কোনও নির্দেশ দেওয়ার আগে সেই নির্দেশ কার্যকর করা সম্ভব কি না তা বিচারপতিদের ভেবে দেখা উচিত। এই মন্তব্য করেছেন খোদ প্রধান বিচারপতি এস এইচ কপাডিয়া। তাঁর বক্তব্য, দেশ শাসন করা বিচারপতিদের কাজ নয়।
সম্প্রতি বেশ কিছু মামলায় আদালত নিজের গণ্ডি ছাড়াচ্ছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আজ সুপ্রিম কোর্টের কিছু নির্দেশ নিয়ে কিছুটা আত্মসমালোচনার সুরেই কথা বলেছেন প্রধান বিচারপতি। রামলীলা ময়দানে রামদেবের ঘুমন্ত সমর্থকদের উপরে হামলা চালায় দিল্লি পুলিশ। পুলিশের সমালোচনা করার পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট জানায়, ঘুমের অধিকার মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে।
|
এস এইচ কপাডিয়া |
এই নির্দেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রধান বিচারপতি। কপাডিয়ার বক্তব্য, ঘুমের অধিকার মৌলিক অধিকার হিসেবে কার্যকর করা সম্ভব কি না তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। বাস্তবে কোন নির্দেশ কার্যকর করা সম্ভব তা ভেবে দেখতে হবে।
কপাডিয়া সাফ বলেছেন, দেশ শাসন করা বিচারবিভাগের কাজ নয়। কোনও আইন চালু করলে দেখতে হবে যাতে তা শাসনকার্য চালানোর পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সংবিধানের মূল নীতিগুলিকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে হবে আদালতকে। কারণ, সংবিধানেই বিচারবিভাগ, আইনসভা ও প্রশাসনের কাজের স্পষ্ট বিভাজন আছে।
বিভিন্ন মামলার সময়ে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক নিয়েও প্রশ্ন দেখা দেয়। এস আর বোম্মাই মামলার রায়ে বিচারপতি বি পি জীবন রেড্ডি বলেছিলেন, সংবিধান কেন্দ্রের প্রতি বেশি সহানুভূতিশীল। সেই রায়ের উল্লেখ করার পাশাপাশি বিচারপতি রেড্ডিকেও উদ্ধৃত করেছেন কপাডিয়া। রাজ্যগুলির ক্ষমতা কোনও ভাবেই কমানো যাবে না বলে সতর্ক করেছিলেন বিচারপতি রেড্ডি।
কপাডিয়ার মতে, সংবিধানে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক নিয়ে স্পষ্ট নীতি নির্ধারণ করা আছে। উদাহরণ হিসেবে জমির কথা বলেছেন প্রধান বিচারপতি। তাঁর প্রশ্ন, জমির বিষয়টি যদি রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত হয় তা হলে কেন্দ্র কি তাতে মাথা গলাতে পারে। এই প্রশ্নের জবাব সংবিধান মেনেই খুঁজতে হবে বলে মনে করেন তিনি। কর্নাটকে বল্লারি জেলায় বেআইনি খনির কাজকর্মের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট। কপাডিয়ার বক্তব্য, বেকারির সমস্যাও রয়েছে। পরিবেশ নিয়ে সমস্যা ও অর্থনীতির মধ্যে ভারসাম্য রেখে সমস্যার সমাধান করতে হবে। |