হলদিবাড়ি শহরকে জলপাইগুড়ির সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি ক্রমশ জোরদার হচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়া হলদিবাড়ির অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা প্রায় সকলেই ওই দাবিতে সহমত হয়েছেন। পাশাপাশি, ওই দাবি সামনে রেখে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন হলদিবাড়ির আইনজীবী ও হাইকোর্টের বার অ্যাসোশিয়েশনের সদস্য সীতাংশু মল্লিক। তিনি বলেন, “হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে। সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে এই মামলা কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হবে। সীতাংশুবাবুর যুক্তি, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণ দেখিয়ে প্রশাসনিক কাজের সুবিধার জন্যে সরকারের তরফে জলপাইগুড়ি জেলা ভাগ করা হচ্ছে। একই কারণে ভক্তিনগর থানাকে শিলিগুড়ি কমিশনারেটের অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে। আমাদের দাবি, একই যুক্তিতে হলদিবাড়িকে জলপাইগুড়ির অন্তর্ভুক্ত করা হোক। অন্যথায় জেলা ভাগের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে ভক্তিনগর থানাকে জলপাইগুড়ির আওতায় রাখা হোক”
হলদিবাড়ির বাসিন্দাদের বক্তব্য রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের ১৭টি দফতর জলপাইগুড়ি শহর থেকে নিয়ন্ত্রিত হয় তার মধ্যে আয়কর, ডাক ও তার বিভাগ, বিক্রয় কর, বৃত্তি কর, সেচ এবং পুর্ত দফতর উল্লেখযোগ্য। ভৌগোলিক অবস্থানের জন্য নির্বাচন পদ্ধতির সুবিধার জন্যে মেখলিগঞ্জকে জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের আওতায় রাখা হয়েছে। হলদিবাড়িবাসীর প্রশ্ন, পুলিশ, প্রশাসন, বিচার ব্যাবস্থা এবং লাইসেন্স নবিকরন সমেত বাকি দফতরগুলিকে কেন জলপাইগুড়ির আওতায় আনা হবে না?
হলদিবাড়িকে জলপাইগুড়ি শহরের অধীন আনলে দফতরগুলি জলপাইগুড়ির আওতায় আসবে। তৃণমূল ছাড়া হলদিবাড়ির সব কটি রাজনৈতিক দল হলদিবাড়ির বাসিন্দাদের এই দাবিকে সমর্থন করেছে। হলদিবাড়ি ব্লক কংগ্রেস সভাপতি তরুণ দত্ত বলেন, “আমরা চাই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে অবিলম্বে হলদিবাড়িবাসীর এই দাবি পূরণ করা হোক। এই দাবির সমর্থনে হলদিবাড়িবাসীর যে কোন আন্দোলনের পাশে আমরা আছি।” ফরওয়ার্ড ব্লকের হলদিবাড়ির সম্পাদক ইন্দ্রজি সিং বলেন, “আমাদের পার্টির হলদিবাড়ির কমিটি হলদিবাড়িবাসীর এই সার্বিক দাবি সমর্থন করে। আমরা এই দাবির সমর্থনে সমস্ত আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেব।” সিপিএমের হলদিবাড়ি জোনাল কমিটি সম্পাদক রথীশ দাশগুপ্ত বলেন, “এই দাবি সমর্থন করি।” তৃণমূলের হলদিবাড়ির সভাপতি গোপাল রায় এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। কোচবিহার জেলার তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “কোচবিহার জেলাকে ভাগ করার পক্ষে নেই।” তবে এসইউসি-এর হলদিবাড়ি ব্লকের সম্পাদক রহুল আমিন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “কিছুদিন আগে তিস্তায় জল বাড়ার কারণে লাল সংকেত দেওয়া হয়। সে কারণে নদীতে পারাপার বন্ধ ছিল। সেই সময়ে জলপাইগুড়ি-হলদিবাড়ির মধ্যে নয় দিন বাস ধর্মঘট চলে। হলদিবাড়িবাসী বন্দি হয়ে ছিলেন। ক্ষমতাসীন দলের কোচবিহার জেলার কোনও নেতা হলদিবাড়ির সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসেননি। হলদিবাড়িবাসীর অবস্থাটা অনুভব করতে হবে। তা হলে জলপাইগুড়ির সঙ্গে সংযুক্তির দাবি অগ্রাহ্য করা যাবে না।” |