দেড় মাসের মধ্যে শিলিগুড়ি আদালত থেকে তিনটি কোর্ট সরিয়ে হিমাঞ্চল বিহারের নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হবে বলে আশা প্রকাশ করলেন রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক। বুধবার শিলিগুড়ি আদালতের আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনার পরে এ কথা জানান আইনমন্ত্রী। শিলিগুড়ি কমিশনারেট ঘোষণার পরে রাজ্য সরকার হিমাঞ্চল বিহারে এসজেডিএ-র মার্কেট কমপ্লেক্সে অস্থায়ী মেট্রোপলিটন আদালত চালু করতে চায়। এদিন হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল রণজিৎ বাগ, রেজিস্ট্রার সুব্রত মিত্র এবং বিচার বিভাগের সচিব বিনোদ শ্রীবাস্তব হিমঞ্চল বিহারের ওই ভবনের পরিকাঠামো খতিয়ে দেখেন। আইনমন্ত্রী বলেন, “হাইকোর্টের প্রতিনিধি দল এখানকার পরিকাঠামো খতিয়ে দেখে রিপোর্ট জমা দেবেন। তার পরে হাইকোর্ট অনুমতি দিলে হিমাঞ্চল বিহারে মেট্রোপলিটন আদালত চালু করা হবে।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব এই প্রসঙ্গে দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রী মেট্রোপলিটান আদালতের কাজ দ্রুত শুরু করতে চান। সে জন্যই সকলের মতামত নিয়ে দ্রুত কাজ শুরুর চেষ্টা চলছে।” হিমাঞ্চল বিহারে আদালত চালু হলে অতিরিক্ত দেড় হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী জানিয়েছেন। আইনমন্ত্রী এদিন হাইকোর্টের প্রতিনিধি দলটিকে নিয়ে মাল্লাগুড়িতে হিমূলের গোখাদ্য তৈরির কারখানার পিছনের পাঁচ একর ফাঁকা জমিও পরিদর্শন করেন। ওই জমিতে রাজ্য সরকার একটি আদালত কমপ্লেক্স তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে। |
প্রায় ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সেখানে তৈরি ভবনে মেট্রোপলিটান আদালত-সহ শিলিগুড়ির সমস্ত আদালত, বার অ্যাসোসিয়েশনের দফতর সরিয়ে নিয়ে যেতে চায়। হাইকোর্টের প্রতিনিধি দলটি এই ব্যাপারেও একটি রিপোর্ট জমা দেবেন বলে জানা গিয়েছে। রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য অবশ্য রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, “হিমূল একটি লোকসানে চলা সংস্থা। এই জমি কী ভাবে দেওয়া হচ্ছে তা নিয়ে শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে কোনও আলোচনাও করা হয়নি।” প্রাক্তন পুরমন্ত্রীর ওই অভিযোগটি অবশ্য উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গুরুত্ব দিতে চাননি। তিনি বলেন, “ওই জমি রাজ্য সরকারের। রাজ্য সরকার ঠিক করবে কী ভাবে ফাঁকা জমির ব্যবহার হবে। প্রয়োজন হলে কর্মীদের সঙ্গে কথা বলা হবে। এসব নিয়ে উনি মাথা না-ঘামালেই ভাল।” হিমাঞ্চল বিহারে অস্থায়ী মেট্রোপলিটান আদালত চালুর ব্যাপারে আইনমন্ত্রী এদিন দফায় দফায় শিলিগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। দুপুরে তিনি শিলিগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবীদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। সেখানেই তিনি হিমাঞ্চল বিহারের অস্থায়ী আদালত ভবনে শিলিগুড়ির তিনটি ট্র্যাক কোর্ট সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দেন। শিলিগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুরেশ মিত্রুকা বলেন, “আমরা আগেই আইনমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে দ্রুত মেট্রোপলিটন আদালত চালুর আর্জি জানিয়েছি। বিচার বিভাগে যেখানে ভাল মনে করবে সেখানেই আদালত চালু করুক। আমরা সমস্ত রকম ভাবে সহযোগিতা করব।” শিলিগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে এদিন আইনমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করা হয়, খড়িবাড়ি, ফাঁসিদেওয়া এবং নকশালবাড়ি মেট্রোপলিটন আদালতের আওতায় না-আসায় তাঁদের মামলা করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হবে। তাঁরা ওই তিনটি থানা এলাকাকে মেট্রোপলিটন আদালতের আওতায় আনার দাবি জানান। আইনমন্ত্রী বলেন, “আইনে এর ব্যবস্থা রয়েছে। হাইকোর্টের অনুমতি নিয়ে ওই তিনটি থানার সমস্ত মামলা মেট্রোপলিটন আদালতের আওতায় আনা সম্ভব।” |