বিক্ষোভ কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসা দলীয় কর্মীদের উপর হামলার চালানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। শুক্রবার দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুরে ঘটনার জেরে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। হামলায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা কর্মীদের গ্রেফতারের দাবিতে রাত পর্যন্ত কয়েকশ কংগ্রেস কর্মীরা হরিরামপুর থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায়ের অভিযোগ, “হরিরামপুর থানায় কর্মসূচী শুরু হওয়ার পরে ভ্যান রিকশা করে কয়েকজন দলীয় কর্মী আন্দোলনে যোগ দিতে থানায় আসছিলেন। তৃণমূল নেতা শুভাশিস পালের নেতৃত্বে হামলা হয়। কর্মীদের মারধর করে তৃণমূল অফিসে আটকে রাখা হয়।” তৃণমূল নেতা শুভাশিসবাবু সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করে গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ ও থানা ঘেরাও চলে। শেষে গঙ্গারামপুরের এসডিপিওর হস্তক্ষেপে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে উত্তেজনা কমে। কংগ্রেসের অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল নেতা শুভাশিসবাবু বলেন, “অভিযোগ মিথ্যা। এই রকম কিছু হয়েছে বলে জানি না। কংগ্রেস কুৎসা রটাচ্ছে।” পাশাপাশি, জেলার আটটি ব্লকেও একই কর্মসূচি নিয়েছিল কংগ্রেস। শহর জুড়ে একের পর এক ঘটনা ঘটে চললেও পুলিশ নিষ্ক্রিয় বলে অভিযোগ তুলে শিলিগুড়ি থানাতেও বিক্ষোভ দেখান শিলিগুড়ি টাউন কংগ্রেসের (২) নেতা-কর্মীরা। বিভিন্ন ঘটনা উল্লেখ করে থানার আইসি’কে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। টাউন কংগ্রেস (২) সভাপতি বিমলেশ মৌলিক বলেন, “রাজ্যে জোট সরকার রাজ্যে আসার পর আমরা আইন শৃঙ্খলা অবস্থার উন্নতি হোক এটাই চাই। কিন্তু যা হচ্ছে তা শহরের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।” এদিন স্মারকলিপি দেওয়ার পর পুলিশি নজরদারি বাড়ানো না হলে কংগ্রেস কর্মীকে আন্দোলনে নামতে হবে বিমলেশবাবু জানিয়েছেন। এদিন থানার বিক্ষোভ কর্মসূচিতে টাউন কংগ্রেসের সভাপতি বিমলেশবাবু ছাড়া কাউন্সিলর স্বপন চন্দ, কমল তরফদারেরা উপস্থিত ছিলেন। কংগ্রেস নেতারা জানিয়েছেন, হিলকার্ট রোডের ব্যবসায়ী রামাশ্রী প্রসাদকে মাস দেড়েক আগে অপহরণ করে খুন করা হয়, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বৃদ্ধা রুকমণি প্রসাদ ছুরিকাহত হন। ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। পাশাপাশি, ৫ নম্বর ওয়ার্ড এবং ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের দুটি মন্দিরে পরপর চুরির ঘটনা ঘটেছে। হাকিমপাড়ায় পূর্ব বিবেকানন্দপল্লিতে বৃদ্ধার গলার হার ছিনতাই-র মত ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সঠিক পদক্ষেপ নিতে পারেনি। একই বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়েছে শিলিগুড়ি মহকুমার নকশালবাড়িতেও। এদিন রায়গঞ্জ ব্লক ও শহর কংগ্রেস কমিটির উদ্যোগে রায়গঞ্জ থানার সামনে অবস্থান বিক্ষোভ হয়। কংগ্রেসের অভিযোগ, গত কয়েকমাসে রায়গঞ্জ থানা এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে এক মাছ ব্যবসায়ী, এক লটারি বিক্রেতা ও এক ঠিকাদার খুন হয়েছেন। দুষ্কৃতীরা দুই যুবককে পিটিয়ে খুন করেছে। স্টেশন এলাকা থেকে এক যুবকের দেহ উদ্ধার হয়েছে। রায়গঞ্জের এক তৃণমূল কাউন্সিলরের ছেলেও খুন হয়েছেন। এছাড়াও শহরে চুরি, ছিনতাই ও তোলাবাজির ঘটনা ঘটছে। জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সন্দীপ বিশ্বাস ও পবিত্র চন্দ বলেন, “পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার জেরে রায়গঞ্জ সহ গোটা জেলার আইন শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। অবিলম্বে পুলিশ আইন অনুযায়ী কাজ না করলে অনির্দিষ্টকালের জন্য দলের তরফে আন্দোলনে নামা হবে।” |