তরাই-ডুয়ার্সে ছাত্র সংগঠন চাঙ্গা করতে এসএফআই সদস্যদের ‘বঞ্চিত ও নিপীড়িত’ চা-শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানোর পরামর্শ দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু। রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে সিপিএমের অন্য সংগঠনের মতো ছাত্র সংগঠনেও প্রভাব পড়েছে। রাজ্যের নানা এলাকায় সদস্যসংখ্যা কমেছে। এমতাবস্থায় আলিপুরদুয়ারে এসএফআইয়ের ৩৪তম রাজ্য সম্মেলন উপলক্ষে সমাবেশ-মঞ্চ থেকে বিমানবাবুর আহ্বান, “যে পরিবর্তন নিয়ে হইচই, তার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। সে জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। বঞ্চিত, নিপীড়িত চা-শ্রমিকের পাশে থেকে ছাত্রদের লড়াই করতে হবে।”
বিভিন্ন ইউনিয়ন দফতরে ‘তালা ঝোলানো’ রুখতেও ছাত্র সংগঠনকে প্রস্তুত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। ছাত্র সমাবেশে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য গৌতম দেব প্রত্যাশিত ভাবেই তৃণমূলের কঠোর সমালোচনা করেছেন। গৌতমবাবু বলেন, “আমরা চাই না, ছাত্ররা দুপুর বেলা ক্লাস ছেড়ে মিছিল করুক। তবে পরিস্থিতি যা দাঁড়াচ্ছে, তাতে ছাত্রদের মিছিল করতে বাধ্য করা হচ্ছে।” তাঁর অভিযোগ, “এসএফআই-কে নির্বাচনে দাঁড়াতে দেওয়া হচ্ছে না। গায়ের জোরে তারা ইউনিয়ন দখল করছে।” |
পাঁচ বছরের জন্য তৃণমূলের নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু দেড় বছর হতে চললেও তেমন কোনও উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে না বলে অভিযোগ গৌতমবাবুর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি তাঁর ‘পরামর্শ’, “আরও সাড়ে তিন বছর রাজ্যে সরকার চালাতে হবে। তিনি রাজ্য চালাতে পারছেন না। উন্নয়ন কী ভাবে করা যায় তার জন্য বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর উচিত, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পরামর্শ নেওয়া।” এসএফআইয়ের রাজ্য সম্মেলনের এ দিনের সমাবেশে ছাত্রদের উপস্থিতি অবশ্য তুলনামূলক ভাবে কম ছিল। সংগঠন সূত্রের খবর, রাজ্যে এসএফআইয়ের সদস্যসংখ্যা দু’বছরে ১২ লক্ষ থেকে কমে ৭ লক্ষ ২০ হাজারে নেমেছে। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক সায়নদীপ মিত্র বলেন, “তৃণমূলের ক্রমাগত আক্রমণে সদস্যসংখ্যা কমেছে। আমাদের উপরে সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃণমূল। একের পর এক কলেজে নির্বাচন করতে দেওয়া হচ্ছে না।” তাঁর দাবি, “ঠিকমতো নির্বাচন করতে দেওয়া হলে আমরা ৮০টার মধ্যে ৭০টা কলেজে জিততাম।” তবে ‘বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা’য় কলেজের ছাত্র সংসদ আর তৃণমূলের হাতে তুলে দেওয়া হবে না বলে ‘হুঁশিয়ারি’ দিয়েছেন এসএফআইয়ের রাজ্য সভাপতি কৌস্তুভ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “এ বার তৃণমূলের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াব! আমরা গত বারের মতো আর সহজে কলেজ সংসদ তাদের হাতে তুলে দিতে দেব না।”
|