রবিবার দিনটা ভারতীয় ক্রিকেটের পক্ষে দারুণ গেল। টেস্টে নিউজিল্যান্ডকে হারানো তো হলই, একই সঙ্গে ঘরে এল অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ। অস্ট্রেলিয়ার পরে ভারতই এখন একমাত্র দল যারা পরপর দু’বছরে সিনিয়র ও জুনিয়র বিশ্বকাপ জিতল। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট জয়টা নিশ্চয়ই মধুর, কিন্তু টাউন্সভিল-এর জয়টা বেশি মধুর। অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে হারানোটা ভারতীয় ক্রিকেটে খুব বেশি হয় না এবং এ জন্যই গোটা দেশ ছোটদের জন্য গর্বিত।
অনূর্ধ্ব ১৯ আসলে একটা মঞ্চ, সিনিয়র টিমের কাছে ‘সাপ্লাই লেভেল’ বলা যেতে পারে। যদিও এখনও বলার সময় আসেনি, তবু বলব, আশা করি এই ক্রিকেটারদের নিজেদের রাজ্য এবং বোর্ড ঠিকঠাক দেখাশোনা করবে, যাতে তারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উঠে আসতে পারে। ঠিক সময়ে ওদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে উত্তরণটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটা যেন বেশি তাড়াতাড়ি বা বেশি দেরিতে না হয়। উন্মুক্ত চন্দ, স্মিত পটেল, বাবা অপরাজিত, রবিকান্ত ও হরমিতদের কিন্তু ঠিকঠাক দেখাশোনার প্রয়োজন, যাতে পরের পর্যায়ে উত্তরণটা ঠিক সময়ে হয়।
হায়দরাবাদে ভারতের সিনিয়র দলের পারফরম্যান্স যথেষ্ট ভাল। টস জিতে আগে ব্যাট করে নিউজিল্যান্ড ব্যাটিংকে চাপে রেখেছিল ধোনি। ভারতীয় উইকেটে চতুর্থ দিনে ব্যাট করাটা যথেষ্ট কঠিন এবং নিউজিল্যান্ড যথেষ্ট ভুগেছে। ম্যাচের পরে কিউয়ি অধিনায়ক রস টেলর বলল, খারাপ ব্যাটিংয়ের জন্য টেস্টের আগে ওয়ার্ম আপ ম্যাচ না পাওয়াটা দায়ী নয়। কিন্তু ওর মনে রাখা দরকার, টিমের ক্রিকেটাররা অনেকেই আগে ভারতে খেলেনি এবং সোজাসুজি ঘূর্ণি বলের সামনে পড়াটা সহজ নয়। অনেকে বলবেন, নিউজিল্যান্ড ব্যাটিং খুব দুর্বল, কিন্তু তা-ও বলব টেস্টে কুড়িটা উইকেট পাওয়া যথেষ্ট কঠিন। ভারতীয় বোলাররা কাজটা করে দেখিয়েছে এবং যথেষ্ট কৃতিত্বের ব্যাপার সেটা।
স্পিনাররা অসাধারণ বল করেছে। জিতেন পটেলও খুব ভাল বল করেছে, কিন্তু অশ্বিন ও ওঝাকে দেখে ও নিশ্চয়ই বুঝেছে, এই ধরনের উইকেটে স্লো বোলিং করাটা কেন জরুরি। পটেল কৃপণ, কিন্তু ভারতীয় বোলারদের তুলনায় নিয়ন্ত্রণ কম। ভারতে অশ্বিনের রেকর্ড খুব ভাল, এখন আশা করতে পারি এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ও বিদেশে সফল হবে। দেশে প্রচুর উইকেট পাওয়াটা ভাল, কিন্তু বিদেশে সাফল্য পেতে আরও উন্নতি চাই। দরকার আরও বৈচিত্র। কারণ বিদেশে কিন্তু উইকেট থেকে সাহায্য মিলবে না, কিন্তু টিম উইকেট আশা করবে। আমি নিশ্চিত, যত সময় যাবে তত উন্নতি করবে অশ্বিন। ওর ক্যারম বল ও টপ স্পিনারটা টেল এন্ডারদের ভোগাবে। এখানেও আমার আশা, এই দুটো বলকে আরও ধারালো করে ফেলবে ও।
কিউয়িদের নিশ্চয়ই এই হারটা ভাল ধাক্কা দিয়েছে। পরের টেস্টটা বেঙ্গালুরুতে, ওখানে ভাল ব্যাটিং উইকেট। খুব তাড়াতাড়ি কিউয়িরা নিজেদের গুছিয়ে না নিলে ওই টেস্টও কিন্তু দ্রুত শেষ হয়ে যাবে। |