কোনও কিছু নিয়ে কেউ প্রতিবাদ করলেই, তাঁর গায়ে মাওবাদী তকমা লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বেকারদের রেলে চাকরি দেওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু ভাড়া বাড়ানোর ‘অপরাধে’ চাকরি খোয়াতে হল এক রেলমন্ত্রীকে। শুক্রবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানায় সাতমাইল বাজারে সিটুর অষ্টম রাজ্য সম্মেলনে নাম না করে এ ভাবেই মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করলেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের সূর্যকান্ত মিশ্র। এ দিন সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিটুর রাজ্য সম্পাদক শ্যামল চক্রবর্তী, সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক সুজন চক্রবর্তী, সিটুর জেলা সম্পাদক তপন বাগচী প্রমুখ।
এ দিন সূর্যবাবু বলেন, “বেলপাহাড়িতে জনসভায় এক জন মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করায় তাঁকে বিনা বিচারে আটক করা হয়েছে। প্রথম দিন তিনি মাওবাদী গন্ধ পেয়েছিলেন। কিন্তু পাঁচদিন পরে রেলমন্ত্রী ধৃতের মুখে মদের গন্ধ পেলেন। এটা সরকার চলছে না সার্কাস!” মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, “কোনও সংবাদপত্র রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে লিখলেই তা পড়তে নিষেধ করছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিচারব্যবস্থাকে আক্রমণ করছেন। গোলমাল করার অভিযোগে পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করে হাজতে ঢোকাল। মুখ্যমন্ত্রী গিয়ে তাঁকে বের করে আনলেন। |
মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো পুলিশের মাথায় চাঁটি মেরেও রেহাই পেয়ে যান। হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের বিরুদ্ধেও তিনি প্রতিবাদ করছেন।” রাজ্যে খুন-জখম বেড়ে যাওয়ার প্রসঙ্গে বিরোধী নেতা বলেন, “তৃণমূলের লোকজনই তৃণমূলের লোকজনকে খুন করছে। তৃণমূলের কমর্ীর্রাও তা জানেন। রাজ্যে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ৮ থেকে ৮০ বছর, মহিলাদের কোনও নিরাপত্তা নেই।” মুখ্যমন্ত্রী বিরোধীদের মুখ বন্ধ রাখার প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সূর্যবাবু বলেন, “উনি আমাকে বলেছেন মুখ বন্ধ করে রাখবেন। আমি বলেছিলাম, আপনি কিছু বললে আমাকে কিছু বলতেই হয়। যে কোনও ক্রিয়ারই প্রতিক্রিয়া রয়েছে।” এ দিন দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “যারাঁ দল ছড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন, তাঁদের বুঝিয়ে দলে ফেরানোর ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা চাই এই সরকার আরও পাঁচ বছর চলুক। তা হলে নতুন প্রজন্ম বুঝতে পারবে কী ভাবে অত্যাচার হচ্ছে।” মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে শ্যামলবাবু বলেন, “অলিম্পিকে মিথ্যা কথা বলার কোনও বিভাগ থাকলে থাকলে সেখানে উনি সোনা পেতেন।” এ দিন সম্মেলনে পেট্রোল ও ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি, সারের দাম বৃদ্ধি নিয়ে বক্তব্য রাখেন বক্তারা। |