সদ্যোজাতদের জন্য একটি বিশেষ ইউনিট চালু করা হল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। শুক্রবার এর উদ্বোধন করেন জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী তথা মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালন সমিতির সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র। ছিলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যও। স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, “এই নিয়ে রাজ্যে ২২টি সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট (এসএনসিইউ) চালু হল। আরও কয়েকটি হাসপাতালে এই ইউনিট চালু করার পরিকল্পনা হয়েছে।” আগামী দিনে এই বিশেষ ইউনিটের শয্যা সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
মেদিনীপুর মেডিক্যালে অবশ্য আগে থেকেই নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট রয়েছে। অন্যদের তুলনায় অবস্থা খারাপ এমন অন্তত ৬ জন শিশু সবসময়ই এখানে ভর্তি থাকে। এসএনসিইউ চালু হওয়ার ফলে আরও অন্তত ১২ জন শিশুকে ‘বিশেষ’ দেখভালে রাখা যাবে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। নতুন এই ইউনিটে ২৪ ঘন্টা পরিষেবা পাওয়া যাবে। হাসপাতালের এক আধিকারিক বলেন, “আর একটি এসএনসিইউ চালু হওয়ায় সঙ্কটজনক শিশুদেরও অনেক ক্ষেত্রে বাঁচানো যেতে পারে।” |
কয়েক মাস আগে থেকে এই ইউনিট চালু করার তোড়জোড় শুরু হয়। চলতি বছরের গোড়ায় মা ও শিশু মৃত্যু কমাতে গঠিত টাস্ক ফোর্সের এক প্রতিনিধি দল মেদিনীপুরে এসে কীভাবে কাজ চলছে, তা খতিয়ে দেখে। মেডিক্যালের শিশু ওয়ার্ডে যত শয্যা রয়েছে, অধিকাংশ সময়েই তার থেকে বেশি রোগী ভর্তি থাকে। ফলে, মাঝেমধ্যে একই শয্যায় দু’জন শিশুকেও রাখতে হয়। চিকিৎসার অবহেলায় শিশু মৃত্যুর অভিযোগে কখনও কখনও গণ্ডগোলও বাধে। এসএনসিইউ চালু হওয়ার ফলে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা কমবে বলে মনে করছেন রোগীর পরিবারের লোকজনও। তাঁদের বক্তব্য, শিশুদের সব সময় দেখভাল করা হয় না বলেই অভিযোগ ওঠে। এসএনসিইউ চালু হওয়ায় অন্তত ২৪ ঘন্টা শিশুদের উপর ‘বিশেষ’ নজর রাখা যাবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, অত্যধিক কম ওজন, ফুসফুসে সংক্রমণ ও শ্বাসকষ্টজনিত কারনেই শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। চেষ্টা করেও সবসময় অতি-সঙ্কটজনক শিশুকে বাঁচানো যায় না।
শুক্রবার বিকেলে মেদিনীপুরে মেডিক্যাল কলেজে এক বৈঠকও করেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী। ছিলেন মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতি, মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ শুদ্ধদন বটব্যাল, হাসপাতাল সুপার যুগল কর প্রমুখ। বৈঠকে হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়ন সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। পরে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, “পরিকাঠামো উন্নয়নের সবরকম চেষ্টা চলছে। শুধু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল নয়, অন্যান্য মহকুমা ও ব্লক হাসপাতালের পরিকাঠামোও উন্নয়ন করা হচ্ছে। গত আর্থিক বছরে ১৭৮টি হাসপাতালের পরিকাঠামোর উন্নয়ন হয়েছে।” তাঁর বক্তব্য, “আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি।” |