নেহরু কাপ
নেপালের বিরুদ্ধে সুনীলদের মন্ত্র, যত পারো গোল করো
কোনও ফুটবল কুইজে প্রশ্ন আসতেই পারে, নেপাল শেষ কবে ভারতকে হারিয়েছে?
উইম কোভারম্যান্স যে ব্রিগেড নিয়ে এ বারের নেহরু কাপ দাপাচ্ছেন, তাঁদের কাছেও ‘র্যান্ডম স্যাম্পেল’-এ জানতে চাইলে যে কেউ মাথা চুলকোবেন!
হোটেলে ফিরে গুগুল সার্চে গিয়েও বিস্ময় কাটবে না। কারণ, সুনীল-সুব্রত-নবি-গৌরমাঙ্গিদের মতো যাঁরা বহু দিন খেলছেন জাতীয় দলে, তাঁদের কেউ কখনও হারেননি নেপালের কাছে।
ভারত শেষবার নেপালের কাছে হেরেছে সেই জেরি পেসেকের আমলে। উনিশ বছর আগে। ’৯৩ সাফ গেমস ফাইনালে।
পেশাদার ডাচ-কোচ যে সেটা জানেন না, সেটা ভাবার কোনও কারণ নেই। প্রতিদ্বন্দ্বীকে ‘সার্চ’ করার জন্য দিনের অনেকটা সময় ব্যস্ত থাকে তাঁর ল্যাপটপ। গত কালই চোখের সামনে ক্যামেরুন কী ভাবে নেপালকে ৫-০ বিধ্বস্ত করেছে, সেটাও দেখেছেন তবু নিজের দলকে আরও বেশি ফোকাস্ড রাখতে চতুর কোভারম্যান্সের গলায় সোমবারও শোনা গেল, “নেপাল খারাপ দল নয়। ক্যামেরুনের সঙ্গে ওরা হয়তো খারাপ খেলেছে। কিন্তু মলদ্বীপের সঙ্গে তো ভালই খেলেছিল টিমটা।” আর টিম মিটিংয়ে সুনীল-সুব্রতদের জন্য তাঁর স্পষ্ট নির্দেশ, “আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা নেই। আগের ম্যাচের কথা ভুলে যাও। আমরা কিন্তু এখনও ফাইনালে উঠিনি।”
অধিনায়ক সুনীল ছেত্রীর মতো আত্মবিশ্বাসী তাঁর দলও।
টিম মিটিংয়ের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময়েও যাই বলে থাকুন ডাচ-কোচ, আসলে চাইছেন নেপালকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে ক্যামেরুনের উপর চাপ তৈরি করে রাখতে। তার ওপর আজ সিরিয়াকে ২-১ গোলে হারানোয় মলদ্বীপের সামনেও ফাইনালে ওঠার সুযোগ থাকল। এই মুহূর্তে রাউন্ড রবিন টুর্নামেন্টের যা অবস্থা তাতে মঙ্গলবার নেপালের সঙ্গে ড্র করলেও ফাইনালে চলে যাবে ভারত। গোল সংখ্যা বাড়ানোর ভাবনা তা হলে কেন? কারণ, কোভারম্যান্স যে ফর্মুলায় টিমকে বাঁধতে চাইছেন, সেটা শুধু নেহরু কাপ জেতা নয়, ভবিষ্যতের কথা ভেবে। মূল লক্ষ্য জাতীয় দলের আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে নিয়ে যাওয়া। কোভারম্যান্স ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন, এখানে যে টিমটা খেলছে সেটাই ভারতের চূড়ান্ত দল নয়। এই টিমটা লোক-মুখে শুনে তাঁর করা। ফেড কাপ এবং আই লিগের ম্যাচ দেখে তিনি আরও কিছু ফুটবলার নিতে চান। “আই লিগের পরই আমাদের দুটো ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ আছে। তার পরে এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপের কোয়ালিফাইং ম্যাচ। সে দিকেই নজর রেখে এগোচ্ছি।”
নেহরু কাপ আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট হলেও এটা জিতলে ভারতের ফিফা র‌্যাঙ্কিং ১৬৮ থেকে এক ধাপও এগোবে না। তা সত্ত্বেও কোভারম্যান্স চ্যাম্পিয়ন হতে চাইছেন, সলতে পাকানোর কাজটা হবে বলে। নেহরু কাপে যদি নবিদের কোনও দল আটকাতে পারে তা হলে ক্যামেরুন। নতুন জাতীয় কোচ চান, ক্যামেরুন ম্যাচের আগে তাঁর ফুটবলারদের মনোভাব যেন এমন থাকে যে, ‘আমরা যে কোনও দলকে হারাতে পারি।’ নেপাল ম্যাচের আগে টিমকে তাঁর চূড়ান্ত নির্দেশ, “আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলো।”
কোচের নির্দেশে ফুটবলাররা ফোনে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছেন। পরিস্থিতি এমনই যে, দেশের এক নম্বর গোলকিপার সুব্রত পালের মতো কেউ কেউ নিজের ফোন নম্বর ‘ডাইভার্ট মোড’-এ করে দিয়েছেন। নাম লেখা যাবে না এই শর্তে এক সিনিয়র ফুটবলার বললেন, “ফোনে কথা বললে জরিমানা করা হচ্ছে। কোচ আমাদের বলেছেন, কাল শুরুর দিকেই গোল করে চাপটা কাটিয়ে ফেলতে হবে। তার পরে যত পারো গোল সংখ্যা বাড়াও।”
দলের দুই জুনিয়র ফুটবলার লেনি এবং ফ্রান্সিসকে আজ সরকারি ভাবে প্রাক-ম্যাচ সাংবাদিক সম্মেলনে পাঠিয়েছিলেন কোভারম্যান্স। তাঁরা আর কী হেডিং হওয়ার মতো ‘কোটস’ দেবেন? প্রথমে ঠিক ছিল সুনীল ছেত্রী আর সুব্রত পাল মিডিয়ার সামনে আসবেন। কিন্তু কোচের নির্দেশে দলের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, লেনি আর ফ্রান্সিসের মতো জুনিয়রদের নাম। কোভারম্যান্স অবশ্য মাঠে তাঁর আগের দুটো ম্যাচের প্রথম একাদশ বদলাবেন বলে মনে হচ্ছে না। সে নেপাল যতই শক্তিহীন হোক। একমাত্র চোট পাওয়া নির্মল ছেত্রীর জায়গায় আসতে পারেন ডেঞ্জিল ফ্র্যাঙ্কো। কোচ অবশ্য বললেন, “কাল সকাল পর্যন্ত দেখে সিদ্ধান্ত নেব।”
নেপাল মাঠে নামার আগেই মরমে মরে আছে। পাঁচ গোল খাওয়ার একদিন বাদেই কৃষ্ণ ছেত্রীর দলকে নামতে হচ্ছে ফেভারিট ভারতের বিরুদ্ধে। “ভারত এই টুর্নামেন্টের সবথেকে তৈরি দল। কাঠমান্ডুতে যে দলকে দেখেছিলাম তার চেয়ে এই টিমটা অনেক ভাল।” বলার পর নেপাল কোচের সংযোজন, “কাল আমরা এক পয়েন্ট পেলেই খুশি।” কৃষ্ণের ‘ইচ্ছে পূরণ’ হওয়ার সম্ভবনা অবশ্য দেখা যাচ্ছে না!




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.