|
|
|
|
|
|
|
বিকেলেই তো রোশনাই শুরু |
বেলা পড়ে এলেই তো আলো, রং, অনুষ্ঠান। জীবনের গল্পটাও তাই। বয়স বাড়তি হলেই
নতুন করে সাজুন। জৌলুস বাড়াতে আরও যত্ন নিন। বলছেন অনিরুদ্ধ চাকলাদার |
|
আগে চল্লিশ হলেই নাতিপুতিকে আদর করে ইজিচেয়ারে বসে, আকাশের দিকে শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে ঈশ্বরের কাছে বলা হত, আর কেন? এ বার তো টেনে নিলেই পারো। এর মধ্যে যদি এক বার হরিদ্বার যাওয়া হয় তো তার চাইতে বড় প্রাপ্তি আর কীই বা হতে পারে? কিন্তু এখন কুড়িতে বুড়ি আর চল্লিশে চালশের ধারণাটাই পাল্টে গেছে। লাইফ বিগিনস অ্যাট ফরটি। আমরা চল্লিশকে এখন অনেক দূর পর্যন্ত টেনে নিয়ে গিয়েছি। চুয়ান্নতে নতুন ব্যবসা, চৌষট্টিতে লাল টকটকে টি শার্ট পরে সুইডেন বেড়ানো, সাতষট্টিতে বিয়ের পিঁড়িতে বসা এ সব চোখের সামনে হামেশাই ঘটছে। সুতরাং মনের সঙ্গে মানুষের সাজগোজের চাহিদা, ধ্যানধারণা দুটোই অন্য মাত্রা পেয়েছে।
তো, সাতষট্টিতে বিয়ে হলে নিজেকে একটু যত্ন-আত্তি করতেই হবে। মেয়েদের একটা অস্ত্র আছে, মেক-আপ। দেখতে খারাপ, মুড খারাপ, ক্লান্তি, বয়স সব কিছুকে মেক-আপ দিয়ে ঢাকা যায় (৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে)। ছেলেদের আস্তিনে এমন কোনও তাস নেই। পুরোটা একটা খোলা খাতার পাতার মতো। কিন্তু এখন সবাই একটু নড়েচড়ে বসেছেন নিজেদের ইমেজ ধরে রাখতে। কর্পোরেট-এ যাঁরা আছেন, তাঁরা মাঝেমধ্যেই ফেশিয়াল করান এবং কিছু ব্যস্ত মানুষও রুটিন মাফিক যত্নের কথা ভাবছেন। এটাও বিরাট উন্নতি। প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী ছেলেরা অলস। তাই ঘরোয়া কোনও পদ্ধতির দিকে না যাওয়াই ভাল। লুক বদলানোর উপায় কিছু দিন অন্তরই চুলের স্টাইল বদলানো। কিন্তু এই বয়স থেকে চুল পাতলা হতে শুরু করে, সুতরাং অল্পবিস্তর যত্নেরও প্রয়োজন আছে। প্রতিদিন শ্যাম্পু কন্ডিশনার লাগিয়ে প্রাথমিক চুল পড়া রোখা মুশকিল। চুল সেট করার জেল বা ওয়াক্স ব্যবহার করতে পারেন, কিন্তু শোওয়ার আগে সম্পূর্ণ ধুয়ে ফেলতে হবে। কারণ, এগুলি চুলের ক্ষতি করে। এবং প্রতি দিন না লাগানোই ভাল। মাসে এক দিন স্পা করানো ভাল। যাঁদের হালকা পাকা চুল, তাঁরা অধিক আকর্ষণীয়। চুলে রং লাগানোর থেকে ‘সল্ট এন পেপার’ বেশি ভাল লাগে। ছেলেরা কখনও মাথায় মেহেন্দি লাগাবেন না। পাকা চুলের সমস্যা বেশি হলে ‘ন্যাচারাল ব্ল্যাক’ কালার করবেন। হাইলাইটিং বা বিভিন্ন ধরনের কালার পরীক্ষানিরীক্ষার মধ্যে যাবেন না। এতে আপনার পুরুষালি ইমেজ-এর ক্ষতি হবে। |
|
সময়কে বশে রাখার ইন্দ্রজাল। অপু ও অপর্ণা। পঞ্চাশ বছর পরে। কলকাতার
