বিবাদ মেটাতে গিয়ে এক অসুস্থ ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগ উঠল শিলিগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান তথা এলাকার কাউন্সিলর নান্টু পালের বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে মারধরের ঘটনাটি ঘটে শিলিগুড়ির শেঠ শ্রীলাল মার্কেটে। ওই অসুস্থ ব্যবসায়ী দীপন দাস রাতে বাজারের একটি নালায় প্রস্রাব করলে শঙ্কর অগ্রবাল নামে অন্য এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে গোলমাল হয়। দু’পক্ষের তর্কাতর্কিও হয় বলে অভিযোগ। সেখানে সালিশি করতে গিয়ে শঙ্করবাবুর হয়ে পুর চেয়ারম্যান নান্টুবাবু ওই অসুস্থ ব্যবসায়ী দীপন বাবুকে মারধর করেন বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে শিলিগুড়ি রিটেল ক্লথ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের ব্যবসায়ীরা শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শেঠ শ্রীলাল মার্কেট বন্ধ রাখেন। অভিযুক্ত ব্যবসায়ীকে ক্ষমা চাইতে হবে বলেও দাবি করেন তাঁরা। খবর পেয়ে শিলিগুড়ির সহকারী পুলিশ কমিশনার প্রদীপ পাল ওই বাজারে ছুটে যান। ঘটনাস্থলে যেতে হয় শিলিগুড়ির পুরসভার চেয়ারম্যান তথা এলাকার কাউন্সিলর নান্টু পালকেও। পরে শঙ্কর অগ্রবাল নামে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী ভুল স্বীকার করে নিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। |
শিলিগুড়ির সহকারী পুলিশ কমিশনার প্রদীপ পাল বলেন, “বাজারে উত্তেজনার খবর পেয়ে এসেছিলাম। ব্যবসায়ীরা গোলমাল মিটিয়ে নিয়েছেন।” পুর চেয়ারম্যান মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন, “মারধরের প্রশ্ন ওঠে না। দীপন মানসিক ভাবে সুস্থ নন। তিনি একটা ভুল করে ফেলেছিলেন। অভিযোগ পেয়ে ওই রাতে ঘটনাস্থলে যাই। সেখান গিয়ে ঘাড়ে হাত দিয়ে দীপনকে দোকানে পৌঁছে দিই। অভিযুক্ত ব্যবসায়ীও ভুল স্বীকার করে নেওয়ায় সমস্যা মিটে গিয়েছে।” অসুস্থ ওই ব্যবসায়ী দীপনের দাবি, “আমি অসুস্থ। কিন্তু মানসিক রোগগ্রস্ত নই। ওই রাতে শঙ্করবাবু আমায় অপমান করেন। কাউন্সিলর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আমায় মারধর করেন।” দীপনবাবু শিলিগুড়ি রিটেল ক্লথ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক তাপস নন্দীর কাছে জমা দেওয়া অভিযোগপত্রেও কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করেন। তাঁর অভিযোগ, “মারধরের পরে কাউন্সিলর নিজের কত ক্ষমতা সে কথাও জানান। পুলিশের ভয়ও দেখান।” এই ঘটনার কথা চাউর হতেই সকাল থেকে বাজারে উত্তেজনা ছড়ায়। শিলিগুড়ি রিটেল ক্লথ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক তাপস নন্দী জানান, বুধবার রাতে গোলমালে ঘটনা ঘটলেও বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি জানাজানি হয়। তাপসবাবু বলেন, “দীপনকে কেন মানসিক রোগী বলা হল জানি না। তিনি অসুস্থ বলেই এমন একটা ভুল করেছিলেন। তার জন্য যে ভাষায় অপমান করা হয়েছে সেটা মানা যায় না বলেই ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। পরে অবশ্য সমস্যা মিটে যায়।” দীপনের সঙ্গে যে অভিযুক্ত ব্যবসায়ীর বচসাকে ঘিরে বিষয়টি এতদূর গড়ায় সেই শঙ্করবাবু বলেন, “বাজারে ছোট ব্যাপার নিয়ে গোলমাল হোক চাই না বলে ভুল স্বীকার করেছি।” |