দিন কয়েক ধরেই গলায় স্টেথো ঝুলিয়ে, হাতে রক্তচাপ মাপার যন্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন এক ‘ভুয়ো ডাক্তার’। ভুল চিকিৎসা হয়েছে দাবি করে বর্ধমানের এক ডাক্তারের থেকে টাকা আদায়ের চেষ্টা করছিলেন বলেও অভিযোগ। টাকার টোপ দিয়ে শুক্রবার সকালে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছে।
ধৃত পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁর নাম ‘মির জাফর আলি’, বাড়ি বাংলাদেশে। কিন্তু তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া কিছু নথিতে ‘সুরঞ্জন মণ্ডল’ নাম রয়েছে, যিনি আবার কয়েকটি চিকিৎসক সংগঠনের সদস্য। পুলিশের সন্দেহ, সুরঞ্জনই নাম ভাঁড়িয়ে মির জাফর সেজে থাকতে পারেন। কিছু দিন ধরেই তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যাচ্ছিল। তাঁর বিরুদ্ধে জালিয়াতি, জাল নথিপত্র দেওয়া, প্রতারণা ও সরকারি আধিকারিকদের নাম করে লোককে ভয় দেখানোর অভিযোগে মামলা রুজু হয়েছে। সিজেএম আদালতে তাঁকে চার দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
বর্ধমান শহরের সুভাষপল্লির বাসিন্দা, চিকিৎসক মিহির হাজরার অভিযোগ, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাফর তাঁর বাড়িতে এসে ‘ডাক্তার’ বলে নিজের পরিচয় দেন। অভিযোগ করেন, তাঁর ‘ভুল’ চিকিৎসার কারণে একটি শিশুর অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছে। তার জন্য অবিলম্বে ওষুধ কেনার টাকা দিতে হবে। পুলিশের কাছে অভিযোগে মিহিরবাবুর ছেলে প্রসেনজিৎ জানিয়েছেন, ভয় পেয়ে তাঁর বাবা ওষুধ কিনতে ২০০ টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে নিরস্ত না হয়ে লোকটি আরও টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। হুমকি দেন, টাকা না দিলে পুলিশ সুপার, ডিএসপি-র মতো পুলিশের অফিসারেরা এসে মিহিরবাবুকে তুলে নিয়ে যাবেন।
এর পরেই বর্ধমান থানায় লিখিত ভাবে ঘটনাটি জানান প্রসেনজিৎ। বর্ধমান থানার আইসি দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আমরা অভিযোগকারীকে দিয়ে ওই ব্যক্তিকে ফোন করিয়ে বলাই, কোনও নির্দিষ্ট জায়গায় এসে যেন পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে যান। উনি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক জায়গায় টাকা নিয়ে আসতে বলেন। সেখানে গিয়ে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে।” আপাতত ‘সুরঞ্জন মণ্ডল’ কে বা জাফর যদি সত্যিই বাংলাদেশি হয়ে থাকেন, তিনি বর্ধমানে কী করছিলেন, জেরায় পুলিশ তার উত্তর খুঁজছে। |