প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের নিয়মকানুনে নাটকীয় এবং তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তন আনার কথা ভাবছে শ্রীনিবাসনের ভারতীয় বোর্ড। নতুন নিয়ম বলবৎ হলে জগমোহন ডালমিয়া ২০১৪ সালে ফের পূর্বাঞ্চল থেকে বোর্ড প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন। আগের নিয়মে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারছিলেন না যেহেতু অতীতে বোর্ড প্রেসিডেন্ট হয়েছেন।
অতীতের তিক্ত সম্পর্ক ভুলে শ্রীনিবাসন-ডালমিয়া যে এখন বোর্ডমহলে ‘বন্ধু’ এটা আর একটা উদাহরণ। বুধবার চেন্নাইয়ে বোর্ডের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে সবচেয়ে গভীর ভাবে আলোচিত হল প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের স্ট্র্যাটেজি। আর তাতে দেখা গেল, শ্রীনিবাসন-ডালমিয়া এক নৌকোতেই রয়েছেন।
কী রকম সেই স্ট্র্যাটেজি? শরদ পওয়ারের চালু করা অঞ্চলভিত্তিক রোটেশন প্রথায় নির্বাচন ব্যাপারটাই উঠে গিয়েছিল। আগে থেকেই তালিকা করে ফেলা হত যে, পরপর কাদের ‘টার্ন’ আসবে। পওয়ারের আমলে যেমন পশ্চিমাঞ্চল দিয়ে শুরু হয়েছিল। তার পর মধ্যাঞ্চলের শশাঙ্ক মনোহর। এখন দক্ষিণের শ্রীনিবাসন। পুরনো নিয়মে এর পরের ‘টার্ন’ পূর্বাঞ্চলের। ঠিক আছে ২০১৪-তে পূর্বাঞ্চল থেকে প্রেসিডেন্ট হবেন। তার পরের প্রেসিডেন্ট আসবেন উত্তরাঞ্চল থেকে। এই ‘রোটেশন’ যেমন ছিল তেমনই থাকবে। এর সঙ্গে বুধবারের ওয়ার্কিং কমিটি প্রস্তাব দিল, যদি কেউ উত্তরাঞ্চল থেকে ২০১৪-তে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চায়, তা হলে তিনি তা করতে পারেন। কিন্তু তাঁকে পূর্বাঞ্চলের অন্তত দু’টি রাজ্য সংস্থার সমর্থন নিয়ে মনোনয়ন জমা দিতে হবে। একমাত্র তবেই তাঁর প্রার্থীপদ গ্রাহ্য হবে। এ বার পূর্বাঞ্চল থেকে যিনি আসবেন তাঁকেও দু’টো ক্রীড়া সংস্থার সমর্থন নিয়ে মনোনয়ন জমা দিতে হবে। যদি দেখা যায় একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন, তখন নির্বাচন ছাড়া উপায় নেই।
অঞ্চলভিত্তিক রোটেশন শিথিল করা নিয়ম পরিবর্তনের একটা দিক। অন্য দিকটা হচ্ছে, পওয়ারের আমলে হওয়া নিয়মে অতীতে বোর্ড প্রেসিডেন্ট হওয়া কেউ আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারছিলেন না। নতুন নিয়ম বলবৎ হলে পারবেন। যেমন ডালমিয়ার সামনে ২০১৪-তে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হতে বাধা থাকবে না, তেমনই শ্রীনিবাসনের সামনে বাধা থাকবে না ফের প্রেসিডেন্ট হতে।
নতুন নিয়ম আনার জন্য বোর্ডের গঠনতন্ত্রে বদল আনা জরুরি। তার জন্য আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর বোর্ডের বিশেষ সাধারণ সভা ডাকা হয়েছে। সেখানে ২৭ সেপ্টেম্বর বোর্ডের বার্ষিক সাধারণ সভা। এ-ও ঠিক হল যে, অল্পের জন্য যে সব ক্রিকেটার বোর্ডের আর্থিক অনুদান থেকে বাদ পড়েছেন তাঁদের তালিকার অন্তর্ভুক্ত করা হবে। চার প্রাক্তন গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথ, মোহিন্দর অমরনাথ, দিলীপ বেঙ্গসরকর এবং সৈয়দ কিরমানিকে আর্থিক অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত হল।
কিন্তু বোর্ডমহলে অনেক বেশি করে আগ্রহের কেন্দ্রে থাকল প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের নতুন নকশা। এ রকম একটা তাৎপর্যপূর্ণ বদলের কথা শুনে বুধবার বোর্ডের বৈঠকে ক’টা সংস্থা সমর্থন করল আর ক’জন আপত্তি তুলল? জানা গেল, আই এস বিন্দ্রার পঞ্জাব ছাড়া সবাই সমর্থন করেছে। কেউ কেউ প্রশ্ন না তুলে পারছেন না যে, ২০১৪-য় তো পূর্বাঞ্চল থেকে প্রেসিডেন্ট হওয়ারই ছিল। সিএবি-র তো হাতের মুঠোয় ছিল প্রেসিডেন্ট পদ। তা হলে তারা কেন এই বদল মেনে নিল?
ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, এর জবাব লুকিয়ে আছে প্রস্তাবিত বদলের দ্বিতীয় অংশের মধ্যে যে, আগে প্রেসিডেন্ট হওয়া কেউ আবার প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন। কী দাঁড়াল? না, ২০১৪ বোর্ড প্রেসিডেন্ট পদের দিকে চোখ ডালমিয়ার। |