|
|
|
|
|
|
|
মনোরঞ্জন ১... |
|
স্বস্তিকা যখন পাওলি |
নগ্ন হলেন বাঙালি নায়িকা। ইউ টিউবে সেই এমএমএস ক্লিপ দেখে উত্তাল গোটা দেশ।
এ বার তা সেলুলয়েডে। তফাত? পাওলি দামের জায়গায় স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়।
লিখছেন ইন্দ্রনীল রায় |
হুলস্থুল বাঁধিয়ে দিয়েছেন ‘দোয়েল মিত্র।’
তাঁর নগ্ন ছবির এমএমএস ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। আর এই ঘটনার জেরেই উত্তাল দর্শক ছিছি করছে ‘দোয়েল’কে। তকমা দিচ্ছে নষ্ট মেয়ের।
দোয়েল মিত্রর নাম আর সভ্য সমাজে নেওয়া যায় না। এই নামটার সঙ্গে এখন জড়িয়ে গেছে একরাশ রগরগে কেচ্ছা ও কুৎসা।
গল্পটা খুব চেনা চেনা লাগছে? মনে পড়ছে কি ছত্রাকের সেই ভিডিও ক্লিপটা যেটা পাওলির নগ্নতাকে দেশভর ছড়িয়ে দিয়েছিল এক বছর আগে?
হ্যাঁ, আর সেই ঘটনাই এখন একটা আস্ত ছবির চিত্রনাট্য। ছবির নাম ‘টেক ওয়ান’। পরিচালনায় মৈনাক ভৌমিক।
তা হলে কি পাওলি দামই অভিনয় করবেন স্বচরিত্রে? নো। পাওলি দামের সেই চরিত্রে অভিনয় করবেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। ইন্ডাস্ট্রির বিশ্লেষণে তিনি আবার পাওলির ‘আর্চরাইভাল’। ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’-এর অভূতপূর্ব সাফল্যের পর কদলিবালা হিসেবে তাঁর ব্র্যান্ডভ্যালু যখন বাড়ছে তখন এই সিদ্ধান্ত কি চরম বিস্ময়কর নয়? দশ জন অভিনেত্রীর মধ্যে ন’জনই হয়তো এই ঝুঁকি নিত না। স্বস্তিকা অবশ্য আনন্দবাজারকে ব্যাখ্যা করলেন, “ আমি নিজে সাহসী। সাহসী ছবিতে অভিনয় করার সুযোগ পেলে ভাল লাগে।”
এ দিকে ‘বেডরুম’ খ্যাত পরিচালক মৈনাক ভৌমিক কী বলছেন? এত বিতর্কিত বিষয় নিয়ে আদৌ ছবি করা যাবে? তাও আবার সমসাময়িক প্রতিদ্বন্দ্বী নায়িকাকে দিয়ে?
মৈনাক বললেন, “হ্যাঁ, কেন নয়? স্বস্তিকার সঙ্গে আমার সব কথা হয়ে গেছে। ওর কোনও সমস্যা নেই। আমরা ছবিটাকে একটা ডকু-ফিচারের আদলে তৈরি করছি। পাওলির সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন যে সাংবাদিকেরা তাঁদের প্রতিক্রিয়াও ডিটেলে দেখানো হবে।” মৈনাক এও বললেন, “স্বস্তিকার সবচেয়ে বড় গুণ হল ওর সততা। একজন অভিনেত্রী হিসেবে ওর কোনও সীমাবদ্ধতা নেই। আমি ওকে নগ্নদৃশ্যগুলোর কথা বললে ও জানায় যে যতদূর স্বচ্ছন্দ বোধ করবে ততটা ও ছবিতে অভিনয় করে দেখাবে।” ইন্ডাস্ট্রি অবশ্য মনে করে পরিচালকও এই ছবি করতে গিয়ে অপর্যাপ্ত ঝুঁকি নিচ্ছেন। |
|
প্রযোজক অরিন্দম শীলের প্রথম পছন্দ স্বস্তিকাই ছিলেন। “হ্যাঁ স্বস্তিকাই ছিল প্রথম চয়েস। আমরা পাওলির সঙ্গেও কথা বলেছি আর জানিয়েছি যে ছবিটা তার জীবনের সবচেয়ে বিতর্কিত ঘটনার ওপর তৈরি করা হবে। ছবির সাহায্যে আমরা ইন্ডাস্ট্রির দ্বিচারিতা দেখাতে চেষ্টা করব। দেখাব কোনও একটা গরম ইস্যু সামনে এলে আমরা কত তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি,” বললেন অরিন্দম।
