অভিযোগ যখন ‘রাজা’-র বিরুদ্ধে জলঘোলা তো হবেই! আর ‘রাজা’ যুদ্ধে নামতে না চাইলে কী হবে, তিনি পাশে পাচ্ছেন অনুরাগীদের। লান্স আর্মস্ট্রংয়ের থেকে ট্যুর দ্য ফ্রান্সের সব সম্মান কেড়ে নেওয়ার ঘোষণার পর দিন গোটা বিশ্বজুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছে বিতর্ক।
প্রশ্ন উঠছে যে সংস্থা আর্মস্ট্রংয়ের শাস্তি ঘোষণা করেছে, সেই যুক্তরাষ্ট্রের ডোপিং বিরোধী সংস্থা-র (ইউএসএডিএ) ভূমিকা নিয়ে। আদৌ কি এই সংস্থা মার্কিন এই সাইক্লিং চ্যাম্পিয়নকে নির্বাসিত করতে পারে? বিশেষ করে প্রতিযোগিতাটি যখন হয় ইউরোপে। ইউএসএডিএ-র হাতে কী প্রমাণ আছে, তার সঠিক ধারণা নেই কারও। ডোপিংয়ের অভিযোগ, অথচ একটাও রাসায়নিক টেস্টের রিপোর্ট হাতে নেই ওই সংস্থার। আর্মস্ট্রং এর আগেই জানিয়েছেন, গত দু’দশকে ৫০০-র বেশি ডোপ টেস্টের একটাও পজিটিভ নয়। ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’ সংবাদপত্রে এক মার্কিন বিচারক স্যাম স্পার্কসের মন্তব্য, “ইউএসএডিএ-র হাতে যথেষ্ট নথিপত্র না থাকাটা আইনগত দিক থেকে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।” আর এক বিচারকের কথায়, “আর্মস্ট্রংকে দোষী সাব্যস্ত করে ওই সংস্থা কি সত্যিই ডোপিংয়ের বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছে, নাকি ওদের লক্ষ্য ততটা মহান নয়?” আন্তর্জাতিক সাইক্লিং ইউনিয়ন জানিয়েছে, যতক্ষণ না ইউএসএডিএ ‘যুক্তিপুর্ণ সিদ্ধান্ত’ জানাচ্ছে, ততক্ষণ এ নিয়ে কোনও মন্তব্য তারা করবে না।
আর্মস্ট্রং কেন মার্কিন সংস্থার রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন-এ যাচ্ছেন না? নানামহল থেকে এর জবাব আসছে, ‘খেলাধুলার আদালতের প্রতি আনাস্থা।’ কোর্ট অফ আর্ব্রিট্রেশন ফর স্পোর্টস বা (ক্যাস)-এর কাছে আবেদনের পর যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাথলিটরা এ পর্যন্ত নাকি ৬০টির মধ্যে ৫৮টি কেস-ই হেরেছেন। তার সঙ্গে যোগ হচ্ছে ২০১০ ট্যুর দ্য ফ্রান্সের একটি ঘটনাও। সে বছর চ্যাম্পিয়ন স্পেনীয় সাইক্লিস্ট আলবার্তো কোন্তাদোরের রক্তে নামমাত্র ক্লেনবুটেরল স্টেরয়েড পাওয়া যায়। যা সম্পর্কে ‘ক্যাস’-এর মত ছিল, রাসায়নিকটির পরিমাণ এতটাই কম যে তা পারফরম্যান্স বাড়াতে অক্ষম। তার পরও কোন্তাদোরের থেকে প্রথম স্থানটি কেড়ে নেওয়া হয়। চাপিয়ে দেওয়া হয় দু’বছরের নির্বাসন। বাকি সাইক্লিস্টরা এতটাই অবাক হয়েছিলেন যে, রানার্স হওয়া অ্যান্ডি স্লেক চ্যাম্পিয়নের পুরস্কার নিতে রাজি হননি। মনে করা হচ্ছে, এই সব ঘটনাই আর্মস্ট্রংকে প্রভাবিত করেছে আবেদনের রাস্তায় না হাটার জন্য। |