সম্প্রতি রেলযাত্রীদের সুরক্ষা ও স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে বেশ কয়েকটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু রেলযাত্রীদের সুরক্ষা বা স্বাচ্ছন্দ্যের কোনও ব্যবস্থাই চোখে পড়ছে না। সম্প্রতি (১৫-৬) তারিখে তিস্তা-তোর্ষা এক্সপ্রেসে জলপাইগুড়ি যাওয়ার সময় যে অভিজ্ঞতা লাভ করেছি, তাতে ‘যাত্রী সুরক্ষা’ ও স্বাচ্ছন্দ্যের বিশেষ কোনও কাজ দেখা গেল না। শিয়ালদহ থেকে বেলা ১-৪০ মিনিটে গাড়ি ছাড়ার পর থেকে ১৭ ঘণ্টা পরে জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনে অবতরণের সময় পর্যন্ত কোচের মধ্যে যেন ডাকাত না-পড়ে সে জন্য আমরা সব যাত্রীই ভগবানকে ডেকেছি। ।
জলপাইগুড়ি যাত্রার দিন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এ/১ কোচের চারটি দরজাই সব সময় খোলা ছিল। আমি চার বার উঠে দরজা বন্ধ করেছি। আবার কিছুক্ষণ পরেই কে বা কারা দরজাগুলি খুলে দেয় আর সেই সঙ্গে কতিপয় যাত্রী কামরায় ওঠে। কোচের কনডাক্টর-গার্ডের দেখা নেই। কে এই সব যাত্রীর টিকিট পরীক্ষা করবে? তা ছাড়া, শিয়ালদহ থেকে বেলা ১-৪০ মিনিটে ট্রেনটি ছাড়ার পর থেকে রাত্রি ১০-৩০ মিনিটে মালদহ পৌঁছাবার পরেই ট্রেনে আমাদের কোচ থেকে এক দল হকার নামল। সারাক্ষণ ওই হকাররাই নানান রকমের মালপত্র ও চা-কফি বিক্রি করছিল। এত মানুষের ভিড়ে খুবই অসুস্থ বোধ করছিলাম।
আমাদের কোচটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নই ছিল। কিন্তু বিনা টিকিটের যাত্রী, হকার এবং বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রীরা রেলের ওভার ব্রিজ দিয়ে প্ল্যাটফর্ম বদল না-করে কোচের খোলা দরজা দিয়েই যাতায়াত করতে থাকে। এই সুযোগে ডাকাত বা ছিনতাইকারীরা কোচে ঢুকে সহজেই ডাকাতি করে যাত্রীদের সর্বনাশ করতে পারত। কোচে কোনও রেলের কর্মচারী বা টিকিট পরীক্ষক ছিলেন না। ছিল না পুলিশও। রেলের টিকিট পরীক্ষক নৈহাটিতেই নেমে গিয়েছেন। আর সারা রাত্রির মধ্যে রেলের কোনও কর্মচারীর দেখা পাওয়া যায়নি। |
তিস্তা-তোর্ষা ট্রেনটি জলপাইগুড়ি যাওয়ার একমাত্র ট্রেন, যার টিকিট সহজেই পাওয়া যায়। হাওড়া থেকে অসমগামী দুটি ট্রেন ছাড়ে । সেগুলির টিকিট আদৌ সহজলভ্য নয়। আর একটি ট্রেন কলকাতা স্টেশন থেকে সকাল ৯টায় ছেড়ে ১৭/১৮ ঘণ্টা পরে জলপাইগুড়ি স্টেশনে পৌঁছয় বটে, তবে এই ট্রেনে ১৭/১৮ ঘণ্টাই বসে যেতে হয়। আমার বয়স ৭৫। অতটা সময় বসে যাওয়া সম্ভব নয়। সে জন্যই তিস্তা-তোর্ষায় যাত্রা করেছিলাম।
জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনে তিস্তা- তোর্ষা ট্রেনটি মাত্র ১০/১২ সেকেন্ড দাঁড়ায়। ফলে ওই অল্প সময়ের মধ্যে যাত্রীদের নামা-ওঠা খুবই বিপজ্জনক। আমাকে প্রায় ঠেলেই কামরা থেকে নামিয়ে দিল। অপর যাত্রীদের কেউ কেউ নামতেই পারেননি। তাঁরা আরও দূরবর্তী স্থানে নেমে পুনরায় এখানে আসতে বাধ্য হবেন। কলকাতায় ফেরার সময় ওই তিস্তা-তোর্ষা ট্রেনেই ফিরেছিলাম ২৫/৬ তারিখে। কিন্তু সেখানে দেখলাম, এক দল দার্জিলিং ফেরত যাত্রী। তার মধ্যে ৮/১০ জন বিনা টিকিটের যাত্রীও ছিল। তাদের দৌরাত্ম্যে সিটে বসাও অসম্ভব হয়ে পড়ে। কোনও রকমে মানসম্মান বাঁচিয়ে শিয়ালদহ স্টেশনে এসে পৌঁছই। এই হল ‘যাত্রী সুরক্ষা’র নমুনা! এই অবস্থার দ্রুত প্রতিকার আবশ্যক। নতুবা যে কোনও দুর্ঘটনায় যাত্রীদের মৃত্যুও ঘটতে পারে।
নিভা মজুমদার চৌধুরী।
কলকাতা-৯২
|
টিউবওয়েলের মুখ সরু করতে হবে |
জলই জীবন। এখন সকলের হাতে বোতল। একজন ছাত্র বা ছাত্রী স্কুলে থাকাকালীন টিউবওয়েল থেকে তিন থেকে পাঁচ বার জল বোতলে ভরে। এবং বোতলে জল ভরতে গিয়ে নষ্ট হয় কয়েক বোতল জল। প্রতিদিন এ ভাবে লক্ষ লক্ষ কোটি বোতলে জল ভরতে গিয়ে নষ্ট হয় বহু বোতল জল। এ-ছাড়া টিউবওয়েলের জলে ছাত্রছাত্রীদের একাধিক বার হাত-পা-মুখ ধোওয়ার প্রয়োজনে কয়েক গুণ বেশি জল অপচয় হচ্ছে।
সোনারপুরে ‘আমরা ক’জন’ ক্লাবের সামনে টিউবওয়েলে একটা ফানেল লাগানো আছে, যাতে বোতল ভরার সময় জল বাইরে না-পড়ে। এক জায়গায় দেখলাম লেখা, টিউবওয়েলের জলে বোতল ভরা নিষেধ।
ছোটবেলায় টিউবওয়েলের যেমন আকার দেখেছি এখনও তেমনই আছে। আয়লার পর যে সব হাই প্ল্যাটফর্মে টিউবওয়েল বসানো হয়েছে তার মডেল কিছুটা ভিন্ন হলেও নতুন প্রযুক্তি নেই। হ্যান্ডেল উঁচু হয়ে থাকে। শব্দ কয়েক গুণ বেশি। সাধারণ টিউবওয়েলের মুখ দুই ইঞ্চি চওড়া, হাই প্ল্যাটফর্মের মুখ এক ইঞ্চি চওড়া। টিউবওয়েলের মুখ এমন ভাবে সরু করা হোক যাতে জল কোনও ভাবে ছড়িয়ে না-পড়ে। যেন কলসি ভরতে জল নষ্ট না-হয়।
প্রভুদান হালদার। শিক্ষক, রানিগড় জ্যোতিষপুর হাইস্কুল, বাসন্তী, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা |