তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের ছাই নিয়ে এসে ফেলা হচ্ছে ধানখেত সংলগ্ন এলাকায়। যে পদ্ধতিতে সেখানে ছাই ফেলা হচ্ছে তাতে ভবিষ্যতে বেশ কিছু চাষযোগ্য জমি পতিত হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা দুবরাজপুরের বরুল ও আশপাশের গ্রামের বাসিন্দাদের। এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, যে জায়গায় ওই ছাই পড়ছে তার নীচে কয়েকজন বর্গাদার ও পাট্টাদারের জমি চাপা পড়ে গিয়েছে। এ ব্যাপারে তাপবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে ফল না পাওয়ায় দুবরাজপুরের বিডিওকে একটি গণসাক্ষরিত অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা।
বরুল গ্রামটি পারুলিয়া পঞ্চায়েতের অধীন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত দেড়-দু’মাস ধরে বরুল গ্রামের একদিকে ধান জমি ঘেঁষে বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাইপুকুর থেকে ছাই এনে ফেলছেন ধনঞ্জয় সাহা মণ্ডল নামে এক ঠিকাদার। বরুল ও পাশাপাশি থাকা কালোসোনা এবং কুলবনী গ্রামের বাসিন্দাদের কথায়, মূলত খাসজমির উপর ছাই এনে জমা করলেও ওই জমিতে পাট্টা পেয়েছেন এমন কিছু পাট্টাদার ও বর্গাদার আছেন। যাঁদের কাছ থেকে কোনও অনুমতি নেননি ওই ঠিকাদার।
তাঁদের আশঙ্কা, শুধু তাই নয়, যে ভাবে চারিদিকে দায় সারা ভাবে মাটির বাঁধ দিয়ে ছাই এনে জমা করা হচ্ছে, তাতে ইতিমধ্যেই বৃষ্টির জলে বিভিন্ন জায়গায় গলে গিয়ে ছাই ধান জমিতে গিয়ে জমছে। ভবিষ্যতেও জমবে। ফলে ওই জমিতে আর চাষ করা যাবে না। |
স্থানীয় হৃদয় মান্না, তারা মুর্মু, লখিরাম টুডু, বুধন দলুইদের ক্ষোভ, “যে অন্যায় আমাদের সঙ্গে হচ্ছে সেটার তো সমাধান হচ্ছেই না। উল্টে প্রতিবাদ করতে গিয়ে ওই ঠিকাদারের লোকজনের কাছে হেনস্থা হতে হচ্ছে। এর একটা বিহিত করুক প্রশাসন।” যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ঠিকাদার ধনঞ্জয়বাবু। তাঁর পাল্টা দাবি, “যে জমিতে ছাই ফেলা হচ্ছে, প্রথমত সেটা চাষযোগ্য জমি নয়। দ্বিতীয়ত--চারিদিকে মাটির বাঁধ দিয়ে সতর্কতার সঙ্গে ছাই ফেলা হচ্ছে। যাতে ছাই ফসলের জমিতে না যায়। আসলে ওখানকার কিছু লোক আমার কাছে টাকা পয়সা চেয়েছিল সেটা না দেওয়াতেই সমস্যা।” আর কিছু পাট্টাদার ও বর্গাদারের কাছ থেকে কোনও অনুমতি না নেওয়া প্রসঙ্গে ওই ঠিকাদার বলেন, “প্রায় সবার কাছ থেকেই অনুমতি নেওয়া হয়েছে। দু’একজন বাকি থাকলে সেটা দেখব।” এই প্রসঙ্গে অবশ্য বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। আর দুবরাজপুরের বিডিও গোবিন্দ দত্ত বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |