|
|
|
|
প্রাথমিক স্কুল |
শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ দুই ২৪ পরগনা, মালদহেও |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
হাওড়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা বৃহস্পতিবারেই স্থগিত করে দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। শুক্রবার উচ্চ আদালতের নির্দেশে বন্ধ হয়ে গেল উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং মালদহ জেলায় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষাও। সরকার যে-চারটি জেলার প্যানেল খারিজ করে নতুন পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছিল, হাইকোর্টের দু’দিনের নির্দেশে তার সব ক’টিতেই পরীক্ষা স্থগিত হয়ে গেল। মালদহের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ জানিয়েছে, তারা আদালতের নির্দেশের প্রতিলিপি পায়নি এবং শেষ পর্যন্ত যদি তা পাওয়া না-যায়, সে-ক্ষেত্রে ২৬ অগস্ট রবিবার তারা সূচি অনুসারেই পরীক্ষা নেবে।
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের জন্য রাজ্য সরকার ২০০৯ সালে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল। সেই বিজ্ঞাপনের ভিত্তিতে আবেদনকারীদের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ডাকা হয় ‘ইন্টারভিউ’ বা সাক্ষাৎকারে। তার পরে যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা তৈরি করা হয়। তালিকাভুক্ত প্রার্থীদের প্রাথমিক শিক্ষকপদে নিয়োগের আগেই রাজ্যে ক্ষমতায় আসে নতুন দল। প্রার্থী-তালিকা তৈরিতে অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে গত ২১ জুন চারটি জেলার প্যানেল খারিজ করে দেয় নতুন সরকার। তার পরেই ঘোষণা করা হয়, ২৬ অগস্ট নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া হবে আবেদনকারীদের। প্যানেল খারিজের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রার্থী মামলা করেন হাইকোর্টে।
বিচারপতি প্রণব চট্টোপাধ্যায় ও বিচারপতি তরুণ দাসের ডিভিশন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের বক্তব্য শুনে নির্দেশ দিয়েছিলেন, হাওড়া জেলায় আপাতত ওই পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। মামলা চলবে। শুক্রবার বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্তের এজলাসে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং মালদহ জেলার আবেদনকারীদের মামলার শুনানি হয়। কিছু আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য প্রশ্ন তোলেন, এক বার যে-সব প্রার্থীর পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে, আবার তাঁদেরই পরীক্ষা নেওয়ার যুক্তি কী? অন্য কিছু আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় জানান, প্রাথমিক শিক্ষকদের নিয়োগের পরীক্ষা, সাক্ষাৎকার, তালিকা তৈরি এবং নিয়োগ সবই করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। প্রাথমিক স্কুলশিক্ষা বিধিতে একমাত্র সংসদেরই এই এক্তিয়ার আছে। রাজ্য সরকার কোনও ভাবেই প্রার্থীদের প্যানেল খারিজ কিংবা নতুন ভাবে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। বিভিন্ন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের পক্ষে বারবার তালিকা তৈরিতে অনিয়মের অভিযোগ তোলা হয়। সব পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি জানিয়ে দেন, ২৬ অগস্ট পরীক্ষা নেওয়া চলবে না। প্যানেল যে-ভাবে খারিজ করা হয়েছে, তার বৈধতা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিচ্ছে। তাই চূড়ান্ত রায়ের পরেই পরবর্তী ব্যবস্থার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উত্তর ২৪ পরগনার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারপার্সন মীনা ঘোষ বলেন, “আমরা অ্যাডমিট কার্ড বিলি করছিলাম। তবে হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দিলে পরীক্ষা নেওয়া যাবে না।” ২৬ অগস্টের পরীক্ষার জন্য ওই জেলায় ৪০ হাজার প্রার্থীর অ্যাডমিট কার্ড বিলি করা হয়েছিল। দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারপার্সন সুরঞ্জনা চক্রবর্তী বলেন, “স্থগিতাদেশের কথা শুনেছি। আদালত যেমন নির্দেশ দেবে, সেই অনুসারে কর্মপন্থা ঠিক করা হবে।” কিছুটা অন্য সুর মালদহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান রামপ্রবেশ মণ্ডলের গলায়। তিনি বলেন, “হাইকোর্টের নির্দেশের প্রতিলিপি পাইনি। আদালত কী বলেছে, তা-ও ঠিক জানি না। নির্দেশের প্রতিলিপি হাতে না-পেলে ২৬ তারিখেই ওই পরীক্ষা নেব।” |
|
|
|
|
|