ছাত্র সংঘর্ষের জেরে শনিবার উত্তেজনা ছড়াল উত্তর ২৪ পরগনার দু’টি কলেজে। ভর্তিকে কেন্দ্র করে হাসনাবাদের টাকি কলেজে সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্র পরিষদ এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। পুরনো বিবাদ থেকে অশোকনগরের নেতাজি শতবার্ষিকী মহাবিদ্যালয়ে টিএমসিপি-রই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে হাতাহাতি এবং ইট নিয়ে হামলা হয়। দু’টি কলেজে এই সংঘর্ষে জখম হন অন্তত ১৬ জন। দু’টি জায়গাতেই পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
এ দিন প্রথম বর্ষের অনার্সের কাউন্সেলিং ছিল টাকি কলেজে। অনুপস্থিত এক ছাত্রীর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে এক যুবক হাজির হন। তাতে আপত্তি তোলে টিএমসিপি। টিএমসিপি-র আপত্তির প্রতিবাদ জানায় সিপি। দু’পক্ষের বচসা থেকে শুরু হয় হাতাহাতি। দু’পক্ষই ‘বহিরাগত’দের নিয়ে ওই গোলমালে জড়ায় বলে অভিযোগ। ভাঙচুর চালানো হয় ছাত্র সংসদের ঘরে। জখম হন দু’পক্ষের অন্তত ১৫ জন। গোলমালের পরে টিএমসিপি কলেজের সামনে এবং ছাত্র পরিষদ থুবার মোড়ে ঘণ্টা খানেক অবরোধ করে। দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানিয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
সিপি-র নেতা রাজীব বিশ্বাসের অভিযোগ, “প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকায় শিক্ষকেরা রাজি থাকলেও টিএমসিপি-র বাধায় ছাত্রীটি ভর্তি হতে পারেননি। ওরা পুলিশের সামনেই বহিরাগতদের নিয়ে এসে হামলা চালাল। আমাদের ১০ জন আহত হন।” টিএমসিপি নেতা অভিজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, “কলেজের নোটিসে বলা হয়েছিল, কাউন্সেলিংয়ের সময়ে কেউ হাজির না থাকলে তাঁকে ভর্তি নেওয়া যাবে না। আমরা এ জন্য প্রতিবাদ করায় ছাত্র পরিষদের ছেলেরা বহিরাগতদের নিয়ে এসে আমাদের উপর হামলা চালায়। আমাদের ৫ জন আহত হন।”
বৃহস্পতিবার টিএমসিপি সমর্থক দুই ছাত্রীর মধ্যে মারামারি ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছিল অশোকনগরের কলেজটিতে। তার জেরে শুক্রবারেও গোলমাল হয়। শনিবার ফের টিএমসিপি-র দুই গোষ্ঠীর মধ্যে হাতাহাতি ও ইট নিয়ে হামলায় আতঙ্ক ছড়ায় সাধারণ পড়ুয়াদের মধ্যে। অনেকেই কলেজ ছেড়ে চলে যান। ব্যাহত হয় পঠনপাঠন। গোলমালে এক ছাত্র জখম হন। কলেজের ছাত্র সংসদ টিএমসিপি-র দখলে রয়েছে। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছু দিন ধরেই নানা বিষয়কে কেন্দ্র করে ব্লক তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সভাপতি পাপন সরকারের সঙ্গে বিবাদ চলছে কলেজে ওই সংগঠনের নেতা প্রদীপ সিংহের। তার জেরেই এ দিনের গোলমাল। পাপনের অভিযোগ, “প্রদীপের লোকই বহিরাগতদের নিয়ে এসে হামলা করে।” পাপনের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ প্রদীপেরও। অধ্যক্ষ সুধানাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বৃহস্পতিবার থেকে গোলমাল শুরু হয়েছে। আমরা আতঙ্কে রয়েছি।” |