আজ পর্যন্ত যে সব লোকেশনে শ্যুটিং করেছি তার মধ্যে দুবাই নিঃসন্দেহে আমার প্রিয় শহর। গরম ছাড়া দুবাইয়ে সব কিছুই আমার ভীষণ প্রিয়। আর এই বারেই তো পাগলু ২-র পুরো সেকেন্ড হাফটাই সেখানে শ্যুট করলাম। পাগলু নিয়ে কথা বলতে গেলে প্রথমেই মাথায় আসে গাড়ির কথা। পাগলু ১ করার সময় আমি প্রথম রোলস রয়েস থেকে বি এম ডবলিউ চালাই। সেই থেকেই ইচ্ছে ছিল বি এম ডবলিউ কেনার। পাগলু শেষ করার পরই প্রথম বি এম ডবলিউ কিনি আমি। নো ওয়ান্ডার, পাগলু আমার এত প্রিয় চরিত্র।
|
সে দিন একটা মজার ঘটনা হয়েছিল। সকাল থেকে আমি, কোয়েল, রিমঝিম জানতাম আমাদের শ্যুটিং দুপুরের মধ্যেই শেষ। সেই মতো ঠিক করেছিলাম বিকেল বিকেল ‘ডেজার্ট সাফারি’তে যাব। সে দিন আবার টোটাদার শ্যুটিং ছিল রাত অবধি। আমরা আমাদের সিন শেষ করে কাউকে না বলে সোজা ‘ডেজার্ট সাফারি’তে গেলাম। টোটাদাকে না বলে চলে যাওয়াতে টোটাদা কী অসম্ভব রেগে গেছিল আমাদের ওপর! আজকে বলছি ‘সরি টোটাদা’। পরের বার আর এরকম করব না।
|
এর আগে প্রধানত গানের শ্যুটিং করতেই আমরা বিদেশের লোকেশনে যেতাম। এ বার পাগলু-২-র জন্য মারামারির দৃশ্য ওখানেই শ্যুট করলাম। জুডো রামু ছিলেন ফাইট মাস্টার। ওপরের সিকোয়েন্সটা শারজা ডেজার্টে তোলা। ভরতদা (কল) আর আমি তখন গরমে কাহিল। তবে শ্যুট শেষ করেই প্রত্যেক দিন আমরা নাইট লাইফ দেখতে যেতাম। আর আমাদের নাইট লাইফ দেখাত রনিদার (রজতাভ দত্তর) বাঙালি বন্ধু। উনি না থাকলে অত মজা আমরা করতেই পারতাম না।
|
দুবাইয়ে নামার পর থেকেই আমার কাছে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হল শপিং— কেনাকাটা। সেদিন বার-দুবাইতে বলে একটা জায়গায় শ্যুটিঙ ছিল। শ্যুটিং শেষ করেই সবাই মিলে কেনাকাটা করতে গিয়েছিলাম। জুতো, জামা, ঘড়ি....কিছুই বাদ দিইনি। আসলে দুবাই থেকে ফিরেই ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্টে আমার খরচের বহর দেখে মাথায় হাত পড়ে যায়। সেদিন শ্যুটিং করে একটু ফোটোশ্যুট করতেই ইচ্ছে করছিল। সেই ফোটোশ্যুটেরই ছবি এটা।
|
কোয়েলের সঙ্গে অনেকগুলো ছবি করেছি। ছবি করতে করতে ওর সঙ্গে আমার একটা দারুণ বোঝাপড়া তৈরি হয়ে গেছে। সে দিন কোয়েলের সিন চলছিল ভীষণ গরমের মধ্যে। এত গরম যে জুতোর সুখতলা প্রায় গলে যাবার অবস্থা। বেচারি কোয়েলকে ওই গরমে ঠায় শ্যুটিং করতে হচ্ছিল। আমি অবশ্য তখন গরমে বসে দেখিনি শ্যুটিং। বিরাট সাদা রংয়ের লিমুজিন ব্যবহার করা হয়েছিল এই ছবিতে। সেই লিমুজিনটাকেই মেক-আপ ভ্যান বানিয়ে এসি চালিয়ে দিব্যি আড্ডা মারছিলাম। আর কোয়েলের পেছনে লাগছিলাম দরজা ফাঁক করে করে।
|
টোটাদার (রায়চৌধুরী) সঙ্গে শ্যুটিং করার সবচেয়ে বড় সুবিধে হল যে আপনার ডায়েট একদম ঠিক থাকবে। টোটাদা শুধু ডায়েট বা ফিটনেসের বিশেষজ্ঞ নয়, কলকাতার শিল্পীদের মধ্যে ফিজিওথেরাপি নিয়ে অত জ্ঞান আমি আর কারও দেখিনি। দুবাইতে শ্যুটিঙে দুপুরে আমাদের ভারতীয় খাবার থাকত। রাতে অবশ্য আমরা রোজই পার্টি করতে গিয়ে নানা রকম আরবি খানা খেতাম। তাতে কত ক্যালরি বা কোন খাবার পেশির জন্য ভাল এসব জানতে হলে টোটাদার কোনও বিকল্প ছিল না। |