পুরুলিয়া ঘুরে গেলেন ভুটানের লোকসংস্কৃতি নিয়ে কাজ করা একটি সংস্থার সদস্যেরা। তাঁদের লক্ষ্য, পুরুলিয়ার লোকশিল্প, পুরাকীর্তি এবং লোকশিল্পীদের সম্পর্কে জেনে নিজের দেশের লোকশিল্পকে সমৃ্দ্ধ করা।
বৃহস্পতিবার জয়পুর, বাঘমুণ্ডি, বলরামপুর ব্লক ঘোরার পরে ‘লিবারালাইজিং কালচারাল ডাইভারসিটি অফ ভুটান’ নামে সংস্থার ওই সদস্যরা শুক্রবার ঘুরে দেখেন রঘুনাথপুর ২ ব্লকের চেলিয়ামা এলাকা। ‘বাংলা নাটক ডটকম’ নামে একটি সংস্থার সঙ্গে কাজ করে এ রাজ্যের লোকসংস্কৃতি ও লোকশিল্প সম্পর্কে জানার উদ্দেশ্যে সম্প্রতি কলকাতায় এসেছেন ভুটানের ওই সংস্থাটির ১৫ জন সদস্য। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কিছু ভুটানি লোকশিল্পীও।
‘বাংলা নাটক ডটকম’-এর অধিকর্তা অমিতাভ ভট্টাচার্য বলেন “কলকাতায় সাত দিনের একটি প্রশিক্ষণ শিবিরে ভুটানের ওই সংস্থার সদস্যদের শেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, কী ভাবে আমাদের রাজ্যের লোকশিল্পীরা তাঁদের শিল্পকলাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন এবং তার মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করার কাজ করছেন।”
ওই প্রশিক্ষণের অঙ্গ হিসাবেই পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলায় পটশিল্পীদের হাতের কাজ দেখার পরে বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ায় আসে ভুটানের দলটি। ওই দিন তারা মূলত ছৌনাচ সম্পর্কে জানার পরে এ দিন সকালে যায় রঘুনাথপুর ২ ব্লকের সগড়কা গ্রামে মানভূম লোকসংস্কৃতি কেন্দ্রে। সেখানে লোক-গবেষক সুভাষ রায় তাঁদের দেখিয়েছেন, ঝুমুর গানের বিবর্তন। সুভাষবাবুর কথায়, “ঝুমুরের মতো ভুটানেও প্রাচীন লোকগান রয়েছে। আমরা ওই দলের সদস্যদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি, কী ভাবে বিবর্তনের মাধ্যমে এখনও জনপ্রিয় ঝুমুরগান।”
পরে ওই ব্লকেরই নবম-দশম শতাব্দীতে তৈরি বান্দার দেউল দেখেছেন ওই সদস্যেরা। ভুটানের সংস্থাটির সহকারী প্রজেক্ট ম্যানেজার কেসাং সোডেন বলেন, “সংস্কৃতির আদান-প্রদানের মাধ্যমেই কোনও দেশের নিজস্ব লোকসংস্কৃতি সমৃ্দ্ধ হয়। আমরা এখানে এসে জানার চেষ্টা করেছি, কী ভাবে বহু প্রাচীন লোকসংস্কৃতিকে এখানের শিল্পীরা টিকিয়ে রেখেছেন এবং তার মাধ্যমে কী ভাবে জীবন জীবিকা নির্বাহ করছেন শিল্পীরা। এই অভিজ্ঞতা আমাদের দেশের লোকশিল্পের উন্নতির কাজে লাগাবো।” |