সরকারি ভাবে ‘নিষ্ক্রিয়’ বলে চিহ্নিত ৪৩টি সমবায় সমিতির প্রতিনিধিকে ভোটার তালিকায় রাখার অভিযোগে বুধবার জলপাইগুড়ি সেন্ট্রাল কো অপারেটিভ ব্যাঙ্কে বিক্ষোভ দেখাল তৃণমূল যুব কংগ্রেস। বিক্ষোভের জেরে বুধবার ব্যাঙ্কের নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র তোলার কাজ বন্ধ থাকে। এদিন থেকেই মনোনয়ন পত্র তোলার কাজ শুরু হয়। প্রথম দিনেই বাধা প্রাপ্ত হওয়ায় ব্যাঙ্কের নির্বাচন নিয়েই অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ভুয়ো ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে বলে যুব তৃণমূলের তরফে এদিন জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। ফরওয়ার্ড ব্লক তথা বামপন্থীদের দখলে থাকা জলপাইগুড়ি সেন্ট্রাল কো অপারেটিভ ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতির নির্বাচনের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ হয়েছে ১৪ অগস্ট। তালিকা প্রকাশের পরেই বিভিন্ন ভুয়ো সমবায় সমিতিকে তালিকায় রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ জমা পড়ে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সমবায় দফতর তদন্ত শুরু করে। সরকারি তদন্তের পরে নিষ্ক্রিয় সমবায় সমিতির নামের তালিকা নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত তিনজন সহকারি রির্টানিং অফিসারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তৃণমূলের তরফে সরকারি বর্তমান বোর্ডের চেয়ারম্যান তথা ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক গোবিন্দ রায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে। যদিও এই দিন গোবিন্দবাবু বলেছেন, “নিষ্ক্রিয় সমবায় সমিতির ভোটদানের ক্ষমতা থাকবে না এমন আইনের কথা জানি না। নিজের দলের লোকেরাই শুধু ভাল, রাজ্যে এই লাইনের প্রবক্তা মমতা বন্দোপাধ্যায়। সুতরাং তাঁর দলের লোকেরা যে সর্বত্রই দলতন্ত্র কায়েম করতে চাইবেন তা নিয়ে সন্দেহ নেই।” |
যাঁদের বিরুদ্ধে ভুয়ো তালিকা তৈরির অভিযোগ উঠেছে, সেই সহকারি রির্টানিং অফিসারদের অন্যতম দিলীপ কুমার প্রসাদ বলেন, “আইন মেনেই কাজ করেছি। এই বিষয়ে যা বলার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।” সমবায় দফতর সূত্রের খবর, জলপাইগুড়ি জেলার সহকারি সমবায় রেজিস্টার দফতর থেকে ১৩টি সমবায় সমিতিকে নিষ্ক্রিয় বলে জানানো হয়। অভিযোগ, নিষ্ক্রিয় তালিকায় নাম থাকা সমিতিগুলিকেও ভোটার তালিকায় রেখে দেওয়া হয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতি চন্দন ভৌমিক বলেন, “নিষ্ক্রিয় সমবায় সমিতিগুলি সবই ফরওয়ার্ড ব্লক এবং বামপন্থীদের তৈরি করা। ৩৪ বছর ধরে এই ভাবেই অনিয়ম করে জিতে বিভিন্ন সমবায় ব্যাঙ্কের ক্ষমতায় বসে টাকা নয়ছয় করেছে বামপন্থীরা। গোবিন্দ রায়ের নেতৃত্বে এই লুঠতরাজ চলেছে। আর বরদাস্ত করা হবে না।” সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতিতে সরকারি প্রতিনিধি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “ক্ষমতায় থাকতে রাতের অন্ধকারে ভুয়ো ভোটার তালিকা তৈরি হয়েছে। আমরা আইনগত ভাবে মোকাবিলা করছি।” তালিকা নিয়ে অভিযোগ বা নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে জানতে চাইলে ব্যাঙ্কের নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা রির্টানিং অফিসার ডেপুটি সমবায় রেজিস্টার মিগমা ভুটিয়া বলেন, “মন্তব্য করব না।” |