কিন্তু, যাঁর জীবনের একটা ঘটনা নিয়ে এই ছবি তিনি অবশ্য মোটেই উৎসাহিত নন। পাওলি দাম একেবারেই খুশি নন তাঁর জীবনের সবচেয়ে সেনসিটিভ ঘটনার ‘‘বাণিজ্যিকরণ” হচ্ছে দেখে।
পাওলি বলছেন, “এই বিষয়ে ছবি করাটা অত্যন্ত নিম্নমানের রুচির পরিচয়। একদম সস্তা প্রচার বলে মনে হচ্ছে।” বেশ ক্ষুব্ধ ভঙ্গিতেই পাওলি বলছেন, “এটা তো ওয়ার্ক অফ ফিকশন বলেই শুনেছি। মুখ্য চরিত্রটার নামও আমার নামের থেকে আলাদা। তাও কী দরকার বুঝছি না এই বিষয় নিয়ে ছবি করার। মৈনাক ভৌমিক অত্যন্ত দক্ষ পরিচালক। তার এরকম সস্তা প্রচার করার দরকার ছিল কি? এটাই আমি বুঝতে পারছি না।”
স্বস্তিকা ছাড়া এ ছবিতে থাকবেন অনুব্রত যিনি ‘ছত্রাক’এ পাওলির বিপরীতে ছিলেন। “স্বস্তিকা আর অনুব্রত ছাড়াও আমরা অভিনেতা বিক্রমের কথা ভাবছি। যে বিক্রম বাস্তব জীবনে পাওলিরই বয়ফ্রেন্ড।” এই কথা বলে শেষ করলেন মৈনাক।
পাওলি যতই ক্ষোভ প্রকাশ করুন অন্দরমহলের খবর হল সম্প্রতি একটা পার্টিতে স্বস্তিকাকে সামনে রেখেই পাওলির সঙ্গে কথা বলেন মৈনাক। আর তখনই নাকি হালকা অনুমতি নিয়ে নেন মৈনাক।
বিষয়টাই আসলে এমন যে ‘টেক ওয়ান’ আবির্ভূত হওয়ার আগেই ‘টেক টু’ এসে হাজির। ফিল্ম তৈরির আগেই ফিল্ম। |
|
স্বস্তিকার দাবি
জানি ‘টেক ওয়ান’ ছবিটা নিয়ে বিতর্ক উঠবে। ঝুঁকিও আছে। তবু রাজি হয়েছি কারণ আমি বিতর্ক ভালবাসি। আমি সাহসী। ঝুঁকি নিতে ভালবাসি—তাই। তা ছাড়া আরেকটা কথা, ছবির পরিচালক মৈনাক ভৌমিকের সঙ্গে একটা কমফোর্ট জোন শেয়ার করি। তাই জন্যও ‘টেক ওয়ান’ করতে গিয়ে আমার বেশ ভালই লাগছে। যখন পাওলির ‘ছত্রাক’ নিয়ে অনেক হইচই, সেই সময় আমিও কিছু বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বলতে পারিনি। এই ছবিটা সেই দিক থেকে দেখতে গেলে আমার প্রতিবাদের ছবি। একজন অভিনেত্রী হিসেবে সেই প্রতিবাদটা যদি সিনেমার মধ্যে দিয়ে করতে পারি তাতে আমার ভাল লাগবে। সাহসী দৃশ্য আমার এর আগের অনেক ছবিতেই আছে। এটা আমার কাছে নতুন নয়। সৌন্দর্যের দিক বজায় রেখে সাহসী দৃশ্য যদি থাকে তা হলে অবশ্যই করব। আর বিষয়টা যা, সাহসী দৃশ্য থাকবেই। আমি নিজের মনের মতো করে অভিনয় করব, কোনও রিসার্চ ওয়ার্কে যাচ্ছি না। পোশাকও সাহসী হবে। তবে টপলেস হবে কিনা এখনও
জানি না। টপলেস কোনও দৃশ্য থাকবে কিনা এখনও ঠিক হয়নি। এক অভিনেত্রীর জীবনের একটা ঘটনা নিয়ে একটি ছবি হচ্ছে, যে কি না আমার সমসাময়িক। আর সেখানে আমি সেই নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করছি— সেটা অবশ্যই ছবির একটা ইউ এস পি। |
ছবি: দেবাশিস মিত্র, স্টাইলিং: অজপা মুখোপাধ্যায় |
|
|
|
|
|