নিজস্ব সংবাদদাতা • চন্দ্রকোনা |
রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হল এক তৃণমূল কর্মীর। মৃত রতন ওরফে হাবল পাখিরা (৩৫) রবিবার রাত থেকে নিখোঁজ ছিলেন। তাঁর বাড়ি চন্দ্রকোনা থানার রামপুরে। সোমবার সকালে রামপুর সংলগ্ন পলাশচাবড়ি গ্রামে পাকা সেতুর নীচে তাঁর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় মানুষজন। পুলিশ এসে দেহটি উদ্ধার করে। রবিবার রাতে রামপুরেরই বাসিন্দা তৃণমূল কর্মী আনন্দ মণ্ডলের মোটর বাইকে চেপে রতন বেরিয়েছিলেন বলে জানান মৃতের দাদা বাবলু পাখিরা। ভাই খুনও করা হতে পারে বলে লিখিত ভাবে চন্দ্রকোনা থানায় জানিয়েছেন তিনি। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী বলেন, “লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে একটি অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা শুরু করা হয়েছে।”
এ দিন সকালে আনন্দ বাড়িতেই ছিলেন। ফলে উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশ এসে যথাযথ তদন্তের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি ক্রমে স্বাভাবিক হয়। পুলিশ জানিয়েছে, আনন্দ জেরায় জানিয়েছেন, রবিবার রাতে মোটর বাইক দুর্ঘটনায় ঘটে। আনন্দ বর্তমানে পুলিশি নজরদারিতে চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি। পুলিশ সূত্রের খবর, মৃতের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মৃতের দাদা বাবলু বাবু বলেন, “আমার ভাই পেশায় বাসকর্মী। বরাবর তৃণমূলের সমর্থক। রবিবার রাতে আনন্দ ভাইকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। আমাদের সন্দেহ, ভাইকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে। তদন্ত করলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।’’ তৃণমূলের স্থানীয় অঞ্চল সভাপতি পরিতোষ কোলের বক্তব্য,“জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।’’
ঘটনার পরই শোকস্তব্ধ পাখিরা পরিবার। রতনের স্ত্রী কনক ঘনঘন জ্ঞান হারাচ্ছেন। রতনের এক ছেলে ও এক মেয়েও ক্রমাগত কেঁদে চলেছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, রবিবার বিকেলে পলাশচাবড়ি গ্রামে তৃণমূলের একটি স্মরণসভা ছিল। ২০০০ সালে ওই গ্রামে তিন তৃণমূল কর্মী খুন হয়েছিলেন। সেই থেকে প্রতি বছরই এই সভা হয়। রবিবারের সভায় হাজির ছিলেন দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়, মৃগেন মাইতি, নির্মল ঘোষ, শ্রীকান্ত মাহাতো প্রমুখ। দলীয় সূত্রের খবর, ওই সভার আগে সকালে আরও একটি করে তৃণমূলের একটি গোষ্ঠী। মূলত গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের জেরেই দু’টি স্মরণসভা হয়। প্রথম সভাটিতে ছিলেন আনন্দ। কিন্তু তাতে রতন ছিলেন না। রতন ছিলেন বিকেলের দ্বিতীয় সভাটিতে। এই সংক্রান্ত দ্বন্দ্বের জেরেও কিছু ঘটে থাকতে পারে বলে অনেকের আশঙ্কা। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি অমিতাভ কুশারী বলেন, “আমাদের কানেও নানা কথা আসছে। পুলিশকে বলা হয়েছে নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করতে।’’ |