|
|
|
|
উদ্যোগী প্রশাসন, মহিলাদের স্বনির্ভরতায় অর্থসাহায্য |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
মহিলাদের স্বনির্ভর করতে ‘মহিলা সমৃদ্ধি যোজনা’ শুরু হয়েছিল অনেক আগেই। এ বার নতুন দল তৈরির পাশাপাশি এই প্রকল্পে তাঁদের অর্থ সাহায্যেও উদ্যোগী হল প্রশাসন। গড়বেতা ২ ব্লকের ১৮টি স্ব-সহায়ক দলকে আগামী বুধবার অর্থ সাহায্য করা হবে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। ওই দিন ব্লকের আরও ৪৫টি স্ব-সহায়ক দলকেও কেন্দ্রীয় সরকারের বিশেষ অর্থ প্রকল্পে সাহায্য করা হবে। তফসিলি জাতি-উপজাতি বিত্ত নিগমের পক্ষ থেকে ব্লক অফিসে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রত্যেক দলের হাতে চেক তুলে দেওয়া হবে বলে নিগমের ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার রাহুল নাথ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “হাতের কাজ শিখে, প্রাণিপালন করে বা ক্ষুদ্রশিল্পের মাধ্যমে গরিব তফসিলি মহিলাদের স্বনির্ভর করার লক্ষ্যেই এই আর্থিক সাহায্য করা হচ্ছে।”
মহিলা সমৃদ্ধি যোজনা প্রকল্পে তফসিলি জাতির মহিলাদের ঋণ দেওয়া হয়। ঋণ শোধ করার ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ ছাড়ও দেওয়া হয়। এই টাকায় তাঁরা গরু, মুরগি বা শুয়োর চাষ করতে পারেন। আবার শালপাতার থালা তৈরি বা জরির কাজও করেন অনেকে। নিগমের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই প্রকল্পে আগে ১২টি দলকে টাকা দেওয়া হয়েছে। আরও নতুন ৬টি দলকে অর্থ সাহায্যের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ১৮টি দলকে মোট ৩৭ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা দেওয়া হবে বলে নিগমের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এ দিন এসসিএ (স্পেশাল সেন্ট্রাল অ্যাসিস্ট্যান্স) টু টিএসপি (ট্রাইবাল সাব প্ল্যান) প্রকল্পেও বেশ কয়েকটি দলকে অর্থ সাহায্য করা হবে বলে জানানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও আগে ১৩টি দলের ১২৯ জনকে প্রথম কিস্তির ৬ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল। দ্বিতীয় কিস্তির বাকি ৬ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে সম্প্রতি। তার সঙ্গে নতুন ৪৫টি দলের ৪৪৪ জন সদস্যকে প্রথম কিস্তির ২২ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। এই টাকা সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে পারলে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দেওয়া হবে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এটা ঋণ নয়। তাই ফেরত দেওয়ার ব্যাপারও নেই। তবে এই প্রকল্পে কেবলমাত্র তফসিলি উপজাতিদের সাহায্য করা হয়। তারই সঙ্গে দেখা হয়, প্রথম কিস্তির টাকা ব্যয়ে কোনও গাফিলতি রয়েছে কিনা। খরচের হিসাব ঠিকঠাক না দেখাতে পারলে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দেওয়া হয় না। এই প্রকল্পেও উপজাতি সম্প্রদায়ের মহিলারা প্রাণিপালন থেকে নানারকম হাতের কাজ করে টাকাটা ব্যবহার করতে পারেন। কেউ গাভী পালন করে দুধ উৎপাদন, কেউ মুরগি পালন করে মাংস বা ডিম উৎপাদন, কেউ মাছ চাষ নানা ভাবে উপার্জন করতে পারেন। সেই কাজের জন্যও প্রাথমিক ভাবে যে টাকার প্রয়োজন তা দিয়েই সাহায্য করে সরকার। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, একবার কেউ উপার্জন করতে শুরু করলে তাঁর আয়ের অর্থেই ব্যবসা বাড়ানোর সুযোগ পাবেন। এমনকী কাজের পরিধি আরও বাড়াতে চাইলে আরো নানা প্রকল্প থেকে ঋণ নিতেও পারবেন। সেই ঋণেও ছাড় পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। প্রশাসনিক কর্তাদের মতে, ওই পর্যায়ে পৌঁছতে একজনের যে প্রাথমিক পুঁজির দরকার উপজাতিদের সম্প্রদায়ের মহিলাদের তা দিয়ে সাহায্য করার জন্যই কেন্দ্রীয় সরকার এই বিশেষ আর্থিক সহায়তা দেয়। সম্প্রতি গড়বেতা-২ ব্লকের মহিলাদেরও এ ভাবে সাহায্য করা হবে। ধীরে ধীরে জেলার বেশিরভাগ উপজাতিভুক্ত মহিলাদেরই যাতে এ ভাবে সাহায্য করা যায় তার জন্যও পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। |
|
|
|
|
|