টোকাটুকি করতে গিয়ে ধরা পড়েছিলেন টিএমসিপি-র ইউনিট সভাপতি। তাঁর খাতা বাতিল হওয়ায় মালদহের গাজল কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের শুক্রবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত আটকে রাখল রাজ্যের প্রধান শাসকদলের ছাত্র সংগঠন।
কলেজ সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের বাংলা পরীক্ষা ছিল। টোকাটুকি করার সময়ে টিএমসিপি ইউনিট সভাপতি অনিমেষ সরকারকে হাতে-নাতে ধরে ফেলেন কলেজের শিক্ষক অভিলাষ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর খাতা ‘আরএ’ করা হয়। তা প্রত্যাহারের দাবিতেই এ দিন দুপুর ২টো থেকে ঘেরাও শুরু করে টিএমসিপি। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র অবশ্য বলেন, “টোকাটুকি করতে গিয়ে ধরা পড়বে, আবার তার জন্য আন্দোলন করবে, এটা মেনে নেওয়া যাওয়া না।” |
যিনি অনিমেষকে ধরেছিলেন, সেই অভিলাষবাবুর কথায়, “পরীক্ষা শুরু কিছু ক্ষণের মধ্যেই প্রথম বেঞ্চে বসে টোকাটুকি শুরু করে ছেলেটি। আমি বাধা দিলে হুমকি দেয়। খাতা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে তা দিতে অস্বীকার করে। আমার নিষেধ সত্ত্বেও তিন ঘণ্টা ধরে টোকাটুকি করে
পরীক্ষা দিয়ে যায়।” কলেজ কর্তৃপক্ষ অবশ্য এই গা-জোয়ারি মানেননি। পরীক্ষার শেষে ছাত্রনেতার খাতা ‘আরএ’ (রিপোর্টেড এগেনস্ট) করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
গাজল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিরঙ্কুশ চক্রবর্তী বলেন, “গত বছরও কলেজে গণ-টোকাটুকির অভিযোগ উঠেছিল। এ বার কঠোর পদক্ষেপ করা হয়। টোকাটুকি করায় গত পাঁচ দিনে ১৫০ জনের খাতা ‘আরএ’ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ৩২ জনের খাতা ‘আরএ’ হয়। তার মধ্যে ওই ছাত্রনেতা রয়েছেন। তার খাতা আরএ করা যাবে না, এই দাবিতে টিএমসিপি দুপুর থেকে আমাদের ঘেরাও করে রাখে।” টিএমসিপি-র গাজল ব্লক সভাপতি অতনু রায়ের পাল্টা দাবি, “অনিমেষ কলেজে সমস্ত ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। সেই ক্ষোভে টোকাটুকি না করা সত্ত্বেও মিথ্যা অভিযোগ এনে খাতা ‘আরএ’ করা হয়েছে।” অনিমেষ নিজেও একই দাবি করেছেন। ঘটনাচক্রে, রাজ্যের নারী ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র ওই কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি। তাঁর মতে, “টোকাটুকি রুখতে শিক্ষকেরা খাতা ‘আরএ’ করে ঠিক কাজ করেছেন। যে সমস্ত ছাত্র টুকতে গিয়ে ধরা পড়েছে এবং তাদের জন্য যারা আন্দোলন করছে, তারা আমাদের দলের কলঙ্ক।” কিন্তু তা সত্ত্বেও টিএমসিপি-র কিছু নেতা দমতে রাজি নন। সংগঠনের ব্লক সভাপতি বরং হুমকি দেন, “যতক্ষণ না অনিমেষের খাতা থেকে ‘আরএ’ তুলে নেওয়া হচ্ছে, ঘেরাও চলবে।” |