কবে ফিরবে রবিকান্ত সিংহ। অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে জয়ী ভারতীয় দলের অন্যতম সদস্য রবিকান্ত গত কয়েক দিনে আক্ষরিক অর্থেই সেলিব্রিটি বনে গিয়েছে। অষ্ট্রেলিয়া থেকে এখনও ফেরেনি কোন্নগরের ক্রাইপার রোডের বাড়ির ছোট ছেলে। তবু রবিবার দুপুর থেকেই অভিনন্দনের বন্যায় ভাসছেন বাড়ির লোকজন।
সোমবার বাড়িতে বসে রবিকান্তের ক্রিকেটে হাতেখড়ির গল্প শোনাচ্ছিলেন মা, বাবা, দুই দাদা। সচিন তেণ্ডুলকরের জীবনে দাদা অজিতের ভূমিকা কারও অজানা নয়। আর রবিকান্তের জীবনে ‘অজিত’ দাদা ঋষিকান্ত। ঋষিকান্ত অনুশীলনে গেলে, ৬ বছরের রবিও সঙ্গে যেত। বল কুড়িয়ে দিত। সেখান থেকেই কার্যত ক্রিকেটের হাতেখড়ি রোগাসোগা ছেলেটির। |
২০০৩ সালে ফ্রেন্ডস ইউনিয়নে খেলা শুরু। ছেলের মধ্যে যে মশলা রয়েছে, তা নজর এড়ায়নি কোচ কল্যাণ ঘোষালের। রবিকে নিয়ে যান বালি ক্রিকেট ক্লিনিকে। সেখান থেকে ২০০৫ সালে সল্টলেকে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভিডিওকন অ্যাকাডেমি। সেখানে উৎপল গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে ট্রেনিং। পরিশ্রমের পুরস্কার হিসেবে অনূর্ধ্ব ১৩ থেকে অনূর্ধ্ব ১৯ পর্যন্ত বাংলা দলের সদস্য ছিল সে। চলতি বছরের জুলাইয়ে মালয়েশিয়ায় এশিয়া কাপে জাতীয় দলের হয়ে প্রথম সুযোগ পায় সে। কিন্তু প্রথম একাদশে ঠাঁই হয়নি। মৌসম সৈয়দ অসুস্থ না হলে হয়তো যুব বিশ্বকাপেও বল হাতে মাঠে দাঁড়ানো হত না তাকে। কিন্তু বল হাতে পড়লে রবি যে জ্বলে উঠতে সময় নেবে না, সে বিশ্বাস ছিল বাড়ির সকলের। বন্ধুদেরও। তাঁদের কাউকেই নিরাশ করেননি ইশান্ত শর্মার অন্ধ ভক্তটি। বাবা প্রেমনাথ সিংহ বলেন, “ছেলে যখন বল করছিল, উত্তেজনায় তখন মনে হচ্ছিল হৃৎপিন্ড বেরিয়ে আসবে।” রবিবার ফাইনালে অষ্ট্রেলিয়া বধের পরে দুপুর আড়াইটে নাগাদ বাড়িতে ফোন আসে রবির। আবেগে কথা বেরোচ্ছিল না মা নির্মলার মুখ দিয়ে। বড়দা শশিকান্তর কথায়, “ভাই মাঠ থেকেই ফোন করেছিল। ফোনের ওপারে তখন প্রচণ্ড চিৎকার। আমাদের বাড়িতেও তাই। উল্লাসে ফেটে পড়েছে গোটা পাড়া। সবার চোখে জল এসে গিয়েছিল আনন্দে।” |