শহরের উন্নয়ন আগে কতটা হয়েছে, এখন কী হচ্ছে এবং আগামী দিনে কী হতে পারে তা নিয়ে এবার সরব হলেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। যিনি শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যানও ছিলেন। মঙ্গলবার প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোকবাবু দলীয় অফিসে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব এবং এসজেডিএ-এর চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্যের কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। যা শোনার পরে গৌতমবাবু ও রুদ্রনাথবাবু আলাদা ভাবে হলেও একই সুরে ‘প্রাক্তন পুরমন্ত্রী হতাশা থেকে ওই ধরনের মন্তব্য করে প্রচারের আলোয় থাকতে চাইছেন’ বলে কটাক্ষ করেছেন। যদিও অশোকবাবুর দাবি, শিলিগুড়ি বাসীর স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতেই তিনি মুখ খুলতে বাধ্য হয়েছেন। প্রাক্তন পুরমন্ত্রীর অভিযোগ, “১৫ মাস কোনও সময়ই নয়। কাজের জন্য আরও সময় প্রয়োজন। ভেবেছিলাম এখনই কোনও মন্তব্য করব না। কিন্তু যেভাবে পরিকল্পনামাফিক প্রচার চলছে তাতে মুখ বন্ধ করে বসে থাকা যায় না। পরিকল্পনামাফিক কাজ হচ্ছে না। কেন্দ্রের টাকা আসছে না। পরিকল্পনা নেই। কেবল ভাষণ চলছে। পুরসভায় নৈরাজ্য চলছে।” এর পরে অশোকবাবুর সংযোজন, “চতুর্থ, পঞ্চম মহানন্দা সেতু, উড়ালপুল, আন্ডারপাস, আইটি পার্ক, দুটি বিরাট উপনগরী, ফুলবাড়ি বাণিজ্যপথ, ফুডপার্ক, পাইনাপেল পার্ক, টি পার্ক, ড্রাই পোর্ট, ইস্টার্ন বাইপাস তো বাম আমলেই হয়েছে। আর বলা হচ্ছে তিন দশকে কোনও কাজ হয়নি।” তিনি জানান, এখন কেন্দ্র, রাজ্য, রেল, এসজেডিএ, উন্নয়ন দফতর সব তো ওঁদের হাতে। কিন্তু টি পার্কের জমির সমস্যা, কাওয়াখালি জমি জলের দরে ছাড়া, বাগডোগরা বিমান বন্দরে নাইট ল্যান্ডিং, হকার পুনর্বাসন না দিয়ে উন্নয়ন দফতর তৈরি, রেলের বহু আন্ডারপাস না হওয়া, শহরের জলের বিকল্প ব্যবস্থার মত অনেক কিছুই পড়ে রয়েছে। কিছুই তো হচ্ছে না। আসলে এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান উদ্ভট চিন্তাভাবনা নিয়ে ব্যস্ত। |
আর উত্তরবঙ্গ উন্নয়নে দফতরে লোকজনই যায় না। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “গত ১০ বছরে ৪৪৪টি প্রকল্প শেষ করতে পারেননি ওঁরা। দফতরে বসে কাজ করলে যা হয়। এই ক’দিনে আমরা পুরানো ৩৮০টি প্রকল্প শেষ করেছি। ১০৯টি হাতে নিয়েছি। কমিশনারেট, সার্কিট বেঞ্চ, মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়, উন্নয়ন দফতর এ সব তো অশোকবাবু ভাবতে পারেননি। শহরের নকশাই পাল্টে যাবে।” মন্ত্রীর কথায়, “অশোকবাবু প্রচারের আলোয় প্রাসঙ্গিক হওয়ার জন্য আজগুবি কথা বলছেন।” এসজেডিএ চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক রুদ্রনাথবাবু বলেছেন, “অশোকবাবু রাজনীতি করতেই ভালবাসেন। তা নিয়ে থাকলেই পারেন। উন্নয়ন, শিক্ষা, সংস্কৃতিকে একসূত্রে গেঁথে কাজ করা সম্ভব। তা আমরা চেষ্টা করছি। উনি হয়ত এই সব বুঝবেন না। আর আমরা প্রতিটি বোর্ড মিটিঙে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করছি। আগের মত এক তরফা ভাবে কোনও কাজ করি না।” মন্ত্রী, বিধায়কের মত প্রাক্তন পুরমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত। তাঁর অভিযোগ, “ওঁরা এখনও দিশাহীন বলেই এই ধরনের কথা বলছেন। এই কারণেই শহরের মানুষ ওঁদের ত্যাগ করেছেন। বামপন্থীদের পুরসভার কৃতকর্মের ফল এখনও মানুষকে ভোগ করতে হচ্ছে। খুব দ্রুত আমরা ওঁদের কাজকর্মের খতিয়ান দেখিয়ে দেব।” |