এখনই নয়, তবে চলতি বছরের মধ্যেই জলপাইগুড়িতে অস্থায়ী ভাবে সার্কিট বেঞ্চের কাজ চালু হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করলেন রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক। মঙ্গলবার জলপাইগুড়িতে সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী এবং অস্থায়ী পরিকাঠামো পরিদর্শন করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল রণজিৎ কুমার বাগ, রেজিস্ট্রার সুব্রত মিত্র। হাইকোর্টের প্রতিনিধি দলের সঙ্গেই ছিলেন রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। পাহাড়পুরে সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী ভবন, কর্মী আবাসন, বিচারপতিদের আবাসন, বেঞ্চের অস্থায়ী ভবন তথা জেলা পরিষদ ডাকবাংলো তিন ঘণ্টা ধরে পরিদর্শনের পরে ঘণ্টাখানেকের প্রশাসনিক বৈঠক করেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, “অস্থায়ী পরিকাঠামো নিয়ে হাইকোর্ট যে নির্দেশগুলি দিয়েছিল, সেগুলির বেশির ভাগই শেষ করে ফেলা হয়েছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে। এদিন হাইকোর্টের প্রতিনিধিরাও রাজ্য সরকারের সদ্দিচ্ছা দেখে গেলেন। আসবাব পত্র সহ কয়েকটি বিষয়ে কিছু রদবদলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা আশা করছি চলতি বছরের মধ্যেই অস্থায়ী ভাবে সার্কিট বেঞ্চের কাজ চালু করা যাবে।” এদিন পরিদর্শনের পরে হাইকোর্টের প্রতিনিধি দলের তরফে রাজ্য সরকারকে যে বিষয়গুলি জানানো হয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হল, বেঞ্চের অস্থায়ী ভবনের এজলাসে বসানো সব আসবাবপত্রের জন্য হাইকোর্টের অনুমোদন নিতে হবে। অস্থায়ী ভবনে একটি স্বাস্থ্য ইউনিট তৈরি করতে হবে। বিচারকদের অফিসের আসবাব বদলাতে হবে। লিগাল এড ফোরামের জন্য পৃথক ঘরের ব্যবস্থা করা এবং আটটির পরিবর্তে পাঁচজন বিচারপতির ঘর তৈরি করতে হবে। |
ছবি: রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়। |
হাইকোর্টের প্রতিনিধি দলের তরফে এদিন আসবাব পত্রের ছবিও তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেই ছবি দেখে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত জানানো হবে রাজ্য সরকারকে। সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী ভবনের শিলান্যাস করতে ১ সেপ্টেম্বর জলপাইগুড়িতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জয়নারায়ন পটেল সহ অনান্য বিচারপতিরাও থাকার কথা। তার আগে আরো একবার হাইকোর্টের তরফে পরিদর্শন হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। এদিন আইনমন্ত্রী বলেন, “রাজ্য সরকার চাইছে, যতদিন না স্থায়ী ভবন তৈরি হয়, ততদিন অস্থায়ী ভবনে কাজ চলুক। সেজন্য সব পরিকাঠামো তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। তবে সার্কিট বেঞ্চ চালু হতে রাষ্ট্রপতির বিজ্ঞপ্তি এবং হাইকোর্টের কর্মীদের জলপাইগুড়িতে বদলি করা প্রয়োজন। বিজ্ঞপ্তির জন্য কেন্দ্রকে লেখা হয়েছে এবং রাজ্য সরকার হাইকোর্টের বেশ কিছু কর্মীও নিয়োগ করেছেন। বেঞ্চ চালু নিয়ে হাইকোর্টেরও ইতিবাচক মনোভাব রয়েছে।” পাশাপাশি, রাজ্য সরকারের তরফেও এদিন হাইকোর্টের প্রতিনিধি দলকে বিশেষ কয়েকটি ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে, যেগুলি হাইকোর্টের সুপারিশে ছিল না। যেমন অস্থায়ী ভবনের তিন তলায় একটি গ্রন্থাগার এবং আধুনিক সভাকক্ষ তৈরি করা হবে বলে জানানো হয়েছে। হাইকোর্টের কর্মীদের জন্য পাহাড়পুর এলাকায় বরাদ্দ আবাসন থেকে অস্থায়ী ভবনে যাতায়াতের জন্য এনবিএসটিসির দুটি বিশেষ বাস বরাদ্দ করা হবে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “এই ব্যবস্থাগুলি করার জন্য আইনমন্ত্রীই নির্দেশ দিয়েছেন। হাইকোর্টের প্রতিনিধি দলকে এগুলি জানানো হয়েছে। রাজ্য সরকার যে আন্তরিক ভাবে দ্রুত অস্থায়ী ভবন চালু করতে উদ্যোগী তা নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে না।” পরিদর্শনের পরে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল রণজিৎ বাগ বলেন, “যা দেখলাম তা নিয়ে হাইকোর্টকে রিপোর্ট দেব।” |