উদ্বিগ্ন গগৈ, আজ যাচ্ছে সর্বদল
নামনি অসমে অব্যাহত হিংসা, ফের দেহ উদ্ধার
থামছে না হিংসা নামনি অসমে।
গত কাল সন্ধ্যায় বিজনির চৌধুরীপাড়ায় পাঁচ ব্যক্তি নিহত হওয়ার পরে আজ ভোররাতে কোকরাঝাড় জেলার শালাকাটি স্টেশনের কাছে আক্রান্ত হয় আরও একটি পরিবার। হামলায় জখম হন এক মহিলা ও একটি শিশুকন্যা-সহ চার জন। এ ছাড়া ধুবুরির বগিবাড়ি থানার সুখনজোড়া গ্রামে এক নিখোঁজ ব্যক্তির ক্ষতবিক্ষত দেহ মিলেছে। ধেমাজি জেলার দুই ব্যক্তির মৃতদেহও পাওয়া গিয়েছে নলবাড়িতে।
অসমে জুলাইয়ে শুরু হওয়া গোষ্ঠী সংঘর্ষের জেরে নিহতের সরকারি হিসেব ৯০ ছুঁতে চলেছে। চিরাং ও কোকরাঝাড়ে ফের কার্ফু জারি করা হয়েছে। প্রতি বার পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার মুখেই নতুন করে অশান্তি মাথাচাড়া দেওয়ায় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ বলেছেন, প্রয়োজনে পুলিশ গুলি চালাতে বাধ্য হবে। রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বড়োভূমি ও নামনি অসমে জঙ্গি দমনে সেনাবাহিনী অভিযান আরম্ভ করবে। সংঘর্ষ জারি থাকার পিছনে জঙ্গিগোষ্ঠীর মদত রয়েছে বলে প্রকারান্তরে মেনেই নিয়েছে রাজ্য। প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই হিংসার গুজব ছড়ানোর পিছনে পাক ইন্ধন রয়েছে বলে জানতে পেরেছে।
মানুষের মন থেকে আতঙ্ক দূর করতে আগামিকাল সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল বড়োভূমি ও নামনি অসম সফরে যাচ্ছে। আসলে এখনও যে বিক্ষিপ্ত হিংসা চলছে, তাতেই চিন্তিত প্রশাসন। গত কাল সন্ধ্যায় বিজনির আমগুড়ি বাজারের কাছে দু’টি গাড়িতে আসা যাত্রীদের ঘিরে ধরে কোপায় দুষ্কৃতীরা। পরে মঙ্গোলির কাছে একটি ঝোপ থেকে পাঁচ জনের দেহ মেলে। এক জন নিখোঁজ। এ দিকে, আজ ভোর চারটে নাগাদ কোকরাঝাড় থেকে ধুবুরি যাওয়ার পথে শালাকাটি স্টেশনের কাছে আক্রান্ত হয় একটি পরিবার। ধারালো অস্ত্রের ঘায়ে গুরুতর জখম হয় এক শিশুকন্যা, তার মা ও অন্য দুই ব্যক্তি। আহতরা হাসপাতালে ভর্তি।
হিংসার জেরে চিরাংয়ে জারি হয়েছে কার্ফু। ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে তাই টহল সেনার।
এনডিএফবি (আলোচনাপন্থী) এই ঘটনার নিন্দা করেছে। সংখ্যালঘু সংগঠনের তরফেও ঘটনার প্রতিবাদে গরইমারি এলাকায় পথ অবরোধ করা হয়। বিকেলে উত্তেজিত জনতা বিজনি থানা ঘেরাও করে। বড়োল্যান্ড টেরিটোরিয়াল কাউন্সিল (বিটিসি) লঙ্ঘন, হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও পুলিশকর্তাদের বদলি দাবি করা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পাঁচ মন্ত্রী চন্দন ব্রহ্ম, পৃথ্বী মাজি, প্রদ্যোৎ বরদলৈ, রকিবুল হুসেন ও হিমন্ত বিশ্বশর্মা চিরাং গিয়েছেন। শরণার্থী শিবির বা গ্রামে থাকা সব মানুষকে নিরাপত্তারক্ষীদের প্রহরা ছাড়া কোথাও বার হতে নিষেধ করে দিয়েছে পুলিশ এবং প্রশাসন।
নলবাড়িতে যে দু’জনের দেহ মিলেছে, তাঁরা বৃহস্পতিবার সিমেন চাপোড়ি থেকে মাজোরবাড়ি ঘাটে যাওয়ার জন্য অটোয় উঠেছিলেন। রাস্তায় তাঁদের জোর করে নামানো হয়। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ চার জনকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনাচক্রে, ওই চার জন আবার কিছু দিন আগেই আতঙ্কের জেরে বেঙ্গালুরুর চাকরি ছেড়ে রাজ্যে ফিরে আসেন। এই ঘটনার পরে ধেমাজিতেও শান্তি কমিটি গড়েছে জেলা প্রশাসন।
এমন পরিস্থিতিতে আবার আলফা সেনাধ্যক্ষ পরেশ বরুয়া কড়া বিবৃতি দিয়েছেন। সেখানে স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেছেন, “ভারতের অন্যত্র অসমিয়াদের উপরে আক্রমণ অবিলম্বে বন্ধ না হলে, অসমে থাকা ভারতীয়দের তার ফল ভোগ করতে হবে।” বেঙ্গালুরু থেকে ফিরে আসা অসমিয়া ও মণিপুরিদের আস্থা ফেরাতে দু’দিনের সফরে ওই দুই রাজ্যে এসেছেন কর্নাটকের উপ-মুখ্যমন্ত্রী আর অশোক এবং ডিজি এল পাচুয়া। গত কাল অসম সফরের পর আজ মণিপুরে গিয়ে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী ওক্রাম ইবোবি সিংহের সঙ্গে দেখা করেন। মণিপুরবাসীকে তাঁরা আশ্বাস দেন, বেঙ্গালুরু-সহ গোটা রাজ্যে কোনও আতঙ্ক বা হিংসা নেই। আগের কাজেই পুনর্বহাল হতে পারবেন কর্মীরা। বেতনও কাটা হবে না।

ছবি: উজ্জ্বল দেব


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.