রোনাল্ডো প্রথম গোল করে এগিয়ে দিয়েছিল রিয়ালকে। আধ ঘণ্টার সামান্য বেশি ম্যাচের বাকি ছিল। কিন্তু ওর মধ্যেই ৩-১ করে দেয় বার্সা। ওই রেজাল্টই থাকত। কিন্তু ক্ষণিকের গাফিলতিতে বার্সা গোলকিপার ভালদেস বক্সের ভেতরে ড্রিবল করে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে দি মারিয়ার কাছে আটকে যায়। ফাঁকা জালে বল পাঠিয়ে দি মারিয়া রিয়ালের দ্বিতীয় গোল করে দলকে ‘লাইফলাইন’ দেয়। নিজেদের মাঠে হারলেও পরের সপ্তাহে বের্নাবৌতে অন্তত লড়াইয়ে থাকল মোরিনহোর দল। যদিও রিয়ালের দায়িত্ব নেওয়ার পর মেসি-জাভি-ইনিয়েস্তাদের বিরুদ্ধে ডজন বার মুখোমুখি হয়ে হাফডজন ম্যাচ হারলেন মোরিনহো। প্রায় এক অবস্থা মেসি বনাম রোনাল্ডো লড়াইয়েরও।
মেসি বৃহস্পতিবার মাঝরাতের এই স্প্যানিশ সুপার কাপ ম্যাচে হয়তো পেনাল্টিতে গোল করেছে। কিন্তু সার্বিক খেলাটা রোনাল্ডোর চেয়ে অনেক ভাল খেলেছে। রোনাল্ডো প্রচুর মিস পাস করল ম্যাচটায়। মেসি সেখানে গোল করার মতো অনেক পাস বাড়িয়েছে। গুয়ার্দিওলা দায়িত্ব ছাড়ার পরেও অবশ্য বার্সার খেলায় সেই পাস-পাস-পাস। বিপক্ষের আঠারো গজের বক্সেও পাসের ফুলঝুরি। আমরা হলে ওই জায়গা থেকে গোলে মেরে দিতাম। বার্সা এত পাস খেলায় কী হল, রিয়ালের ছেলেরা সারাক্ষণ ওদের তাড়া করে গেল। আর ফুটবলে সারাক্ষণ বিপক্ষকে তাড়া করতে করতে একটা-না-একটা সময় নিজেদের ‘আউট অব পজিশন’ হয়ে যেতে হবেই। রিয়ালের ক্ষেত্রে সেটাই ঘটায় এক গোলে পিছিয়ে পড়েও বার্সা দ্বিতীয়ার্ধেই পরপর তিন গোল চাপিয়ে দেয় রোনাল্ডোদের ওপর। |
মেসির পেনাল্টি-গোল। ছবি: এএফপি |
তবু নতুন মরসুমের প্রথম ম্যাচেই দুই বিগপাওয়ার-কে মুখোমুখি হতে হওয়ায় সাংঘাতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার ছাপ তেমন পাওয়া গেল না। যতই শুধু দ্বিতীয়ার্ধেই পাঁচটা গোল হোক না কেন। তা হলেও এটা বুঝতে অন্তত অসুবিধে হওয়ার নয় যে, বিশ্ব ফুটবলের রিমোট এখন আরও অনেক দিন স্পেনের হাতেই থাকবে। প্রতি একটা কি দুটো দশকে কোনও না কোনও দেশের একঝাঁক ফুটবলার গোটা বিশ্বফুটবলকে নিয়ন্ত্রণ করে এসেছে। কখনও পুসকাসদের হাঙ্গারি, কখনও ববি চার্লটনদের ইংল্যান্ড, কখনও বেকেনবাউয়ারদের জার্মানি, কখনও পেলেদের ব্রাজিল, কখনও ক্রুয়েফদের নেদারল্যান্ডস, কখনও মারাদোনাদের আর্জেন্তিনা। এখন সেটাই করছে জাভি-ইনিয়েস্তা-পিকে-ফাব্রেগাসদের স্পেন। ওদের ক্লাব বার্সেলোনার স্টাইলটাই স্পেনের জাতীয় দলেরও জয়ের মন্ত্র। পাস-পাস-পাস! |