রবীন্দ্রসদনে একটি সাম্প্রতিক অনুষ্ঠানে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও শর্মিলা ঠাকুর |
দাড়ি নিয়ে কিছু ভাবনাচিন্তা করতে পারেন। কখনও পুরোটা রাখলেন, কখনও ফ্রেঞ্চ, কখনও হালকা খোঁচা খোঁচা। আবার শুধু মাঝখানেও সরু ভাবে দাড়ি রাখতে পারেন। দাড়ির রকমফের লুক-এর এক বিরাট পরিবর্তন ঘটায়। যাঁরা ভ্রু শেপ করান, তাঁরা মাঝপথে হঠাৎ ছেড়ে দেবেন না। সব সময় ঠিক শেপ দেওয়ার চেষ্টা করুন। যাঁদের চোখে ডার্ক সার্কল-এর সমস্যা আছে, তাঁরা কনসিলার ব্যবহার করতে পারেন।
জামাকাপড়ের কথা যদি বলি, তা হলে ছেলেদের সামনে এখন বিরাট সম্ভার, বিপুল স্বাধীনতা। অফিসে সব সময় সলিড রংই বেশি চলে। তবে শার্ট এবং ট্রাউজার্সের রঙের সামঞ্জস্য রাখাটা জরুরি। যেমন হালকা শার্ট, গাঢ় রঙের ট্রাউজার্স। গাঢ় শার্ট, হালকা রঙের ট্রাউজার্স। হালকা রঙের শার্টের সঙ্গে হালকা রঙের ট্রাউজার্স ভালই লাগে, তবে দু’টিই গাঢ় রং একেবারেই চলবে না। শুধুমাত্র কালো ছাড়া। কিন্তু কালো শার্ট-প্যান্ট অফিসের পোশাক হতে পারে না। অফিসে শনিবার বা বেড়াতে যাওয়ার জন্য ডেনিম খুব ভাল। এ ছাড়া ম্যাড়মেড়ে যে কোনও রং খুব ভাল লাগে। পুরুষদের যে কোনও এথনিক পোশাকই অসাধারণ লাগে। যদিও খুব কাজ করা পাঞ্জাবির ফ্যাশন চলে গিয়েছে, তবে কোনও ব্র্যান্ডেড হলে
তা চলতে পারে। বেসিক স্ট্রাইপ্ড পাঞ্জাবি খুব
ভাল লাগে।
তাই বলি কী, যৌবনের ভুলগুলোকে এড়িয়ে গুছিয়ে জীবন শুরু করুন। সাজগোজকে হাতিয়ার করে নিজেকে আকর্ষণীয় করে তুলুন।
|
‘বিশেষ বন্ধু’:
অ্যাকসেসরি |
• প্রিন্টেড টাই পরবেন সলিড কালারের সঙ্গে। আবার স্ট্রাইপ্ড শার্টের সঙ্গে চলবে সলিড কালার টাই।
• প্রিন্টেড বা চেকস্ মোজা কখনও ভাল লাগে না। সাদাই সবচেয়ে ভাল।
• ছেলেদের জন্য রঙিন রুমাল কখনওই নয়। সব সময় সাদা রুমাল ব্যবহার করবেন। অ্যাকসেসরিজ-এর মধ্যে নামী ব্র্যান্ড-এর একটি ঘড়ি যথেষ্ট। অফিস ছাড়া অন্য জায়গায় ফাঙ্কি ওয়াচ পরতে পারেন।
• সানগ্লাস এবং চশমা ছেলেদের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মুখের শেপ অনুযায়ী সানগ্লাস এবং চশমা ব্যবহার করবেন। মুখ লম্বা হলে গোলাকৃতি শেপ-এর সানগ্লাস বা চশমা ব্যবহার করবেন। চশমার শেপ যেন ঠিকঠাক হয়। বড় মুখে ছোট চশমা, ডাঁটিটি বেঁকে আছে খারাপ দেখতে লাগে। ছেলেরা সব সময় ছেলেদের পারফিউম ব্যবহার করুন। ফ্লোরাল সুগন্ধি একেবারেই না।
• জুতো এবং বেল্ট-এর রং যেন এক থাকে। বাদামি হলে দু’টোই বাদামি হবে। কোনও চকমকে জুতো পার্টিতে পরতে পারেন কিন্তু অফিসে কখনও পরবেন না। |
|
সাক্ষাৎকার: কস্তুরী মুখোপাধ্যায় ভারভাদা |
|
|
|
|
|