২০১১ সালে পূর্বস্থলী ২ ব্লকে কাঁকনাইল গ্রামের এক চাষি প্রথম তাঁর জমিতে এই কুলের চাষ করেন। তার পর কাঁকনাইলের সীমানা ছাড়িয়ে তা ছড়িয়ে পড়ে পারুলিয়া, বিদ্যানগর, চণ্ডীপুর-সহ নানা গ্রামে। দুই ব্লকে ১০০ বিঘারও বেশি জমিতে শুরু হয়েছে লাভজনক এই চাষ। উদ্যোগী চাষিরা জানান, উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন নার্সারি থেকে মেলে এই কুলের চারা। চারা বসানোর ৬ মাসের মধ্যেই ফল ধরে তাতে। এই কুলের আকার অনেকটা আপেলের মতো বলে অনেকেই ‘আপেল কুল’ বলেন একে। এক একটি কুলের ওজন একশো থেকে দেড়শো গ্রাম। লম্বায় প্রায় ৩ থেকে ৪ ফুটের মতো হয় বলে ঝড়ে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা নেই। আকারে ছোট হওয়ায় পরিচর্যাও সহজ। প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় দেড়শো গাছের চারা বসানো যায়। জল বা সার, কম পরিমাণে দিলেও চলে। |
সাধারণত মার্চ মাসে বসানো হয় ওই চারা। অক্টোবর থেকে ফল ধরতে শুরু করে গাছে। চাষিদের দাবি, স্থানীয় বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে ওই কুলের। তাই দরও মেলে লাভজনক। বিঘা প্রতি জমিতে প্রতি ৬ মাস পর পর ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভের নিশ্চয়তা রয়েছে। বিদ্যানগরের কুল-চাষি মৃণালকান্তি ঝাঁ বলেন, ‘এলাকার মাটিতে কুল গাছ দ্রুত বাড়ে। বেশির ভাগ গাছেই ফুল এসে গিয়েছে। আশা করি, এখানেও ভাল লাভ হবে।” চণ্ডীপুর গ্রামের চাষি গঙ্গাধর সাঁতরার আবার বক্তব্য, “গতানুগতিক চাষে এক বছর লাভ হলে হয়তো পরের দুই বছর লোকসান হয়। এই কুল চাষে সে সম্ভাবনা নেই। লাভের নিশ্চয়তা রয়েছে বলেই চাষিরা দলে দলে এই কুল চাষে নেমে পড়েছেন।” তবে, উৎপাদন ব্যাপক ভাবে বেড়ে গেলে লাভজনক দর উঠবে কি না, সে বিষয়ে অবশ্য চাষিদের আশঙ্কা রয়েছে।
তবে চাষিদের এই আশঙ্কাকে গুরুত্ব দেয়নি মহকুমা কৃষি দফতর। মহকুমা কৃষি আধিকারিক স্বপনকুমার মারিক বলেন, “বায়ো-কুল সুস্বাদু হওয়ায় সারা রাজ্যে এর বাজার ভাল। এখনই বাজার নিয়ে মাথাব্যাথা করার কিছু নেই।” |