স্কুলের পোশাকেই ছিল এক ইভটিজার
নডি রোড-সহ বাগনানের বহু এলাকায় বেশ কিছু দিন ধরেই ‘ইভটিজার’দের দৌরাত্ম্য বাড়ছে বলে অভিযোগ স্থানীয় মানুষের। শুক্রবারের ঘটনা সে দিকেই ইঙ্গিত করছে।
এ দিন ‘ইভটিজার’দের মধ্যে বাগনান হাইস্কুলের পোশাক পরা একটি ছেলে ছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। তার কাঁধে স্কুলের ব্যাগও ছিল। তাকে ‘চিহ্নিত’ করা গিয়েছে বলে পুলিশের দাবি। ছেলেটির বাড়ি খাজুট্টি গ্রামে। অভিযোগ পেয়ে সেখানে পুলিশ গিয়েছিল। তার মা পুলিশকে জানান, ছেলে স্কুলে গিয়েছে। কিন্তু স্কুলে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, গত দেড় মাস ধরে হাজিরা খাতায় নাম ওঠেনি ছেলেটির। পরে এই ছেলেটি এবং তার সঙ্গী আরও এক ছাত্রকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ দিনের ঘটনায় জখম উত্তম দলুই বাগনান গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাকে দেখতে হাসপাতালে এসেছিলেন স্থানীয় বিধায়ক রাজা সেন। তিনি বলেন, “দোষীদের অবিলম্বে চিহ্নিত করে পুলিশকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।” এনডি ব্লকেই আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়। নির্জন এই রাস্তায় ‘ইভটিজার’দের দাপট বহু দিনের বলে অভিযোগ করেছেন বাগনান থানা গণতান্ত্রিক নাগরিক সমিতির সম্পাদক প্রসূন রায়।
তাঁর কথায়, “মেয়েদের স্কুল থাকায় এই রাস্তা ইভটিজারদের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে। পুলিশকে এর আগেও বলে কোনও লাভ হয়নি।”
উত্তমের সঙ্গীসাথীদের চিৎকার শুনে পথচারীরাই তাঁকে উদ্ধার করেন। তাঁদের দেখে পালায় হামলাকারীরা। প্রত্যক্ষদশডদের এক জন বরুণ মিদ্যা বলেন, “হঠাৎই রাস্তায় দেখি দু’টি মেয়ে এবং একটি ছেলে সাহায্যের জন্য চেঁচাচ্ছে। আর একটি ছেলেকে মারধর করছে কয়েক জন। আমরা এগিয়ে যেতেই ওই তিন জন সাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। আমরা দেখি, যে ছেলেটিকে মারধর করা হচ্ছিল, সে তত ক্ষণে জ্ঞান হারিয়েছে। চোখে-মুখে জল ছেটানোর পরে ধীরে ধীরে ওর জ্ঞান আসে। আমরাই কয়েক জন ছেলেটিকে নিয়ে যাই হাসপাতালে।”
গোটা ঘটনায় আতঙ্কিত উত্তম ও তার বোনের পরিবার। দু’জনের বাবার কথায়, “দিনেদুপুরে এমন কাণ্ড ঘটল। এরপর মেয়েরা রাস্তায় বেরোবে কোন সাহসে?”
উত্তমের বাবা কমল দলুইয়ের কথায়, “আমার ছেলে খুবই নিরীহ। কখনও মারপিটে জড়ায় না। ও যখন প্রতিবাদ করেছে, তখন নিশ্চয়ই ঘটনা খুব বড় আকার নিয়েছিল। দোষীদের কঠোর শাস্তি চাই।”


আতঙ্কিত বাগনান
প্রতিমা মাইতি
(বাগনান আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা)
স্কুল শুরু এবং ছুটির সময়ে কিছু ছেলে ছাত্রীদের উত্যক্ত করে বলে অভিভাবকেরা জানিয়েছেন। আমরাও এটা লক্ষ্য করেছি। পুলিশকে চিঠি দিয়ে টহলদারির অনুরোধ করা হয়েছে।
শ্যামলকুমার সামন্ত
(এসডিপিও, উলুবেড়িয়া)
যে সমস্ত এলাকা থেকে মেয়েদের উত্যক্ত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ আসে, সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ সেখানে গিয়ে ব্যবস্থা নেয়। তবে যাইহোক, আগামী দিনে বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের টহলদারি আরও বাড়ানো হবে।
নয়ন হালদার
(বাগনান হাইস্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক)
এখানে কিছু জায়গায়, বিশেষ করে মেয়েদের স্কুলের সামনে ইভটিজারদের দৌরাত্ম্য যে ভাবে দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে, তা উদ্বেগের। প্রশাসনকে এ সব কড়া হাতে দমন করতে হবে।
শেখ ইয়াসিন
(অভিভাবক)
এনডি ব্লক, বাগনান বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন এলাকায় কিছু ছেলে দল বেধে উৎপাত বাধাচ্ছে। যে কোনও বয়সের মহিলাদের কটূক্তি করা হচ্ছে। এ সব বন্ধ হওয়া দরকার। না হলে বিপদ বাড়বে।
গোরাচাঁদ সিংহরায়
(বাগনান থানা স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক)
খেলাধূলার সূত্রে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মেয়েরা এই এলাকা দিয়ে যাতায়াত করে। কিন্তু ইভটিজারদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল।
সৌরেন্দুশেখর বিশ্বাস
(চিকিৎসক)
বহু দিন ধরেই এনডি ব্লক-সহ এলাকার কিছু জায়গায় এই পরিস্থিতি চলছে। প্রশাসনের ঢিলেঢালা মনোভাবের জন্যই শুক্রবারের ঘটনা ঘটে গেল। কঠোর ব্যবস্থা না নিলে আগামী দিনে এ সব আরও বাড়বে।
অনুপকুমার মঙ্গল
(চিকিৎসক)
এ সব ঘটনা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া দরকার। সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। শুক্রবার যা ঘটল, তা আগামী দিনে আরও বড়সড় ঘটনার দিকেই ইঙ্গিত করছে। সতর্ক হওয়া খুবই প্রয়োজন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.