টোলগে আজ চললেন ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে
নাটকের শেষ দৃশ্যের জন্য
তিন মাস ধরে চলা টোলগে-সমস্যার জট খুলতে চলেছে এক ঐতিহাসিক চিঠিতে। যে চিঠির প্রেরক মোহনবাগান। প্রাপক ইস্টবেঙ্গল। যার বয়ানে কোথাও লাল-হলুদের কাছে টোলগেকে নিজেদের দলে নেওয়ার জন্য সবুজ-মেরুনের আবেদন নেই। কিন্তু দুই প্রধানকে পাশাপাশি এসে মহাবিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন মোহনবাগান সচিব অঞ্জন মিত্র। যা ইস্টবেঙ্গলের কোনও কোনও কর্তার মতে টোলগেকে চেয়ে আবেদন করারই সামিল। সেই সঙ্গে অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকারের থেকেও ইস্টবেঙ্গল আদায় করে নিতে চলেছে তাদের প্রাপ্য সম্মান। মোহনবাগানে খেলতে গেলে টোলগেকে সশরীরে ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে ঢুকতেই হবে। ক্ষমা চাওয়ার জন্য।
টোলগের টোকেন ফেরত দেওয়ার জন্য ইস্টবেঙ্গল দু’টি শর্ত রেখেছিল যে ক্লাব টোলগেকে নিতে চায় তাকে আবেদন করতে হবে এবং টোলগেকে ইস্টবেঙ্গলের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। ময়দানের ইতিহাসে এর আগে দুই প্রধানের কেউই একে অন্যের কাছে ফুটবলার চেয়ে আবেদন করেননি। এ দিন মোহন-সচিবের চিঠির বয়ানেও কোথাও উল্লেখ ছিল না, ‘টোলগেকে আমরা চাই’। অঞ্জনের চিঠির বক্তব্য ছিল, মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল দুই ক্লাবই ঐতিহ্যপূর্ণ। চিরকালই এই দুই ক্লাব ফুটবলারদের স্বার্থ দেখে এসেছে। এ ক্ষেত্রেও তাদের উচিত মানসিক কষ্টে ভুগতে থাকা এক ফুটবলার টোলগের পাশে দাঁড়ানো। দুই ক্লাবই যেন টোলগে যা চাইছেন, তাকে সম্মান জানায়। ইস্টবেঙ্গল থেকে সেই চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করে জবাবও পাঠানো হয়েছে মোহনবাগানে। আইএফএ-কেও তারা চিঠি দিয়ে জানিয়েছে মোহনবাগানের এই চিঠির কথা। ইস্টবেঙ্গলের এক কর্তার কথায়, “মোহনবাগান সরাসরি না বললেও এই চিঠিটা তো আসলে টোলগেকে ওদের নেওয়ার আবেদনই। না হলে শুধু শুধু আমাদের চিঠি দেবে কেন?”

ইস্টবেঙ্গল না টোলগে, কে ভুল করেছে আমি সে প্রশ্নে ঢুকছি না। তবে এটা বলব, কোনও প্লেয়ার ক্লাব বদলের সিদ্ধান্ত নিলে সেটা যেন ভেবে চিন্তে নেয়। ক্লাবগুলোর উদ্দেশ্যেও আমি একটা কথা বলতে চাই। যে প্লেয়ার দল ছাড়তে চাইছে, তার দিকটাও যেন ক্লাবের তরফ থেকে দেখা হয়।

ইস্টবেঙ্গলকে চিঠি দিয়ে মোহনবাগান ঠিক কাজই করেছে। ক্লাবগুলোর উচিত ফুটবলারদের স্বার্থ দেখা। ফুটবলাররা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। ভবিষ্যতে প্লেয়ার-ক্লাবের চুক্তি হওয়ার সময় একটা ব্যাপার পরিষ্কার করে নিতে হবে। কবে দু’পক্ষের চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে।

চিঠিতে সাড়া দিয়েও ইস্টবেঙ্গল টোলগের ব্যাপারে আগের অবস্থানেই রইল। ক্লাব সচিব কল্যাণ মজুমদার বললেন, “টোলগেকে আমাদের ক্লাবে এসে ক্ষমা চাইতে হবে। মিটমাট করে নিতে হবে।” ‘মিটমাট’-এর অঙ্গ হিসেবে থাকবে টোলগে যেমন ক্ষমা চাইবেন ইস্টবেঙ্গলের কাছে, তেমনই লাল-হলুদ থেকে টোলগে তাঁর টোকেন হাতে পাবেন। ক্ষমা চাওয়ার জন্য অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকারকে কোনও সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি ইস্টবেঙ্গলের তরফে। তবে এ মরসুমে অন্য ক্লাবে সই করার শেষ দিন যেহেতু ৩১ অগস্ট, তাই যা করার টোলগেকে দ্রুতই করতে হবে। আগামী চার দিনের মধ্যে। কল্যাণবাবু জানাচ্ছেন, মঙ্গলবার আইএফএ এই ব্যাপারে তাদের সিদ্ধান্ত জানাতে পারে। মোহনবাগানের অর্থ সচিব দেবাশিস দত্ত অবশ্য জানাচ্ছেন, টোলগে ইস্টবেঙ্গলে গিয়ে মিটমাট করে এলে তাঁদের কোনও আপত্তি নেই। তবে ইস্টবেঙ্গলের এই শর্তের ব্যাপারে আইএফএ-কে পাঠানো চিঠির কথা আগে পেরেন্ট বডি মোহনবাগানকে জানাক। দেবাশিসবাবুর কথায়, “দরকার পড়লে আমি নিজে টোলগের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে যাব। কোনও অসুবিধা নেই। তবে আইএফএ-র থেকে চিঠি পেলে তার পরেই এ সব হবে।”
আইএফএ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায় সোমবার বললেন, “ইস্টবেঙ্গল থেকে এখনও চিঠি পাইনি। মঙ্গলবার সকালে হয়তো পাব। তার পরেই এই বিষয়ে মন্তব্য করতে পারব।” তবে টোলগের সই হয়ে গেলেই যে মোহনবাগান নতুন মরসুম শুরু করে দিয়ে কলকাতা প্রিমিয়ার লিগে নেমে পড়বে তা এখনই জানাচ্ছেন না অন্যতম শীর্ষ কর্তা দেবাশিসবাবু। তিনি বললেন, “কলকাতা লিগে আমরা এখনও খেলিনি জাতীয় শিবিরে আমাদের অনেক ফুটবলার থাকার জন্য। মঙ্গলবার আমাদের এ নিয়ে মিটিংয়ে ঠিক হবে পরের ম্যাচে আমরা খেলব কি না।”
তবে সোমবার বিকেলে তাঁবুতে হাজির সবুজ-মেরুন সমর্থকদের সেই মিটিং নিয়ে খুব বেশি আগ্রহী দেখাল না। বরং তাঁরা আশায়, খুব শীঘ্রই টোলগে খেলতে নামবেন সবুজ-মেরুন জার্সিতে। অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকার জ্বরে একেবারে কাবু না থাকলে মঙ্গলবারই যবনিকা পড়তে চলেছে টোলগে-নাটকে।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.