এ রাজ্যে দ্বিতীয় প্রকল্প নিয়ে একটি শব্দও খরচ করলেন না উইপ্রো কর্তা আজিম প্রেমজি। তবে তিনি জানিয়ে দিলেন বর্তমান ক্যাম্পাস সম্প্রসারণ করা হবে। উঁচু বাড়ি তৈরি করে আসন সংখ্যা বাড়ানো হবে। আগামী তিন বছরে কর্মী সংখ্যাও প্রায় দ্বিগুণ করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি।
বিশেষ আর্থিক অঞ্চল বা সেজ বিতর্কে এখনও আটকে ইনফোসিস প্রকল্প। একই সমস্যার জেরে থমকে ৫০ একর জমি জুড়ে উইপ্রোর প্রস্তাবিত দ্বিতীয় ক্যাম্পাস। সোমবার কলকাতায় এসে এই বিতর্কের মধ্যে ঢুকলেন না প্রেমজি। সকালে বণিকসভা সি আই আই-এর একটি অনুষ্ঠান শেষে রাজারহাটের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়। এই প্রশ্ন এড়িয়ে তাঁর জবাব, “আমরা বর্তমান ক্যাম্পাস সম্প্রসারণ করব।”
২০০৪ সালে সল্টলেক সেক্টর ফাইভে বিশেষ আর্থিক অঞ্চল তৈরির সবুজ সঙ্কেত পায় উইপ্রো। ২০০৪ সালেই ১৭ একর জমিতে চালু হয়ে যায় প্রকল্প। তার মধ্যে ১৩.৫ একর সেজ-এর আওতায়। যা দেশের প্রথম তথ্যপ্রযুক্তি সেজ। আপাতত এই প্রকল্পে কর্মী সংখ্যা প্রায় ৭ হাজার। সি আই আই-এর দাবি, তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে প্রেমজি জানিয়েছেন এই সংখ্যা দ্বিগুণ করা হবে।
দীর্ঘ টানাপোড়েনের পরে উইপ্রোর দ্বিতীয় ক্যামপাস গড়ে তোলার জমি বরাদ্দ করতে পেরেছিল বিগত সরকার। ২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাসের গোড়ায় রাজারহাটে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস তৈরির জন্য জমি দেখে গিয়েছিলেন উইপ্রোর কর্ণধার আজিম প্রেমজি। তখনই তিনি জানিয়েছিলেন ১৮ মাসের মধ্যে প্রকল্প তৈরির কাজ শুরু হবে। এর পরে ২০১০ সালে বছরের প্রথম দিনেই জমির দাম বাবদ প্রথম কিস্তির চেক জমা দেয় উইপ্রো। চেকের অঙ্ক ১৮ কোটি ৯০ লক্ষ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা। |
বর্তমান সরকারের সেজ নীতি ইনফোসিস ও উইপ্রোর প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। বিশেষ আর্থিক অঞ্চলের তকমা ছাড়া প্রতিযোগিতার বাজারে লাভের পরিমাণ টিঁকিয়ে রাখা সম্ভব নয় বলে তাদের দাবি। এ কথা জানাতে দ্বিধা করেনি ইনফোসিস। উইপ্রো অবশ্য এ বিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলেনি। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর সেজ-এর অনুমোদন ছাড়া প্রকল্প তৈরি করতে নারাজ উইপ্রোও।
গত ডিসেম্বর মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রেমজি। বৈঠক শেষে তিনি মুখ খোলেননি। তবে সেই বৈঠকে উপস্থিত অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র জানিয়েছিলেন প্রায় ৮০০ কোটি টাকা লগ্নি ও ১৫ হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা উইপ্রোর চেয়ারম্যান আজিম প্রেমজি। নয়া ক্যাম্পাস তৈরির পাশাপাশি ই-গভর্ন্যান্স সংক্রান্ত কাজে রাজ্য সরকারের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতেও আগ্রহী উইপ্রো।
এ দিন প্রেমজি সংস্থার অভ্যন্তরীণ বৈঠকে যোগ দেন। পূর্বাঞ্চলে সংস্থার প্রধান গ্রাহকরাও এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে প্রেমজি জানান, আন্তর্জাতিক মন্দার মুখেও ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প ভাল ব্যবসা করবে বলে তিনি আশা করেন। |