তৃতীয় বর্ষের (অনার্স) পরীক্ষার ফলে অসংখ্য ভুল রয়েছে অভিযোগ তুলে শনিবার ভাঙচুর চালানো হয়েছে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। এসএফআইয়ের একদল কর্মী-সমর্থক বিশ্ববিদ্যালয়ে চড়াও হন বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মীরা আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীদের উপর লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ উঠেছে।
দুই ছাত্রী-সহ জখম পাঁচ জন মালদহ মেডিক্যালে ভর্তি। দলের কর্মী-সমর্থকদের উপর লাঠিচার্জের প্রতিবাদে এসএফআই সমর্থকেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ গিয়ে অবরোধ তোলে।
লাঠিচার্জের ঘটনা অস্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মাধব অধিকারী বলেন, “একটি ছাত্র সংগঠনের কর্মী-সমর্থকেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা চালিয়েছিল। হামলাকারীদের নিরাপত্তাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকে বের করে দিয়েছে। মারধর করা হয়নি। পরীক্ষার ফলের ব্যাপারে কিছুই জানি না। যা বলার পরীক্ষা নিয়ামক বলবেন।”
স্নাতক স্তরের তৃতীয় বর্ষের ফল প্রকাশ হয় শুক্রবার। মালদহ কলেজে তৃতীয় বর্ষের ২০০ জন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষা দিয়েছিল। মাত্র ২৫ জন পাশ করেছে। এসএফআইয়ের মালদহ কলেজ ইউনিট সম্পাদক সমীরণ মণ্ডলের অভিযোগ, “১৭৫ জন ছাত্রছাত্রীর ফলে নানা অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। ভুলে ভরা ফল দ্রুত সংশোধনের দাবিতে মালদহ কলেজের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারকে না পেয়ে পরীক্ষা নিয়ামকের কাছে অভিযোগ জানাতে যাই। কোনও আধিকারিকের দেখা না পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে শান্তিপূর্ণ ভাবে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলাম। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মীরা লাঠিচার্জ করে। তাতে আমাদের পাঁচজন জখম হয়ে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি।”
এ দিকে, গৌড় মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ প্রাণতোষ সেন বলেন, “ফল নিয়ে বিভ্রাটের জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনা কোনও দিন ঘটেনি। আমার কলেজের ৩২৬ জন পরীক্ষা দিয়েছিলেন। তার মধ্যে ৯৩ জন ছাত্র ফেল করেছে। কিন্তু ফল এসেছে মাত্র ৫৭ জনের। ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও যত্নশীল হওয়া উচিত ছিল।” চাঁচল কলেজের টিচার-ইন-চার্জ গাহুল আমিন জানান, শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে টেলিফোন করে জানানো হয় তৃতীয় বর্ষের অনার্সের ফল প্রকাশ হয়েছে। তিনি বলেন, “শনিবার সকালে গিয়ে ফল নিতে বলা হয়। রাতে ফের ডেপুটি পরীক্ষা নিয়ামক জানান আপনার কলেজের ফল এখন দেওয়া যাবে না। এ দিন কলেজের ফল আনতে গিয়ে দেখি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও আধিকারিক নেই। একজন কর্মচারী বিভিন্ন কলেজের মার্কশিটের প্যাকেট নিয়ে বসে আছেন। ওই কর্মী আমাকে জানান, চাঁচল কলেজের ফলের কোনও প্যাকেট তাঁকে দেওয়া হয়নি। পরে ডেপুটি কন্ট্রোলার মেল পাঠিয়ে আমাকে জানান, পরীক্ষার পদ্ধতিতে কিছু অসঙ্গতি থাকায় চাঁচল কলেজের সমস্ত পরীক্ষার্থীর ফল আটকে গিয়েছে।” পরীক্ষা নিয়ামক সনাতন দাস জানিয়েছেন, মাত্র ৪৪ দিনের মধ্যে স্নাতক স্তরের তৃতীয় বর্ষের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। পাশের হার ৫৮ শতাংশ। এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি কলেজে পরীক্ষার্থী ছিল ৪৭১৮ জন। এর মধ্যে বিভিন্ন পদ্ধতিগত ত্রুটির কারণে একাংশের ফল আটকে রয়েছে। |