উত্তর ২৪ পরগণার বাগদা থানার কুলিয়া গ্রামে বাড়ির উঠোনের উপর দিয়ে গরু নিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদ করায় বৃহস্পতিবার রাতে পাচারকারীদের হাতে প্রহৃত হলেন পরিমল বিশ্বাস নামক এক হাতুড়ে। তাঁকে বাগদা ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ পাচারকারীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে কুলিয়া গ্রামের খেতের মধ্যে দিয়ে রাতের অন্ধকারে পাচারকারীরা গরু পাচার করছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বাড়ির উঠোন দিয়ে গরু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ফলে মানুষ বাইরে বেরোতে ভয় পাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার রাতে পরিমলবাবু এই গরু পাচারের প্রতিবাদ করলে পাচারকারীরা তাঁকে ব্যাপক মারধোর করে। স্থানীয় বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ স্থানীয় পাচারকারীদের সঙ্গে বাংলাদেশি পাচারকারীরাও ছিল। ঘটনার পর তারা বাংলাদেশে পালিয়ে গিয়েছে। স্থানীয় রণঘাট গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত কাঁটাতার না থাকার সুযোগে রণঘাট গ্রাম পঞ্চায়েতের কুলিয়া, সিঙামুড়া, চড়কতলা, আউলভাঙা সীমান্ত দিয়ে গরু পাচার হচ্ছে। গরু নিয়ে যাওয়ার সময় ব্যবহৃত হচ্ছে কোদালিয়া নদী। পঞ্চায়েত প্রধান রমেশ সিকদার বলেন, “স্থানীয় রণঘাট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মধ্যে প্রায় ১২ কিলোমিটার হল সীমান্ত এলাকা। তার ভিতর প্রায় ৪ কিলোমিটার এলাকায় কাঁটাতার নেই। বিএসএফ জওয়ানরা পাহারা দিলেও তাদের চোখ এড়িয়ে দিব্যি চলছে গরু পাচার। চলতি মাসের ১১ থেকে ১৩ অগস্টের ভিতর ওই এলাকা দিয়ে কয়েক হাজার গরু পাচার করা হয়েছে।”
বাগদা থানা এলাকায় মোট এলাকা হল ২৩৩,০৫ স্কোয়ার কিলোমিটার।তার ভিতর সীমান্ত রয়েছে ৫৩ কিলোমিটার। বাগদার বিডিও খোকনচন্দ্র বালা জানান যে, সীমান্তের ৮ কিলোমিটার এলাকায় কাঁটাতার নেই। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কাঁটাতার দেবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও কাঁটাতারের বাইরে যে পরিবারগুলি পড়বে তাদের কাঁটাতারের ভিতরে নিয়ে আসবার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়েছে। তবে কাঁটাতার দেবার প্রক্রিয়া চলছে। যদিও বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, পুলিশের উদ্যোগের অভাব রয়েছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন,“সম্প্রতি বনগাঁ মহকুমায় গরু পাচার বন্ধ করতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” বাসিন্দাদের অভিযোগ, জওয়ান থাকলেও পাচারকারীরা তাদের ভয় পায় না। |