পিপিপি (পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ) মডেলে এমআরআই পরিষেবা চালু হল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক ভাবে এই পরিষেবার উদ্বোধন করেন জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী তথা মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালন সমিতির সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র। পরে তিনি বলেন, “রাজ্যের যা আর্থিক পরিস্থিতি, তাতে সরকারের পক্ষে সবটা পেরে ওঠা সম্ভব নয়। তাই আমরা সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগের উপরও জোর দিচ্ছি। বিভিন্ন জায়গায় পিপিপি মডেলে কাজ হচ্ছে। মেদিনীপুরেও সে ভাবে এমআরআই পরিষেবা চালু হল। এর ফলে রোগীদের আর বাইরে যেতে হবে না। তাঁদের পরিবারের লোকজনদেরও সমস্যা কমবে।” |
আগামী দিনে একই ভাবে ডিজিটাল এক্স-রে ও ম্যামোগ্রাফি পরিবেষা চালুর পরিকল্পনাও রয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যে এই পরিষেবা চালুর চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পরিকাঠামোগত নানা সমস্যা রয়েছে। বেশ কিছু পরিষেবা এখানে মেলে না। ফলে রোগীদের বাইরের কোনও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে গিয়ে বেশি অর্থ খরচ করতে হয়। শুধু পশ্চিম মেদিনীপুর নয়, পাশের পূর্ব মেদিনীপুর থেকেও বহু রোগী উন্নত পরিষেবা পাওয়ার আশায় এখানে আসেন। প্রয়োজনীয় পরিষেবা না পেয়ে তাঁদের সমস্যায় পড়তে হয়। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এমআরআই পরিষেবা চালুর দাবি আগে থেকেই রয়েছে। আগে এখানে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে সিটি স্ক্যান চালু হয়েছে। রোগী ও তাঁদের পরিবারের লোকজনদের দাবি মেনে তারপরই এখানে এমআরআই পরিষেবা চালুর পরিকল্পনা হয়। এগিয়ে আসেন কলকাতার আমরি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এমআরআই চালু হল এখানে।
মন্ত্রী জানান, বাইরে থেকে যে পরিষেবা পেতে হল অন্তত ৭ হাজার টাকা খরচ করতে হয়, মেডিক্যালে তা আড়াই হাজার টাকায় মিলবে। এর ফলে রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা উপকৃত হবেন। গরিব মানুষদের জন্য বিশেষ সুবিধা দেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্রতি মাসে যে সংখ্যক রোগীর চিকিৎসা হবে, তার ১০ শতাংশের জন্য থাকবে বিশেষ ছাড়ের বন্দোবস্ত। তবে এ ক্ষেত্রে মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ বা হাসপাতাল সুপারের অনুমতিপত্র লাগবে। এ দিনের অনুষ্ঠানে ছিলেন জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সবিতেন্দ্র পাত্র, মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ শুদ্ধদন বটব্যাল, হাসপাতাল সুপার যুগল কর প্রমুখ।
এ দিন মেডিক্যাল কলেজে রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকও হয়। সেখানে শিশু বিভাগের উন্নতি, লেবার রুম ও ওটি-র পরিকাঠামো ঢেলে সাজা-সহ বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে মন্ত্রী জানান, “পরিকাঠামোগত কিছু সমস্যা রয়েছে এটা ঠিক। তবে এর মধ্যেই কাজ করতে হবে। পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ করছে।” |