জমজমাট হাটবারের দুপুরে পুলিশ ক্যাম্প থেকে ২০০ মিটারের মধ্যে দেশি মদের দোকানে ঢুকে ‘ক্যাশিয়ার’কে গুলি করে পালাল ৩ দুষ্কৃতী। রবিবার মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের তুলসিহাটা এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, দুষ্কৃতীরা খুব কাছ থেকে ওই ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে বুকের ডানদিকে গুলি করে। গুলিটি বুক ফুঁড়ে পিঠের দিক দিয়ে বার হয়ে গিয়েছে। গুলিবিদ্ধ ক্যাশিয়ারের নাম তপেশ্বর পাল। তাঁর বাড়ি কুশিদা এলাকায়। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ৪ বছর তিনি ওই দোকানে কাজ করছেন। দোকানের আরও এক কর্মী গনেশ রাম ও দোকানের মালিক উজ্জ্বল গুপ্ত ঘটনার কিছুক্ষণ আগেই দুপুরের খাবার খেতে বাড়ি চলে যান। ব্যক্তিগত আক্রোশের জেরে দোকান মালিককে খুন করতে এসে ভুল করে ক্যাশিয়ারকে গুলি করা হয়েছে কী না তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পাশাপাশি, টাকা লুঠ করার উদ্দেশ্য এসে বাধা পেয়ে ক্যাশিয়ারকে গুলি করার বিষয়টিও পুলিশ উড়িয়ে দিচ্ছে না। |
মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “দুষ্কৃতীরা দোকানে ঢুকে ওই ব্যক্তিকে গুলি করেছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, দুষ্কৃতীরা বিহারের। দোকানে অনেক টাকা থাকলেও তা লুঠ হয়নি। ব্যক্তিগত আক্রোশের জেরেই ঘটনাটি ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।” ওই মদের দোকানের মালিক উজ্জ্বল গুপ্ত বলেন, “কারও সঙ্গে আমার শত্রুতা নেই। দোকানে চড়াও হয়ে তপেশ্বরবাবুকে কেন গুলি করা হল বুঝতে পারছি না। উনি তো গোলমালের কথা কোনওদিন বলেননি।” রবিবার ছিল তুলসিহাটায় সাপ্তাহিক হাটবার। তুলসিহাটা-হরিশ্চন্দ্রপুর রাজ্য সড়কের পাশে ওই মদের দোকানটি রয়েছে। হাটে বহু ক্রেতা-বিক্রেতা ছিলেন। অনেকে মদের দোকানে বসেও মদ খাচ্ছিলেন। আচমকা ঘটনার জেরে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাইকে ৩ দুষ্কৃতী আসে। দুই জন দোকানে ঢুকে পড়ে। একজন মোটর সাইকেল নিয়ে বাইরেই দাঁড়িয়ে ছিল। দোকানে অনেকেই বসে মদ খাচ্ছিলেন। ভিতরে ঢুকেই দুই দুষ্কৃতী প্রথমেই শূন্যে গুলি চালিয়ে সবাইকে মুখ বুঁজে বসে থাকতে হুমকি দেয়। তার পরেই তারা ক্যাশিয়ারের দিকে এগিয়ে যায়। ক্যাশিয়ারের সঙ্গে কোনও বিষয় নিয়ে কথাকাটাকাটি হয়। তার মাঝেই আচমকাই তাঁর বুকে গুলি করে দোকানের দরজার শেকল বাইরে থেকে আটকে তারা পালায়। তার আগেই বাইক নিয়ে থাকা দুষ্কৃতী পালায়। ভরা হাটের মধ্যে দিয়ে দুই জনকে দৌঁড়ে পালাতে দেখে মদ্যপদের মধ্যে গোলমাল ভেবে প্রথমে কেউই গুরুত্ব দেননি। পরে দোকানের ভিতরের অংশ থেকে পাঁচিল দিয়ে বাইরে এসে বিষয়টি জানান। এতেই হাটের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। লোকজন দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দেন। লাগোয়া পুলিশ ক্যাম্প থেকে পুলিশ কর্মীরা এসে হাট এবং লাগোয়া এলাকায় খোঁজাখুজি করলেও দুষ্কৃতীদের হদিশ মেলেনি। তুলসিহাটা গ্রাম উন্নয়ন কমিটির সম্পাদক শশীদেব পান্ডে বলেছেন, “হাটে হাজার হাজার মানুষ যান। পাশেই পুলিশ ক্যম্প। তার পর ভরদুপুরে যা ঘটনা ঘটল তাতে আমরা পুরোপুরি আতঙ্কিত।” |